Alapon

এলজিবিটিকিউ প্লাস ইস্যু : নৈতিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বিবেচনা....(১ম পর্ব)


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার, যিনি আসমান যমীন সৃষ্টি করেছেন। সৃজন করেছেন সমস্ত সৃষ্টি জগৎ। আমাদের নিকট কুরআন অবতীর্ণ করেছেন এবং হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। আমাদের নিকট নবি পাঠিয়েছেন; যিনি তৈরি করেছেন একটি চিন্তা কাঠামো। আমাদের একটি কালিমা দ্বারা রহমের চাদরে আবৃত করেছেন, যা আমাদের মৌলিক ভিত্তি। আমাদের দিয়েছেন একটি শরিয়া; যা আইনের উৎস। দান করেছেন দেখার, শোনার ও উপলব্ধি করার ইন্দ্রিয়। বিভিন্ন শ্রেণি গোত্রকে পরিণত করেছেন একটি উম্মায়।...

অতপর। এ কনফারেন্সটির ঘোষণা দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি করেছে। এ থেকে বোঝা যায়, এ ইস্যুতে আলোচনা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি দাবি করছি না, এই একদিনের কনফারেন্সে সব সমাধান হয়ে যাবে। এটাকে আমি পারফেক্ট বলেও দাবি করছি না। তবে এ দাবি করছি যে, কিছু না করে বসে থাকার চেয়ে অন্তত সমস্যাটির আলোচনা শুরু করা দরকার। এটা কেবল প্রথম ধাপ। এ কনফারেন্স পারফেক্ট নয়; আর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা ছাড়া কে আছে পারফেক্ট!

আমার বিনীত অভিমত, কারো যদি ভিন্ন কোনো ভিশন থাকে, মতবিরোধ থাকে। তবে আল্লাহ তাআলা আপনাদের রহম করুন। আপনারা ভিন্ন একটি কনফারেন্সের আয়োজন করুন এবং আমাদেরকে এর চেয়ে ভালো মেথডোলজি নির্দেশ করুন। আমি নিঃসন্দেহে পারফেকশনের দাবি করছি না। কেবল ইমপারফেকশনের অভিযোগ আরোপ কোন অর্থবহ ফল বয়ে আনবে না; বরং আপনারা আমাদেরকে এর চেয়ে বেটার কোন ওয়ে দেখান। আমি আপনাদের যথাসাধ্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করব।

এলজিবিটিকিউ প্লাস টার্মটি একটি লুজ আম্রেলা টার্ম। এর দ্বারা এমন সংগঠনকে নির্দেশ করা হয়, যারা স্থির নয়। মানে তারা ক্ষণস্থায়ী সংগঠন। এসব সংগঠনের লক্ষ্য অর্জনের পর তাদের পরিসমাপ্তি ঘটে। অর্থাৎ এখানে এমন সব লোক সমবেত হয়, যারা নিজেদের সমাজের বিদ্যমান ধারার (Strait) সাথে আইডেন্টিফাই করে না। এবং যারা নিজেদেরকে Syst Gender সাথেও আইডেন্টিফাই করে না। অর্থাৎ, তারা জন্মগতভাবে যে লিঙ্গের ওপর জন্মেছে তার সাথে নিজেদের আইডেন্টিফাই করে না।

সুতরাং কেউ যদি স্ট্রেট না হয়, সিস্ট জেন্ডার না হয়, তবে সে অটোমেটিক্যালি এলজিবিটিকিউ প্লাসের অন্তর্ভুক্ত। প্লাস মানে এখানে অনেকগুলো আইডেন্টিটি রয়েছে। তাদের পঁচিশেরও বেশি আইডেনটিটি রয়েছে। সবকটি বিষয়ে আলোচনার সুযোগ নেই। আজ মূলত হোমোসেক্সুয়ালিটি নিয়ে আলোচনা করব। এ বিষয়ে নৈতিক, ঐতিহাসিক, রাজনৈতিক বিবেচনার প্রেক্ষাপট। আমি সাতটি পয়েন্টে আলোচনা করব। সাতটি পয়েন্টই আলাদাভাবে আলোচনা দাবি রাখে কিন্তু আমি এখানে সেসব পয়েন্টের কেবল সারাংশ তুলে ধরছি।

