Alapon

কথিত মুক্তমনা পাপিষ্ঠ শাহবাগীদের মুখোশ ক্ষণে ক্ষণে খসে পড়ে



সময়ের জনপ্রিয় কবি ও লেখক আখতারুজ্জামান আজাদ। তার আরেকটি বড় পরিচয় হলো সে একজন হার্ডকোর শাহবাগী। আগামীতে যদি সা'দাত হুসাইন নব হুমায়ুন আহমেদ রূপে আভির্ভূত হয় তবে এই আখতারুজ্জামান আজাদ হবে আগামী প্রজন্মের জাফর ইকবাল। অবশ্য এরইমধ্যে সে জাফর ইকবালের মতো ‘গর্তে লুকিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল’ টাইপ বহু মিথ্যে গল্প বানিয়ে তার কৃতিত্বের যথার্থ স্বাক্ষর রেখে চলছে। গতকাল তার ‘সাইদির মুক্তিদাবি ও বাংলাদেশে জামায়াতি মনস্তত্ত্ব তৈরির ইতিহাস’ শিরোনামে লেখা পোস্ট থেকে স্ক্রিণশটটা নেওয়া।




এই লেখায় সে অনেক গুলো ভুয়া তথ্য দেয়। যার মধ্যে সবচেয়ে জঘন্য রকমের মিথ্যাচার হলো উপরিউক্ত স্ক্রিনশটের সাঈদীর কথিত ফোনালাপের অডিও রেকর্ড ফাস নিয়ে। যদিও এই জঘন্যতম অডিও প্রচারের ব্যাপারে তার এক্টিভিটি সেই ২০১২ থেকেই।




গত কিছুদিন আগেও সময় টিভি একটি ভুয়া ফোনালাপ ফাঁস করে ধরা খেয়ে পরে মুছে দেয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে পরস্পরকে কোণঠাসা করতে এখন ফোনালাপ ফাঁসের বিষয় নিত্যনৈমত্তিক ব্যপার। তবে এটা শুরু হয়েছিল সম্ভবত ২০১২ সালের দিকে। সেটা আসল ফোনালাপ ছিল। বৃটিশ সাময়িকী দি ইকোনোমিস্ট এই ফোনালাপটি ফাঁস করেছিল পশ্চিমা একটি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (যুদ্ধাপরাধ) ট্রাইবুনাল এর তৎকালীন চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের সাথে আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিনের স্কাইপ কথোপকথনের ওই রেকর্ডটি তখন টক অব দা কান্ট্রি ছিল। ‘স্কাইপ কেলেঙ্কারি’ খ্যাত ওই ফোনালাপের ঘটনা কথিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের সমস্ত গোমর ফাঁস করতে যথেষ্ট ছিল। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে ওই স্কাইপে আলাপের তথ্য বাংলাদেশে সর্বপ্রথম দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশ হলে ব্যপক সমালোচনার মুখে ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান নিজামুল হক ‘ব্যাক্তিগত’ কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। যে রিপোর্ট করে জননন্দিত সাংবাদিক মাহমুদুর রহমানকে জেলে যেতে হয়েছিল এবং সময়ের সাহসী সাংবাদিক ওলীউল্লাহ নোমানকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল। যদিও ক্যাঙ্গারু ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী সময়ে যথারীতি রাজনৈতিক প্রভাবযুক্তই থেকে যায়।

