Alapon

পরকালের পথে যাত্রা এবং কিছু কথা...


আমাদের জ্বর হলে আমরা থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেই,তাই না!

আচ্ছা, আমাদের নেকী-গুনাহ মাপার জন্য যদি কোনো যন্ত্র আবিস্কৃত হত,তবে কেমন হতো!

এরকম কি যেনো কোথায় দেখেছিলাম যে মানুষ মারা যাওয়ার পর, তার দেহ থেকে আত্মা বের হয়ে গেলে মানুষের ওজনের পরিবর্তন হয় কিনা তা নিয়ে রিসার্চ চলছিল...।

সেরকম যদি গুনাহ বা নেকী ওজনের পাল্লা এই একবিংশ শতাব্দীতে এসে যদিবা আবিস্কৃত হতই তবে কি ই বা ফায়দা হত!

আচ্ছা,ধরুন একজন মানুষ ১০ টা লোককে খুন করল,তাহলে তার শাস্তি হিসেবে কি আমরা একবার এর থেকে বেশি দুইবার মারতে পারব ওই খুনীকে।
আবার ধরুন, একজন মানুষ অপর একজনের বা কোনো নারীর কোনো সম্মানহানি করল।আর শাস্তি স্বরূপ তাকে সারাজীবন কারাবন্দী বা মৃত্যুই দিলেন কিন্তু এতে কি ভুক্তভোগী ব্যক্তিটির সমাজে তার পূর্বের সন্মান আমরা আবার ফিরিয়ে দিতে পারব!


যে তার রব এর কাছে অপরাধী হয়ে উপস্থিত হবে তার জন্য তো আছে জাহান্নাম , সেখানে সে মরবেও না , বাঁচবেও না (সূরা ত্বোহা-৭৪)

হুম,জাহান্নামেই কেবল তা সম্ভব!

তবু আমরা পরকালে বিশ্বাসী হয়েও পরকাল নিয়ে বড্ড বেশি উদাসীন!!


নিশ্চয় আমরা মৃতকে জীবিত করি এবং লিখে রাখি যা তারা আগে পাঠায় ও যা তারা পিছনে রেখে যায় । আর আমরা প্রত্যেক জিনিস স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত রেখেছি (ইয়াসীন-১২)

প্রতিটা কাজের পাই পাই হিসেব দিতে হবে,ওই বিচারের দিনে...বিন্দুমাত্র জুলুম করা হবে না...

পাল্টা প্রশ্ন হতে পারে,
দুনিয়াতে আপনার /আমার চোখের সামনেই পাপী ব্যক্তিরা সুখ-বিলাসে জীবন কাটাচ্ছে,এখন বিচার না হয়ে,পরকালে হলেই কে বা দেখতে যাবে বা আপনার /আমার উপর এখন যে জুলুম হচ্ছে তাতে পরকালে শাস্তি হলেই কি,এখনতো আপনি/আমি কষ্টে আছি..
চলুননা ভাবনাগুলো একটু গভীর ভাবে ভাবি....

আল-মা’আরিজ ৭০:৪২

অতএব তাদেরকে বাক-বিতণ্ডা ও খেল-তামাশায় মত্ত থাকতে দিন– যে দিনের প্রতিশ্রুতিগুলিই তাদেরকে দেয়া হয় তার সম্মুখীন হয়ার আগ পর্যন্ত।


আলি ‘ইমরান ৩:১৭৮

কাফেরগণ যেন কিছুতেই মনে না করে যে, আমরা অবকাশ দেই তাদের মঙ্গলের জন্য; আমরা অবকাশ দিয়ে থাকি যাতে তাদের পাপ বৃদ্ধি পায়। আর তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।

আল্লাহ আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেক কি কেবল এই ক্ষনস্থায়ী জীবনের উপভোগের জন্যই দিয়েছেন!!

দুনিয়ার এই ক্ষনস্থায়ী জীবনের মূল্যবান সময়টাকে চিরস্থায়ী পরকালের দুঃখের দিকে নিজেই টেনে নেওয়াটা নিছক ই বোকামি..

আর হ্যাঁ..! নিজেদের বিশাল বিশাল গুনাহ গুলির ইয়ত্তা না থাকলেও বা কোনো ডিজিটাল যন্ত্রের ধারক ক্ষমতার বাহিরে গেলেও,আল্লাহর কাছে তওবার দরজা কিন্তু সবসময় খোলা..আর তওবা এমন একটা শক্তি যা গুনাহের পরিমান দেখে না, দেখে আপনার বা আমার অনুশোচনা বা ক্ষমার চাওয়ার আকুলতা.বান্দা যখন আল্লাহর কাছে তাওবাহ করে তখন আল্লাহ ঐ লোকের চেয়েও বেশি আনন্দিত হন, যে মরুভূমিতে নিজ সওয়ারীর উপর আরোহিত ছিল। তারপর সওয়ারটি তার হতে হারিয়ে যায়। আর তার উপর ছিল তার খাদ্য ও পানীয়। এরপর নিরাশ হয়ে সে একটি গাছের ছায়ায় এসে আরাম করে এবং তার উটটি সম্বন্ধে সম্পূর্ণরূপে নিরাশ হয়ে পড়ে। এমতাবস্থায় হঠাৎ উটটি তার কাছে এসে দাঁড়ায়। অমনিই সে, তার লাগাম ধরে ফেলে। এরপর সে আনন্দে আত্মহারা হয়ে বলে উঠে, হে আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা, আমি তোমার রব। আনন্দে আত্মহারা হয়ে সে ভুল করে ফেলেছে। (মুসলিম -৬৮৫৩)

আফসোস! , মহিমাময় আল্লাহর দয়া থেকে আজ আমরা নিজেরাই মুখ ফিরিয়ে...

পঠিত : ৮২৪ বার

মন্তব্য: ০