এক. কোথা থেকে আমাদের মূল্যবোধ উৎসারিত হয়। কে নির্ধারণ করবে কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক। কে নির্ধারণ করবে কোনটা ভালো কোনটা মন্দ। এটা খুবই গভীর, চমৎকার এবং দরকারি ফিলোসফিক্যাল আলোচনা। মুসলিম হিসেবে আমাদের নিকট এর উত্তর খুবই স্পষ্ট। আমরা এই বলে আলোচনা শুরু করতে চাই যে, আমাদের মূল্যবোধ উৎসারিত হয় শরিয়া থেকে। আল্লাহ তায়ালা কুরআনে বলেন, "আল্লাহ পবিত্র বস্তুসমূহ হালাল করেছেন, অপবিত্র বিষয়াবলী হারাম করেছেন।"

আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের মূল্যবোধের চূড়ান্ত উৎস অহি। তা আমাদের বলে দেয় কোনটা সঠিক কোনটা ভুল। আমরা এও বিশ্বাস করি, অহি অযৌক্তিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে হারাম হালাল ঘোষণা করেনি। হালাল যা আমাদের জন্য উপকারী আর হারাম যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর, বিপদজনক।

আল্লাহ তায়ালা দৈবক্রমে হালাল হারামের বিধান আরোপ করেননি। আল্লাহ তায়ালা হারাম করেছেন যা আমাদের জন্য ক্ষতিকর। যা উপকারী তা হালাল নির্দেশ করেছেন। সুস্থ বুদ্ধিবৃত্তি এবং পরিশুদ্ধ হৃদয় জানে কোনটা ভালো, কোনটা খারাপ। যেমন- হত্যা, চুরি এসব খারাপ। এমনকি আল্লাহ তায়ালা হারাম না করলেও এসব যে খারাপ তা আমরা জানি। কিন্তু শরিয়া এটাকে কনফার্ম করেছে।

যদি মানুষের বুদ্ধিবৃত্তি দূষিত হয়ে যায়, হৃদয় হয়ে পড়ে কুলুষিত এবং এমন পরিবেশে সে জন্মগ্রহণ করে, বেড়ে ওঠে; যেখানে মূল্যবোধ বিকৃত হয়ে গেছে, তখন তার জন্য ভালো খারাপ, নৈতিক অনৈতিক নির্ধারণ কঠিন হয়ে যায়। তখন সোসাইটি যেটাকে নৈতিক অনৈতিক বিবেচনা করে বাস্তবে তা নাও হতে পারে। টাইম এন্ড প্লেস যেটাকে অনৈতিক বিবেচনা করে তা অনৈতিক হওয়া সুনিশ্চিত নয়। যেমন পাপুয়া নিউগিনির একটি সম্প্রদায় এক প্রজন্ম আগে আবিষ্কৃত হয়েছে, ১৯৭০ সালে। এর প্রায় দুই হাজার বছর পূর্ব পর্যন্ত কারো সাথে তাদের দেখা সাক্ষাৎ হয়নি। তারা যদি যুদ্ধে অন্য কোন গোত্রের উপর বিজয়ী হতো, তবে তারা তাদের যুদ্ধবন্দীদের হত্যা করত এবং মাংস ভক্ষণ করতো। এটাই তাদের নীতি।

