Alapon

বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ কি চার চোরের দল...?


চারদিকে চাল চোর আর ওএমএস প্রকল্পের মালামাল চোর ধরার হিড়িক চলছে। কিছুদিন আগেও দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর চেয়ে চার চোরের সংখ্যা ছিল বেশি। আর এই চোরদের প্রায় সকলেই যে সরকার দলীয় ব্যক্তি তা আর নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না।

এই সময়ে এসে আমার বঙ্গবন্ধুর সেই উক্তির কথা মনে পড়ছে। দেশ স্বাধীনের পরে দেশে দূর্ভিক্ষ দেখা দিলে, বহিঃবিশ্ব থেকে বহু ত্রান আসে। তার মধ্যে দেশের ৭ কোটি মানুষের জন্য ৭ কোটি কম্বলও এসেছিল। আর এই কম্বল বিতরণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রক্ষিবাহিনীসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। ফলাফল যা হবার তা-ই হয়েছে। ব্যাপক হারে লুটতরাজ হয়েছে।

তাদের লুটতরাজে বিরক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ‘মানুষ পায় সোনা খনি। আর আমি পেয়েছি চোরের খনি। ৭ কোটি কম্বলের মধ্যে আমার নিজের কম্বলটাও পাইনি। এতো কম্বল গেল কোথায়?’

বঙ্গবন্ধু যাদের চোরের খনি বলে আখ্যায়িত করেছিলেন, তারা আজও বীরদর্পে তাদের চুরি অব্যাহ রেখেছে। চারদিকে যখন একের পর চার চোর ও সরকারী মাল চোর ধরা পড়ছিল তখন ভেবেছিলাম আমাদের রংপুরে হয়তো এমন অবিবেচক লোক থাকবে না। কিন্তু কথায় আছে আওয়ামী লীগ কখনো মানুষ হয় না। গত সপ্তাহে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ীতে আওয়ামী লীগ নেতার গুদাম থেকে চাল উদ্ধার করা হয়েছে। আর আজ রংপুরের মধ্যপার্বতীপুর থেকে টিসিবি প্রকল্পের তেল উদ্ধার করা হয়েছে। আর এই চুরির সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিরা প্রত্যেকেই সরকার দলীয় নেতা কর্মী!

অথচ এই টিসিবি প্রকল্পের খাবারগুলো দেওয়া হয়েছে গরীব খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য। যেন তারা স্বল্পমূল্যে মানসম্মত খাবার খেতে পারে। কিন্তু কে জানত, গোটা বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা মিসকিন হয়ে গেছে। যার দরুন তাদের গরীবের খাবারে হানা দিতে হচ্ছে!

তবে মজার বিষয় হল, অপরাধী যখনই সরকার দলীয় নেতা কর্মী হয় তখনই আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য ছাড়েন- অপরাধীর কোনো দল নেই, ধর্ম নেই। যেমনটা আজ আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবুল আলম হানিফ বলেছেন- ‘ত্রাণ চোরদের কোনো দল-ধর্ম নেই’!

অথচ এই ত্রান চোররা যদি বিএনপির কেউ হতো তাহলে এতোক্ষণে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের চৌদ্দগোষ্ঠি উদ্ধার করা হতো। এই চুরির পেছনে নিশ্চয়ই খালেদা জিয়াকে দ্বায়ী করা হতো। কিন্তু যখন চোর হিসেবে সরকার দলীয় নেতা কর্মীরা ধরা পড়েন- তখনই তাদের দলীয় পরিচয় অস্বীকার করা হয়। অথচ তারা এই চুরিটা দলীয় পরিচয় খাটিয়েই সম্পন্ন করেছেন।

টিসিবির চাল ও অন্যান্য পন্য যে কেবল আজই চুরি হচ্ছে তা কিন্তু নয়। এই চুরিটা আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিয়মিতই চলছিল। আর স্থানীয় প্রশাসনেরও তা অজানা নয়। আর প্রশাসন জানার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করার অর্থ হল এই চুরিতে সরকারেরও সায় রয়েছে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে যখন দেশে খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে, ঠিক তখনই সরকার অনেকটা বাধ্য হয়েই এই টিসিবির পন্য উদ্ধার করছে। কারণ, এই চুরি অব্যাহত থাকলে দেশে দূর্ভিক্ষ দেখা দিতে খুব বেশি সময় লাগবে না। আর এমতাবস্থায় সরকারের দূর্ভিক্ষ মোকাবেলা করার মত সামর্থও নেই। তাই বাধ্য হয়েই তারা এই উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই এক্ষেত্রে অপরাধীর দলীয় পরিচয়টাই মুখ্য। আর এর মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণিত হল, আওয়ামী লীগ একটি চোরের দল!

পঠিত : ৫৩৩ বার

মন্তব্য: ০