Alapon

সত্য কোনোদিন গোপন থাকে না...


বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, ‘সত্যের মৃত্যু নেই’। অর্থাৎ সত্যকে কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না। সত্যের ধর্মই হচ্ছে প্রকাশ হওয়া। সে আজ হোক আর কাল হোক একদিন সত্য ঠিকই বেরিয়ে আসবে। আজ আপনাদের তেমনই একটি সত্যের মুখোমুখি করতে যাচ্ছি।

আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে বিশ্ববরেণ্য মুফাস্সেরে কুরআন আল্লামা দেলোয়ার হোসাই সাঈদী সাহেবের কথা। যার বিরুদ্ধে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করে মানবতা বিরোধী অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয় এবং সেই অপরাধে তাকে প্রথমে ফাঁসি, পরে আপিল করলে যাবজ্জীবন সাজা প্রদান করা হয়।

যেসব সাক্ষীর সাক্ষ্যদানের ভিত্তিতে দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবকে ফাঁসি রায় দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন আবুল হালিম খলিফা ওরফে বাবুল। তিনি আজ দুপুরে ইন্তেকাল করেছেন।

তার ইন্তেকালের পরে ডেইলি স্টার যে রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতে দেখা যাচ্ছে মৃত্যুকালে তার ব্য়স হয়েছিল ৫৫ বছর।


ছবিতে দেখুন, আবুল হালিম খলিফা ওরফে বাবুলের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ৫৫ বছর।

মৃত্যুকালে তার বয়স যদি হয় ৫৫ বছর তাহলে ‘১৯৭১ সালে তার বয়স ছিল মাত্র ৬ বছর। আবুল হালিম ছিলেন সাঈদীর মামলার রাজ সাক্ষী। আবুল হালিম খলিফা নাকি নিজে দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী সাহেবকে মানবতা বিরোধী অপরাধ করতে দেখেছেন। তাহলে ১৯৭১ সালে যার বয়স ছিল ৬ বছর, তার রাজ সাক্ষীর বিপরীতে যখন একজন মানুষকে সাজা প্রদান করা হয়, তখন বোঝা যায় আন্তজার্তিক ট্রাইবুনালে বিচারের নামে সেখানে কতটা প্রহসন হয়েছে।

অথচ বিচারকালীণ সময়ে আবুল হালিম খলিফার ১৯৭১ সালে বয়স ১৪ বছর দেখানো হয়েছে। আর ২০১২ সালে যখন বিচারকার্য চলছিল তখনই নাকি বয়স ছিল ৫৫ বছর। এই ২০২০ সালে এসেও তার বয়স সেই ৫৫-ই রয়ে গেছে।

আবুল হালিম খলিফার এই বয়সকান্ড দেখে আমার একটা মজার ঘটনা মনে পড়ে গেল।

এক গ্রামে এক লোক ছিল। তাকে একবার জিজ্ঞেস করা হল, আপনার বয়স কত?
জবাব দিল, ৩০ বছর।
আবার কয়েক বছর পর জিজ্ঞেস করা হল, আপনার বয়স কত?
পুনরায় জবাব দিল, ৩০ বছর।
তারপর সেই লোকের যখন দাড়ি পেকে গেল, তখন জিজ্ঞেস করা হল আপনার বয়স কত?
তখনও বললেন, ৩০ বছর।
তখন প্রশ্নকারী বলল, ৩০ বছর আগেও আপনার বয়স ছিল ৩০ বছর, আজও আপনার বয়স ৩০ বছর!
তখন সেই লোক বলল, আমার এক জবান! জবান দিয়ে একবার যা কইছি তা কখনো নড়চড় হয় না!

আবুল হালিম খলিফার বয়সের ক্ষেত্রেও ‘এক জবান’ থিউরি কাজ করেছে।

কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় যখন এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছিল, ঠিক তখনই ডেইলি স্টার পত্রিকা নিউজটি সম্পাদনা করে আবুল হালি খলিফার বয়স আরও ৮ বছর যোগ করে ৬৩ করে দিল। সমালোচনার মাত্রা দেখে আমার তখনই মনে হয়েছিল, ডেইলি স্টার নিউজটা বদলে দিতে পারে। তাই তখনই স্ক্রিনশর্ট নিয়ে রাখি।


ছবি: সংবাদ বদলে দেওয়ার আগের চিত্র।



ছবি: খবর বদলে দেওয়ার পরে চিত্র।

এর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে যায়, বিচারের নামে প্রহসনে সরকার এবং বিচারকাজের সাথে সংশ্লিষ্টদের যতটুকু দ্বায় রয়েছে, ডেইলি স্টার, প্রথম আলো পত্রিকাগুলোরও ততটুকুই দ্বায় রয়েছে। তারা সত্য গোপন করে মানুষকে মিথ্যা সংবাদ দিয়েছে। আর সত্যকে সবসময়ই গলা টিপে হত্যা করেছে। এটাও একটি অপরাধ। মানবতা বিরোধী অপরাধ না হলেও তথ্য গোপনের মত জঘন্য অপরাধ।

সত্য যেমন কোনোদিন গোপন থাকে না, তেমনি সব অপরাধেরও একদিন বিচার হবে; আল্লাহর আদালতে।

পঠিত : ১৯০১ বার

মন্তব্য: ০