Alapon

আপনার প্রকৃত বন্ধু কে; আসুন জেনে নেই...


আপনাকে আমাকে সত্যের পথে,নিজের কল্যানে আহ্বান করেছে কেউ?

ইবাদত করতে, গালাগাল না করতে, হিংসা না করতে, অন্যের ব্যাপারে বাজে মন্তব্য না করতে, নকল না করতে মাদক জাতীয় দ্রব্য গ্রহনে বাধা দিতে, কথা বার্তায় গালি না দিতে,অশ্লীলতা ত্যাগ করতে,নমনীয় আচরণ করতে, মানুষের হক্ব নষ্ট না করতে- কেউ বলেছে কি? কাউকে পাশে পেয়েছেন কি? কেউ ডেকেছে কি? কেউ বলেছে কি এইগুলো মিথ্যের ঝঞ্জাট? কেউ বলেছে কি আসো সত্য চিনি?

যদি উত্তর হয় "না", তবে আপনি সম্পূর্ণ ভুল বন্ধনে রয়েছেন। আজ বা কাল নিজের ভুল বুঝতে পারবেন। কথায় আছে- ঠুস খাইলে হুস হয়! আগে থেকেই সাবধান।
সময় গেলে সাধন হবেনা!

যদি উত্তর হয় "হা", তবে আলহামদুলিল্লাহ উত্তম পুরষ্কারের আশা করতেই পারেন।

মানুষ ও পশুর মধ্যকার ব্যবধান হলো নিজের মস্তিষ্ক ধারা চিন্তাভাবনা করে ভালো কে গ্রহন করা আর খারাপকে ত্যাগ করা।

অর্থাৎ সত্য গ্রহন করে মিথ্যাকে ত্যাগ করা যদি সত্যের ঘর মানব শূন্য হয় তবে শূন্য ঘরটাই সামান্য মিথ্যের চেয়েও উত্তম,এর প্রতিদান বিশাল।

আপনার আমার চারিপাশের বন্ধনগুলো হতে পারে জান্নাতের ও সফলতার দ্বার প্রান্তে পৌঁছানোর উত্তম মাধ্যম।
আবার একই ব্যক্তিরা জাহান্নামের ইন্ধন বানাতেও কুন্ঠাবোধ করবেনা, সফলতা তো বিলাসিতা!

স্রষ্টা আপনাকে আমাকে উত্তম সৃষ্টি হিসেবে সত্য-মিথ্যা, ভালো -খারাপ, হালাল-হারাম বুঝার জ্ঞান দিয়েছেন।
যদি সঠিক কাজে না লাগাই তবে সেই দিন(আখরাতের দিন) আফসোস আর লজ্জায় নিজেকে গুটিয়ে নিতে হবে,কঠিন ভাবে পাকড়াও করা হবে।

*হায় আমি যদি অমুককে বন্ধুরুপে গ্রহন না করতাম*
*অতঃপর সে দিন তাহারা বন্ধুবর্গ একে অপরের শত্রুতে পরিনত হবে,মুত্তাকি ব্যতিত*

মৃত্যুর পরবর্তীতে আফসোস করতে হবে কিনা তা একটু মনোনিবেশ করলেই বুঝতে পারবেন।দুটো আয়াতই আল্লাহ আমাদের বলে দিয়েছেন যেনো ভুল সঙ্গে না জড়াই।
দুনিয়াবি সঙ্গে জড়ালেও যেন মুত্তাকি বেছে নেই।

আর কে সে মুত্তাকী?

যারা আপনাকে পরকালের জন্যে সাহায্য করবে, সত্য-উত্তম-হালাল গ্রহনে আমন্ত্রণ জানাবে, সকল ইবাদত আকড়তে ধরতে সাহায্য করবে, ভালো কাজে তাগিদ দিবে অশ্লীলতা পরিহার করতে সাহায্য করবে, আপনার জন্যে দোয়া করবে, উত্তম ব্যতীত সকল কিছুই পরিত্যাগ করতে সাহায্য করবে, সুসময় আর দুঃখের সময়ে পাশে থাকবে, ৫ ওয়াক্ত নামাজে আহ্বান করবে, আল্লাহর যাবতীয় বিধিনিষেধ পালনে উৎসাহিত করবে
সর্বোপরি আপনাকে জান্নাতে নিয়ে যেতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে,জাহান্নাম থেকে দূরে থাকতে আপ্রান চেষ্টা করবে।এরাই মুত্তাকী এরাই আল্লাহভীরু।

