Alapon

নাস্তিকতার ভেতর ও বাহির...


নাস্তিক মানে এন্টি এস্টাবলিশমেন্ট ধারণা পোষণ করা। আস্তিক মানে এস্টাবলিশমেন্টের প্রতি আস্থাশীল। এক দিকে প্রতিটা মানুষই আস্তিক এবং নাস্তিক ভিন্ন ভিন্ন এস্টাবলিশমেন্টের জায়গা থেকে। আরো যদি গভীরে যাই কেউই নাস্তিক নয়। কিভাবে?

একজন নাস্তিক সৃষ্টিকর্তা ধারণা কেন্দ্রিক যে এস্টাবলিশমেন্ট আছে তাতে সে অবিশ্বাস করে,তবে সে এর পরিবর্তে অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তা ধারণার জায়গায় অন্য ধারণা প্রতিস্থাপন করতে চায়। অর্থাৎ অন্য প্যাটার্নের এস্টাবলিশমেন্ট সে আনতে চায়।

তার এই পয়েন্টে এন্টি-এস্টাবলিশমেন্ট মনস্তত্ত্বের কারণ হলো তারই ধারণাগত এস্টাবলিশমেন্টের প্রতি অগাধ আস্থাশীলতা। অর্থাৎ নাস্তিকতার মূল কারণ হলো আস্তিকতা। এই পয়েন্টে ভাবলে প্রতিটা নবী রসূল সাধক এবং দার্শনিক গণ তাঁর সমাজ কাঠামোতে বড় মানের নাস্তিক হয়ে উঠে।

অধিকাংশ মানুষ তখন তাদের নাস্তিক ভাবে। তবে ধীরে ধীরে নবী রসূল সাধক এবং দার্শনিকদের ধারণাকৃত এস্টাবলিশমেন্ট সমাজে প্রতিষ্ঠা পায়। তখন পূর্বেকার নাস্তিক নবী রসূল সাধক এবং দার্শনিকগণই আস্তিকতার মানদণ্ড হয়ে উঠে।

ইসলামের কালেমা হলো,"লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" সরল অনুবাদ করলে, কোন প্রতিপালক নাই আল্লাহ ছাড়া। এখানে শুরুতে এন্টিএস্টাবলিসমেন্টের বয়ান পরবর্তীতে আবার এস্টাবলিশমেন্টের। অর্থাৎ শুরুে নাস্তিকতা পরে আস্তিকতা।

তার তাৎপর্য দাঁড়ায় রসূল আস্তিকতার জন্য নাস্তিকতার বয়ান দিয়েছেন শুরুতে। আবুজেহেলের এস্টাবলিস সমাজ কাঠামোকে ভেঙে নতুন সমাজ কাঠামো দিতে চান। ফলে রসূল আবু জেহেলর কাছে নাস্তিক ছিলো, মূলত সে আস্তিক।

অর্থাৎ এক স্থান কালের নাস্তিক অন্য স্থান কালে আস্তিক হয়ে উঠে এবং নাস্তিকতার মূল কারণ হলো আস্তিকতা একই সাথে আস্তিকতার মূল কারণও নাস্তিকতাই হয়। এখন প্রশ্ন হলো কারা তার সময়ে অধিকাংশের মতে নাস্তিক হতে পারে?

যাদের স্বনির্ভরতার পারসেন্টেজ বেশি তারাই নাস্তিক হতে পারে। স্বনির্ভরতা শব্দটা বহুমুখী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। চিন্তা জ্ঞান শারীরিক সামর্থ্য সাহসিকতা অর্থনৈতিক নিরাপত্তা সবগুলো বিষয়ের জন্য যখন কেউ নিজের উপরই নির্ভশীল হয় সেই পুরোপুরি স্বনির্ভর। মানুষের পক্ষে শতভাগ স্বনির্ভর হওয়া সম্ভব নয়।

প্রচলিত নাস্তিক আস্তিকতার জায়গা থেকেও দেখলে, নারীর তুলনায় পুরুষের নাস্তিক হবার প্রবণতা বেশি, বৃদ্ধদের তুলনায় যুবকদের নাস্তিক হবার প্রবণতা বেশি।
আবার এশিয়া আফ্রিকার চেয়ে ইউরোপে নাস্তিকতার হার বেশি।

গ্রামের তুলনায় শহরে নাস্তিকতার হার বেশি। এই ফারাক গুলোর কারণ মোটাদাগে গবেষণা করলেই বুঝা যায় স্বনির্ভরতার পারসেন্টেজের হেরফের কিভাবে আস্তিকতা এবং নাস্তিকতায় প্রভাব ফেলে।

পঠিত : ৬৯৯ বার

মন্তব্য: ০