তাদের নিয়ে একটি ডক্যুমেন্টারি নির্মিত হয়েছে। নির্মাতা সেখানকার বয়স্কদের একটা ইন্টারভিউ নেয়, যারা পঞ্চাশ বছর আগে একটি অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিল। ডকুমেন্টারি নির্মাতা তাদের প্রশ্ন করে, ক্যানিবালিজম তথা মানুষের মাংস ভক্ষণ করা যে অনৈতিক এটা কি আপনারা জানতেন না? এটা কি অনৈতিক মনে হয়নি যে, আপনার মানুষ হত্যা করে, অতপর রান্না করে খেয়েছেন! লোকটি ক্যামেরার দিকে কেবল নিষ্পলক তাকিয়ে ছিল। একটু পর সে বলল, আমাদের সবাই তা করেছে। আপনি কিভাবে প্রত্যাশা করেন যে, এটাকে আমি অনৈতিক মনে করব, যখন আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি এতে অভ্যস্ত ছিল। আমি আত্মপক্ষ সমর্থন করছি না কিন্তু সবাই তা করতো।

আমি জানি এটা খুবই কঠিন উদাহরণ। কিন্তু এটা আমাদের পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করবে। এটা আমাদের বুঝতে সাহায্য করবে, সবাই যদি একই কাজ করে; সে সময় ও সমাজে যে জন্মগ্রহণ করে তার পক্ষে সমাজের কুসংস্কার ভেদ করে আলোর পথে সফর সুকঠিন হয়ে ওঠে। যখন সমাজে কোনো কিছু অভ্যাসে পরিণত হয়, তবে সেখানে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের জন্য এসব অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকা কঠিন।

লক্ষ করুন, আমাদের দেশ আমেরিকায় বর্ণবাদ কতটা গভীরে প্রোথিত হয়েছিল। বর্ণবাদ রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভুল প্রমাণিত হতে প্রায় তিনশত বছর বছর সময় লেগেছে। আমাদের সমাজে এখনো এর উষ্ণতা অনুভব করছি; সমাজের গভীরে এখনও তা সুপ্ত।

অতএব, এথিক্যাল ভ্যালু তথা নৈতিক মূল্যবোধ সুস্থ বুদ্ধিবৃত্তি ও বিশুদ্ধ হৃদয় শনাক্ত করতে পারে। কিন্তু বিবেক সুস্থ এবং আমাদের হৃদয় যে পরিশুদ্ধ তা যাচাইয়ের জন্য আমাদের একটা এক্সটার্নাল ভেরিফিকেশন প্রয়োজন। আমাদের সমাজের বাহিরের একটা ভেরিফিকেশন প্রয়োজন, সময়ের অতীত একটা এক্সটারনাল মেকানিজম প্রয়োজন। আর আমাদের মুসলিমদের জন্য এই এক্সটারনাল ভেরিফিকেশন হলো আল্লাহ তায়ালার অহি। আজকের কনফারেন্স সম্পূর্ণ এই প্রেমিজের ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে।

এ কনফারেন্স মুসলিমদের দ্বারা আয়োজিত, মুসলিমদের জন্য। অর্থাৎ ইসলামের প্যারাডাইমের মধ্যে, চিন্তা কাঠামোর মধ্যে। এখানে কেউ যদি এই প্যারাডাইমের বাইরের হন, তবে তার জন্য অন্য কনফারেন্সে আলোচনার প্রয়োজন হতে পারে। অন্য চিন্তাধারার মানুষের নিকট আমাদের মূল্যবোধ তুলে ধরা দরকার। এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু এই কনফারেন্সে তাদের জন্য আলোচনা প্রস্তুত করা হয়েছে, যারা আল্লাহ তায়ালার কিতাব কুরআন মাজিদে বিশ্বাস করে। আমি প্রত্যাশা করি, এখানে যারা উপস্থিত রয়েছেন, তারা সকলে যেন উপলব্ধি করেন আমাদের নৈতিকতা এসেছে আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে। হালাল-হারাম, নৈতিক অনৈতিক, ভালো মন্দ বিবেচিত হবে, নির্ধারিত হবে অহির মাধ্যমে।

