Alapon

সৌভাগ্যবান আলী ইবনে আবু তালিব রাদিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহু...


নবী কন্যা ফাতেমা, তার বিয়ের আনাগোনা চলছে নবী পরিবারে । এদিকে আলী রাঃ নিষ্কলুষ আশা ছিল নবীকন্যা ফাতেমাকে তিনি বিয়ে করবেন । এতে আলী রাঃ এবং নবীজির মাঝে যে আত্মীয়তার বন্ধন আছে, সেটা আরো দৃড় এব চিরস্থায়ী হবে, আলী রাঃ মনে মনে সুযোগ খুঁজে বেড়াতেন কখন প্রস্তাবটা দেওয়া যায় ।

কিন্তু সমস্যা ছিল দেনমোহর আদায়ের ক্ষমতা নিয়ে, তখন দেনমোহর আদায়ের মতো হাতে কিছুই ছিলো না আলী রাঃ এর হাতে । ইতিমধ্যে নবীকন্যা ফাতেমার হাত চাইতে এসে গেছেন আবু বকর ও ওমর [রাযি.] --তবে নবীজি তাদের দু'জনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন জানতে পেরে আলী রাঃ কিছুটা আশ্বস্ত হলেন ।

অপরদিকে নবীকন্যা কে ঘিরে আলী রাঃ ভাবনা গুলো টের পেল তার কাছের বন্ধুগণ। তারা সবাই মিলে নবীজির কাছে প্রস্তাব নিয়ে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করলেন । তারা বোঝালেন, ছোটবেলা থেকেই যেহেতু তোমাকে (আলী) কে লালনপালন করে আসছে, তাই তোমার প্রতি দুর্বলতা বেশিই থাকবে ! বাকী থাকল দরিদ্রের প্রশ্ন । আবার আলী রাঃ বংশের দিকে কম নন । যেহেতু নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দরিদ্রকেই বেশি পছন্দ করেন, তো চিন্তা কিসের! সুতরাং শুভ কাজে দেরি করার কোন মানে হয় না ।

বন্ধুদের উৎসাহিত বাণীতে আলী রাঃ কিছুটা লজ্জিত হয়ে বললেন :
আবু বকর আর ওমরের মতো গণমান্যকে ফিরিয়ে দেওয়ার পরেও আপনারা আমাকে এ বুদ্ধি দিচ্ছেন?

--তা ঠিক, তারপরেও উনারা আত্মীয়তার দিক থেকে আপনার চেয়ে কাছের না । তা ছাড়া নবীজিকে বড় করেছেন আপনার মা -বাবা । এবং তাদের হাতেই তিনি বড় হয়েছেন । আর আপনি প্রথম সারির ইসলাম আনায়ন কারির মাঝে অন্যতম । তা শুনে আলী রাঃ উৎসাহিত হলেন । এসবের পরে নবীজির সান্নিধ্যে হাজির হলেন আলী রঃ ।

সালাম বিনিময়ের পরে কাছে গিয়েও কিছু বলার সাহস হচ্ছিল না আলী রাঃ ।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান পুরুষ নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঠিকই টের পেলেন, চাচাতো ভাই আলী কিছু একটা বলতে চাচ্ছেন । বলতে গিয়েও লজ্জায় কিছু একটা বলতে পারছেন না । তাই নবীজি আগ বাড়িয়ে বললেন :

--আবু তালেবের পুত্র কি যেন বলতে চায় :
লজ্জাবনত শিরে মাঠির দিকে চেয়ে ক্ষীণকণ্ঠে বললেন :
--আমি রাসূল কন্যা ফাতেমার কথা স্মরণ করছিলাম....।

আলী কে অবাক করে হৃদয়কারা হাসি দিয়ে বললেন (নবীজি) বললেন :
--বেশ তো, স্বাগতম !

অপর দিকে অপেক্ষায় রয়েছে তার আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধব । নবীজি কি প্রস্তাব রেখেছেন, নাকি ফিরিয়ে দিয়েছেন? এটা জানার জন্যে সবাই অপেক্ষায় রইলেন । সবার মাঝে আলী গিয়ে হাজির হলেন । সবাই তাকে ঘিরে বসল, নবীজি কি বলেছেন তা শুনার জন্যে ।

সবার অনুরোধ শেষে আলী রাঃ বলে উঠলেন :
আমার কিছু বুঝে আসছে না, তবে এতটুকু মনে আছে তিনি বলেছেন,
'বেশ তো, স্বাগতম । তখন সবাই বলে উঠল :
---এটাই তো যথেষ্ট!

সবাই তাকে রেখে নিজ নিজ পথে চললেন, সুযোগ করে দিলেন আলী রাঃ কে স্বপ্নের রাজ্যে ঘুরে বেড়ানোর জন্যে ! এ মুহূর্তে তিনিই পৃথিবীর সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ব্যক্তি ।

কেননা যার ঘরে ফাতেমা উঠবেন, যার হাতে তিনি মাথা রেখে ঘুমাবেন, তিনি তো আলী [রাযি.] । সুতরাং আলী রাঃ তখন পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান ব্যক্তি ।

শিক্ষা :
ছেলের দ্বীনদারি থাকলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া উত্তম কাজ না । টাকা পয়শা দিয়ে দ্বীনদারি কেনা পাওয়া যায় না, এমন কি চরিত্রও! নবীজি আমাদেরকে এটাই শিক্ষা দিয়েছেন।।

(সংগ্রহীত ও পরির্মাজিত)

পঠিত : ৫৫৭ বার

মন্তব্য: ০