২০১২ সালের ১৫ই ডিসেম্বর এই ‘স্কাইপ কেলেঙ্কারি’ধামাচাপা দিতে চটি পিয়াল নামে পরিচিত শাহবাগী অমি রহমান পিয়াল গং সরকারী পৃষ্টপোষকতায় ইউটিউবে Bangla Leaks নামের শাহবাগীদের সাথে সম্পৃক্ত একটি চ্যানেল থেকে সাইদীর কণ্ঠকে বিকৃত করে জঘণ্য কুরুচীপূর্ণ ভাষায় এই অডিও টেপ গুলো ১৪ টি পর্বাকারে ধারাবাহিকভাবে প্রচার করতে শুরু করে। বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমাণ করতে কয়েকটি অডিওতে সাইদীর মুক্তি চেয়ে কিছু মেকি কান্নাকাটির অংশও জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই অডিওতে যার কণ্ঠ সাঈদীর বলে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে সুস্থ মস্তিষ্কের কেউ দূরে থাক মানুষিক ভাবে অসুস্থ কেউও বিশ্বাস করবেনা যে, এটা সাঈদীর কণ্ঠ! আপনাদের কারো সংশয় মনে হলে লিঙ্কে গিয়ে একটুখানি শুনে আসতে পারেন। এটা সম্প্রতি ফাঁস হওয়া সময় টিভির ভুয়া ফোনালাপের চেয়েও কাচা হাতের ছিল। অথচ এই বিকৃত অডিও শাহবাগীরা তাদের যত মিডিয়া, ব্লগ সাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে তারা কঠিন ভাবে তৎপরতা চালিয়েছিল। তখনকার সবচেয়ে বহুল প্রচলিত পোর্টাল বাংলানিউজে এটা একেবারে হোমপেজে বহুদিন টাঙ্গিয়ে রেখেছিল। এমনকি তারা এই জঘন্য কুরুচিপূর্ণ অডিও রেকর্ডকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে 'মোবাইলে সাঈদীর আদিরস! মিথ্যা প্রমাণে লাখ ডলার পুরস্কার' শিরোনামে
নিউজও করেছিল।
বিডিনিউজে ২০১৩ সালের ৪ জানুয়ারি চটি পিয়াল কলাম লিখে উষ্মা প্রকাশ করে কেন অন্যান্য মূলধারার মিডিয়া এটা প্রচার করছেনা!

এই উচ্ছিষ্ট আবর্জনা আবারো সামনে নিয়ে আসলো শাহবাগী কবি আখতারুজ্জামান আজাদ। অবশ্য সে তার লেখালেখির শুরু থেকেই এমন জঘন্যতম কাজের সাথে সম্পৃক্ত। ধর্মবিদ্বেষীদের আখড়া মুক্তমনা ব্লগে সে সরাসরি ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয় গুলোকে আক্রমণ করে লিখতো। সামু ব্লগেও এই কাজ করে বেড়াতো সে। তার লেখায় হুমায়ুন আজাদের মতো ধর্মবিদ্বেষের ছড়াছড়ি। কবিতার লাইনে লাইনে ইসলামবিদ্বেষের বিষবাস্প।



মাঝে এই দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের জনসাধারণের গণজাগরণে তারা কিছুটা ঝিমিয়ে পড়লেও এখন যখন আবারো মূলধারার ধর্মীয় সংগঠন গুলো দলাদলিতে ব্যস্ত, সরকারী রোষানলে বিপাকে তখন আবারো এই শাহবাগীরা তাদের সেই পুরনো চরিত্রে ফিরে যেতে শুরু করেছে।

তার গতকালকের লিখায় সে মিথ্যাচারের সব সীমানা ছাড়াল। সরাসরি সম্মানিত শায়েখ ও সম্মানিত আলেমে দ্বীনদের নিয়ে কটূক্তি করেছে। তাদের প্রতিহত করতে সরকারকে উস্কানিমূলক বার্তা দিয়েছে।
এরা একদিকে মুক্তচিন্তার কথা বলে আবার নিজের মিথ্যাচার ঢাকতে পোস্টের মন্তব্য অপশন বন্ধ করে রাখে। কোন প্রকার রাখঢাক না রেখে দৈনিক সংগ্রাম অফিসে ফ্যাসিবাদী তাণ্ডবকে সমর্থন যোগায়। আর এখন বিকৃত নগ্ন মিথ্যাচার ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তার লেখা পোস্টের প্রতি লাইনেই ধর্মবিদ্বেষ, আক্রমাণত্মক ও বানানো গল্প ছাড়া কিছুই নেই!

পঠিত : ১৬৪৩ বার

মন্তব্য: ০