দুই. সমকামিতা সম্পর্কে অহি কী বলে
সূরা আরাফে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
وَ لُوْطًا اِذْ قَالَ لِقَوْمِهٖۤ اَتَاْتُوْنَ الْفَاحِشَةَ مَا سَبَقَكُمْ بِهَا مِنْ اَحَدٍ مِّنَ الْعٰلَمِیْنَ
আর লূতকে আমি পয়গম্বর করে পাঠাই। স্মরণ করো, যখন সে নিজের সম্প্রদায়ের লোকদেরকে বললো, “তোমরা কি এতই নির্লজ্জ হয়ে গেলে যে, দুনিয়ায় ইতিপূর্বে যা কেউ কখনও করেনি তোমারা এমন অশ্লীল কাজ করে চলেছো।

اِنَّكُمْ لَتَاْتُوْنَ الرِّجَالَ شَهْوَةً مِّنْ دُوْنِ النِّسَآءِؕ-بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ مُّسْرِفُوْنَ
তোমরা মেয়েদের বাদ দিয়ে পুরুষদের দ্বারা কামপ্রবৃত্তি চরিতার্থ করছো? প্রকৃতপক্ষে তোমরা একেবারেই সীমালংঘনকারী গোষ্ঠী।”

وَ مَا كَانَ جَوَابَ قَوْمِهٖۤ اِلَّاۤ اَنْ قَالُوْۤا اَخْرِجُوْهُمْ مِّنْ قَرْیَتِكُمْۚ-اِنَّهُمْ اُنَاسٌ یَّتَطَهَّرُوْنَ
কিন্তু তার সম্প্রদায়ের জওয়াব এছাড়া আর কিছুই ছিল না যে, “এদেরকে তোমাদের জনপদ থেকে বের করে দাও। এরা বড়ই পবিত্রতার ধ্বজাধারী হয়েছে।” [সূরা আরাফ : ৮০-৮২]

সূরা শুয়ারায় আল্লাহ তায়ালা কাওমে লুতের ঘটনা তুলে ধরেছেন।
اَتَاْتُوْنَ الذُّكْرَانَ مِنَ الْعٰلَمِیْنَۙ
তোমরা কি গোটা দুনিয়ার মধ্যে কেবল পুরুষদের কাছে যাও।

وَ تَذَرُوْنَ مَا خَلَقَ لَكُمْ رَبُّكُمْ مِّنْ اَزْوَاجِكُمْؕ بَلْ اَنْتُمْ قَوْمٌ عٰدُوْنَ
এবং তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে তোমাদের রব তোমাদের জন্য যা কিছু সৃষ্টি করেছেন তা পরিহার করে থাকো? বরং তোমরা তো সীমা-ই অতিক্রম করে গেছো।”

قَالُوْا لَئِنْ لَّمْ تَنْتَهِ یٰلُوْطُ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْمُخْرَجِیْنَ
তারা বললো, “হে লূত! যদি তুমি এসব কথা থেকে বিরত না হও, তাহলে আমাদের জনপদগুলো থেকে যেসব লোককে বের করে দেয়া হয়েছে তুমিও নির্ঘাত তাদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে যাবে।

قَالَ اِنِّیْ لِعَمَلِكُمْ مِّنَ الْقَالِیْنَؕ
সে বললো, তোমাদের এসব কৃতকর্মের জন্য যারা বিরক্ত আমি তাদের অন্তর্ভূক্ত। অর্থাৎ আমি তোমাদের এসব কৃতকর্ম পছন্দ করি না।

رَبِّ نَجِّنِیْ وَ اَهْلِیْ مِمَّا یَعْمَلُوْنَ

হে আমার রব! আমাকে ও আমার পরিবার-পরিজনকে এদের কুকর্ম থেকে মুক্তি দাও। [সূরা শুয়ারা : ১৬৫-৬৯]

