Alapon

আত্মতৃপ্তি মানুষকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়...


হেদায়েত একবার পেয়ে গিয়েছি, দ্বীনের পথে চলে এসেছি, খুব প্র‍্যাক্টিসিং হয়ে গিয়েছি - বলে আদতে খুব গর্ব করে চলার কিছু নেই। ইবলিশও অনেক ইবাদাতগুজার ছিল। অনেক জ্ঞানীও ছিল। তার শেষ অবস্থা আমরা দেখেছি। বনী ইসরাঈলের বারসিসার কথা আমরা জানি। কিভাবে শয়তান তাকে ফাঁদে ফেলে, শয়তানের সামনে সিজদা করিয়েছিল। ঈমানহারা করে দুনিয়া থেকে বিদায় দিয়েছিল।

সেজন্য আমাদের কষ্ট লাগে সেসব দ্বীনি ভাইদের দেখলে যাদের কয়েকবছর আগেও অনেক উৎসাহ নিয়ে দ্বীন পালন করতে দেখতাম। একটা সময় তাদের সাথে কেমন জানি দুরত্ব হয়ে গেল। অনেকে হয়ত আপদ মনে করে আমাদের ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে বাদও দিয়ে দিয়েছে। তারপরেও ভাইয়ের প্রতি মহব্বত থেকে তাঁদের আইডি ঘুরে আসি। খুবই খারাপ লাগে যখন দেখি তাঁরা বিভিন্ন মুভি, গান ইত্যাদি উপভোগ করে আবার সেগুলোর রিভিউ দিচ্ছেন ফেইসবুকে। অনেকে হয়ত সস্ত্রীক অথবা অন্যান্য গাইরে মাহরাম এর সাথে একসাথে ছবিও দিচ্ছেন!

সময় কত দ্রুত চলে যায়! যাদের দ্বীন পালন দেখে একটা সময় অনেকের মনে ঈর্ষা লাগতো তাদের এই হাল! আমরা দুয়া করি সেই ভাইয়েরা আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসুক। আর আমাদের জন্যে এখান থেকে নাসীহা এইটা যে নিজের ঈমানের উপর যেন খুব সন্তুষ্ট না হয়ে যায়। নিজেকে অনেক উচ্চ পর্যায়ের বুজুর্গ ভেবে অহংকার না চলে আসে।

ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল যখন মারা যাচ্ছিলেন তাঁর ছেলে ছিলেন পিতার মৃত্যু শয্যার কাছেই। ইমাম আহমাদ বারবার অচেতন হয়ে পড়ছিলেন আবার হুঁশ ফিরলে বলছেন, "এখনই নয়, এখনই নয়" তাঁর ছেলে বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন তিনি এভাবে বলছেন। তখন ইমাম আহমাদ বললেন, শয়তান আঙ্গুল কামড়ে আফসোস করছে যে ইমাম আহমাদ তার হাতছাড়া হয়ে গেল, ঈমান নিয়ে, হেদায়াতের আলো নিয়ে, আল্লাহর সন্তুষ্টি নিয়ে দুনিয়া থেকে চলে গেলেন বোধহয়। তখন ইমাম আহমাদ বলছিলেন, এখনই নয়। যতক্ষণ না মরছি ততক্ষণ কিছুই বলা যায় না আদৌ কি ঈমান নিয়ে মরতে পারলাম কি- না।

নিজে কী করছি, কেন করছি - আল্লাহর জন্যেই করছি কি- না এই প্রশ্নগুলো করা খুব দরকার হয়ে পড়েছে। আত্নতৃপ্তিতে ভোগা আমাদের খারাপ অভ্যাসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আল্লাহ আমাদের দ্বীনের উপর মৃত্যুর একদম আগ মুহূর্ত অটল রাখুন। আমীন।

পঠিত : ৫২৪ বার

মন্তব্য: ০