এদেরকেই গ্রহন করতে হবে জীবনের সঙ্গী সাথী হিসেবে। বাকি সব বাদ, বাকি কেউই আপনার বন্ধু নয়, বাকি সকলেই আপনাকে আগুনে নিয়ে যেতে সর্বাত্মক সমর্থন করে যাবে।

*সেই দিন নিজের ভাই-বোন, পিতা-মাতা,আত্মীয়স্বজন কেউই কোন কাজে আসবেনা, বন্ধুবর্গ পালিয়ে বেড়াবে আর সবাই নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বে, কেউই কাউকে চিনবেনা*

*প্রত্যেক প্রানীকেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে* আর এই অনিবার্য মৃত্যু ঘায়েল করার পূর্বেই আপনাকে আমাকে সতর্ক থাকতে হবে।"হয় উত্তম নয় শূন্য" এই সিদ্ধান্তে চলতে হবে।

যদি কেউ আপনাকে ভুল করতে দেখেও ভুল দেখিয়ে না দেয়, সংশোধনের জন্যে তাগিদ না দেয় তবে দয়াকরে সঙ্গ ছেড়ে দিন, মোটেও এরা কল্যানকামনাকারী নয়।এরাই আপনার শত্রু।

স্রষ্টার পানে ছুটে চলুন, তিঁনিই আপনাকে সর্বদা সাহায্য করবেন, পাশে থেকে সঙ্গ দিবেন, তাঁর চেয়ে কেউই বেশি ভালোবাসতে পারবেনা আবার তাঁরচেয়েও কঠিন পাকড়াও কেউ করতে পারবেনা।

"যিনি আপনাকে বানিয়েছেন তাঁর চেয়ে বেশি কে রয়েছে ভালোবাসার? কে রয়েছে যেই সঙ্গী সত্য পথে পরিচালিত করাবে?
আল্লাহ আমাদেরকে সহজ ও সরল পথে পরিচালিত করার ও উত্তম সঙ্গ গ্রহন করার তাওফিক দান করুক আমিন।

দয়া করে চারিপাশে তাকান আর দেখুন কে আপনার আসল বন্ধু, নিজের ব্যাগ নিজেকেই গুছাতে হবে, কেউই কারো নয়। ঐপারে সব কিছুর জবাব একাই দিতে হবে।

ভাইবা বোর্ডে বন্ধুবান্ধবকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়না, বরং জিজ্ঞাসা করা হয় শুধুমাত্র মূল পরিক্ষার্থীকে - এটাকে পার করতে হলে নিজেকে উত্তমভাবে তৈরি করতে হবে।একই ভাবে কবরের জীবনে আখিরাতে আপনাকেই জবাবদিহি করতে হবে অন্য কেউই জবাব দিবেনা।

সাধারণ একটা টি শার্ট কিনতে গেলেও যাচাই-বাছই করতে করতে ক্লান্তি এসে যায় সেখানে বন্ধুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে কেন অবহেলা?পূর্বে যা হয়েছে তো হয়েছে নতুন করে নিজেকে সাজিয়ে নিন।

কথায় আছে "সৎ সঙ্গে সর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ "

দয়া করে ফিরে আসুন নীড়ে, আপন আলয়ে, স্বকীয়তার ভুবনে,মিথ্যেকে তাড়িয়ে সত্য গ্রহন করুন, প্রয়োজনে দুনিয়ার কিছুটা জীবন দাঁত চেপে থাকুন ইনশাআল্লাহ এর উত্তম বিনিময়ে 'সেইদিন' ডান হাতেই পাবেন।

হাদিসটা অন্তরে গেথে রাখুন আর জীবনে প্রয়োগ করুনঃ

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন - আল্লাহ সাত ব্যক্তিকে সেই দিন তাঁর আরশের ছায়া দান করবেন তারমধ্যে - সেই দুই ব্যক্তি যারা আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্য বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা স্থাপন করে, যারা এই ভালোনাসার উপর মিলিত হয়,এবং এই ভালোবাসার উপরেই নিরবিচ্ছিন্ন হয়(মৃত্যু হয়)।(বুখারী ৬৬০/১৪২৩/৬৮০৬)

@Jishan

পঠিত : ৫৪৪ বার

মন্তব্য: ০