লক্ষ করুন, লুত আ. বলেন, তোমরা যে কর্ম করো তা আমি পছন্দ করি না। তিনি প্রকাশ্যে বলেছেন এ কথা। কুরআনে স্পষ্ট, হাদিসের বর্ণনা সুস্পষ্ট। মুসনাদে ইমাম আহমদের বর্ণিত। রাসূল সা. বলেন, যারা কাওমে লুতের এ কাজ করবে তাদের প্রতি আল্লাহর লানত।

কুরআনে বর্ণিত হয়েছে তাদের কর্মের প্রতি। অর্থাৎ আমাদের সমস্ত আলেমদের ও থিওলজিয়ানদের মধ্যে সমকামিতা বিষয়ে বিন্দু পরিমাণ মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়নি।

যে অল্প কয়েকটি বিষয় কোন মতবিরোধ নেই এটা তার মধ্যে একটি। এমনকি ঐকমত্যের ব্যাপ্তি কেবল সুন্নি আলেমদের সীমাবদ্ধ নয়। এই বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছেন ইসনা আশারি চিন্তাধারার আলেমগণ। যাইদি চিন্তাধারার ইমামগণ। মুতাজিলা চিন্তাধারার আলেমগণও।

আমি কয়েক বছর গবেষণা করেছি। এ বিষয়ে এমনকি একটি ভিন্ন মতও পাইনি। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, যেকোনো চিন্তাধারার একজন আলেমও দেখাতে পারবেন না, যে সমকামিতাকে বৈধ বলেছে। সকলেই বলেছেন ইসলামে সমকামিতা হারাম।

এই বিষয়ে কোরআন ও হাদিসের বক্তব্য সুস্পষ্ট। কোন আলেম দ্বিমত পোষণ করেননি। সবার মতে, এটা পাপ। আরো অন্যান্য পাপের মতো এটাও একটা পাপ। এই বিষয়ে কোরআন ও হাদিস এর বর্ণনা সুস্পষ্ট।

লক্ষ করুন, পাপ ঠিক কোনটা। আমাদের ইসলামী আইন, শরিয়া কখনো ফিলিংস কে ক্রিমিনালাইজ করেনি। পাপ সাব্যস্ত করেনি। ভেতরের আকাঙ্ক্ষাকে ইনহারেন্টলি ইভল বিবেচনা করেনি।

আপনার হৃদয় ওয়াসওয়াসা থাকলে আপনি কখনো সেজন্য জাহান্নামে চলে যাবেন না। এটা সকল ইন্টারনাল ফিলিং-এর জন্য সাধারণ নিয়ম। কিছু ফিলিং সবসময় হেলথি নয়। যেমন রাগে আপনার কাউকে হত্যা করতে ইচ্ছে হলো, কিন্তু আপনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করলেন। সুতরাং আপনি হত্যার অপরাধ থেকে, পাপ থেকে মুক্ত রয়ে গেলেন।

রাসূল সা. বলেন, আমার উম্মাহ যা হৃদয়ে সীমাবদ্ধ রেখেছে তা আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করে দিয়েছেন ।

সুতরাং আমাদের ইন্টারনাল অনুভূতি, ইচ্ছা অনৈতিক কিংবা নিন্দনীয় নয়। নিন্দনীয় হলো ইচ্ছার ওপর কাজ সম্পাদন করা। মদ পানের ইচ্ছা, যিনার ইচ্ছা পোষণ; এসব হেলথি নয় আবার পাপও নয়। কিন্তু তা বাস্তবায়ন করা পাপ। আমাদের শরিয়ার দৃষ্টিতে পাপের ইচ্ছা পোষণ যথোপযুক্ত নয়। কিন্তু এর জন্য আপনি জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবেন না। পাপের আকাঙ্ক্ষা দমন করে পাপ না করা আল্লাহ তাআলার প্রতি একটি বড়ো আনুগত্যের নিদর্শন।

[বি.দ্র. ড. ইয়াসির ক্বাদির লেকচার থেকে অনুবাদ]

@Saifullah

পঠিত : ৪৩৫ বার

মন্তব্য: ০