Alapon

বিদ্যানন্দের প্রধান কিশোর কুমারের পদত্যাগ কি কারণে?




'বিদ্যানন্দ' ও 'এক টাকার আহার' অনেক আগ থেকেই এদেশের মানুষের মনে একটা অবস্থান করে নিয়েছে তাদের মানবিক কাজের জন্য। তাদের এই মানবিকতা অনস্বীকার্য।

দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুতে আলোচনায় আসে সমাজসেবামূলক সংস্থা ‘বিদ্যানন্দ।' আজ মঙ্গলবার (৫ মে) সকালে বিদ্যানন্দের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।

ওই ঘোষণা পত্রে বলা হয়, “বিদ্যানন্দ নামটি দিয়েছেন এক মুসলিম ব্র্যান্ড এক্সপার্ট। 'আনন্দের মাধ্যমে বিদ্যা অর্জন' স্লোগানে তিনি এই নাম দিয়েছিলেন। অনেকেই ব্যক্তির নাম থেকে বিদ্যানন্দ নামের উদ্ভব ভেবে ভুল করেন। এজন্য আমরা নামটাই পরিবর্তন করতে চেয়েছি, কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকরা রাজী হয় না।

বিদ্যানন্দের প্রবাসী উদ্যোক্তা সশরীরে খুব অল্পই সময় দিতে পারেন। ৯০ ভাগ মুসলিম স্বেচ্ছাসেবকরাই চালিয়ে যান বিশাল কর্মযজ্ঞ। তবুও উদ্যোক্তার ধর্ম পরিচয়ে অনেকেই অপপ্রচার চালায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে। সে সমস্যাও আশা করি সমাধান হয়ে যাবে। বিদ্যানন্দ প্রধান গত মাসেই পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। বিষয়টি আমরা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম কভিড-১৯ ক্যাম্পেইনের পরে।

ঘোষণায় বলা হয়, ত্যাগের উপর ভিত্তি করে এই প্রতিষ্ঠানের যাত্রা। আর্থিক, সামাজিক কিংবা ব্যক্তিগত ত্যাগে স্বেচ্ছাসেবকরা রচনা করে অনুপ্রেরণার গল্পগুলো। নিশ্চিত থাকেন, তাঁদের সে যাত্রা অব্যাহত থাকবে আগামীতেও। ক্ষমা চাচ্ছি এই হতাশার বার্তার জন্য। গত মাসের এই সিদ্ধান্তটি আমরা প্রকাশ করতে চেয়েছিলাম কভিড-১৯ ক্যাম্পেইনের পর। কিন্তু অনেকগুলো পেজ থেকেই প্রচুর ন্যাগেটিভ লেখা শেয়ার হচ্ছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ক্যাম্পেইনটি। তাই শেয়ার করতে বাধ্য হয়েছি।”






বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে এই টাইপের যে সমস্ত ভুঁইপোড় পেজ ও আইডি থেকে বিষোদগার করা হচ্ছে সেটা অনেক আগ থেকেই চলমান ছিল। কিন্তু কোন পরিচিত ডানপন্থী এক্টিভিস্ট বা পেইজ থেকে কখনোই তাদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করা হয়নি। যেই প্রমাণ তাদের কাছে চাওয়া হলে তারা নিজেরাও প্রদান করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাহলে যখন তারা দেশের এই ক্রান্তিকাল সময়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে একটি অবস্থান সৃষ্টি করে ফেলেছে, দেশবাসীর চূড়ান্ত দৃষ্টি আকর্ষণে সমর্থ হয়েছে তখন এমন পদত্যাগ এবং এতে ধর্মকে জড়িয়ে বিবৃতির কি প্রয়োজন ছিল?
এ্রর পেছনে কি অন্য কোন কারণ?

তাদের প্রধান হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়াতে তাদের তথ্যমতে বিদ্যানন্দের ৯০% মুসলিম স্বেচ্ছাসেবীরা ইতিপূর্বে কি কখনো প্রশ্ন তুলেছিল? তাদের প্রধান হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়াতে তাদের অনুদান দিতে ইতিপূর্বে কোন মুসলিম প্রশ্ন তুলেছিল কি? তারা এদেশের মুসলিম কোন সংস্থা, প্রতিষ্টান বা রাজনৈতিক দল থেকে ইতিপূর্বে কখনো হুমকির মুখোমুখি হয়েছে কি?

বাস্তবতা হলো মুসলিম অনুদানকারীরাই তাদের চলার পথে পাথেয় ছিল। এমনকি তাদের যাকাত ফান্ডেও লক্ষ লক্ষ টাকা জমা হচ্ছিল। যদি সত্যিই কেউ ঘূর্ণাক্ষরেও সাম্প্রদায়িক কোন গন্ধ পেত এইভাবে অনুদান দেওয়ার প্রশ্নই আসতোনা।

নয়ন চ্যাটার্জী টাইপ পেইজ থেকে তো সবসময়ই অনেক ব্যক্তি-প্রতিষ্টানকে ইস্কন ট্যাগ দিয়ে পোস্ট করা হয়, সেগুলোকে পাত্তা দিয়ে ইতিপূর্বে কখনো তো এমন রিএকশন আসতে দেখিনি!

তাহলে এই সময়ে কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে সাম্প্রদায়িক উস্কানী দেওয়া হলো?
এই পদত্যাগ তো এখন ধর্মবিদ্বেষী শাহবাগী আর কথিত মুসলিম চু-শীলদের 'পোয়াবারো' এনে দিল!
তারা এই সুযোগে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের 'ধর্মান্ধ', 'সাম্প্রদায়িক', 'বর্বর' ইত্যাদি ট্যাগ লাগিয়ে ইচ্ছেমত গাইলাচ্ছে।
অথচ এই সরলপ্রাণ ধর্মপরায়ন মুসলিমরা জানেইনা বিদ্যানন্দ কি ও কেন! অথচ তাদেরকে সমানে তুলোধুনো করছে শাহবাগী দুর্বৃত্তরা আর বিবেকবুদ্ধিহীন কিছু সেক্যুলার ইসলামিস্ট!

এই পরিস্থিতি ক্রিয়েট করাই কি বিদ্যানন্দ ও কিশোর কুমারের উদ্দেশ্য ছিল?

পঠিত : ৮৯৪ বার

মন্তব্য: ০