Alapon

নিজের নিয়ন্ত্রণ কখনো শয়তানের হাতে তুলে দিবেন না...


যখন মানুষ শয়তানের কথা শুনতে শুরু করে, একই সুরায় আল্লাহ আযওয়াযাল বলেন, (১৫; ৪২)
إِنَّ عِبَادِي لَيْسَ لَكَ عَلَيْهِمْ سُلْطَانٌ
তুমি কক্ষনোই আমার (মুমিন)বান্দার উপর তোমার কর্তৃত্ব পাবেনা।

অন্য কথায়, যে সকল মানুষ আল্লাহর কাছে নিজেকে পুরাপুরিভাবে সমর্পণ করেছে,শয়তান তাদের উপর কোন কর্তৃত্ব পাবেনা…কিন্তু অন্যান্যদের উপর পারবে।
الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ وَيَأْمُرُكُم بِالْفَحْشَاءِ --শয়তান তোমাদেরকে অভাব অনটনের ভীতি প্রদর্শন করে এবং অশ্লীলতার আদেশ দেয়। (২;২৬৮)
সে আপনাকে বেহায়াপনা করতে হুকুম করবে, অন্য কথায়, যখন আপনি তার কথা একটু শোনা শুরু করবেন, তখন আপনি তাকে সামান্য ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন।যখন আপনি তাকে একটু বেশি শুনতে শুরু করবেন তখন তাকে আপনি আরো ক্ষমতা দেওয়া শুরু করলেন। এবং আপনি যদি তাকে এই ভাবে শুনতে থাকেন তাহলে সে আপনাকে তার কাজের আদেশ করতে শুরু করবে। আপনি তখন এই অবস্থার মধ্যে পরবেন যে আপনি বলছেন আমি কোনভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারছিনা ভাই নুমান। আমি কোনভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারছিনা আমি কোনভাবেই বুজতে পারছিনা আমি কম্পিউটার কিভাবে বন্ধ করতে হবে তাও জানি না। আমি জানি না প্রতি রাতে কে আমাকে দিয়ে এই সমস্ত করায়। আমি জানি না কে আমাকে এই সকল করতে উস্কানি দেয়। কি কারণে আমি সেখানে যাই আমি তাও জানি না। কেনো এই চ্যাট সেশন গুলীতে ঢুকি? (সে আমাকে বলে) যাও লগইন করো…… ভয়ঙ্কর অশ্লীল ওয়েবসাইট গুলীতে, নোংরা জিনিসগুলী দেথতে উস্কানি দেয়। কেন সে আমাকে দিয়ে এইগুলী করায়? কেন আমি শেষ পর্যন্ত এই কাজগুলী করছি? কেন আমি আমার চোখনিচু করতে পারিনা যথন লিফটে উঠি? যখন রাস্তা দিয়ে দিয়ে হেঁটে যাই? আমি এমনকি নিজেকে কোনভাবেই সাহায্য করতে পারছিনা, আমি কি করতে হবে তাও জানি না? তখনই বুজবেন শয়তান আপনাকে ভালোভাবেই ধরেছে। সে আপনাকে বেশ শক্ত ভাবেই ধরেছে এবং সে ক্রমাগত আপনাকে গ্রাস করে ফেলেছে, কীভাবে বলবো একটা দুষ্ট চক্র, এটা শুধু খারাপ থেকে আরও খারাপ হতে থাকবে এবং আপনি এই জটিল সমস্যার কোন সমাধানও খুঁজছেন না, আর এটা আপনার ভিতরের আধ্যাত্মিকতাকে একেবারেই ধ্বংস করে দিবে।

আল্লাহর সাথে আপনার সম্পর্ক পুরোপুরি নির্ভর করে ক্লিন হার্টের অথবা পরিষ্কার হৃদয়ের উপর। যতবারই আপনি নষ্টামি কর্মের মুখোমুখি হবেন, আরো বেশী ময়লা, আরো বেশী কালিমা, অন্তরকে পূরোপুরি ভাবে ঢেকে দিবে, এটা শুধু স্রোতের মতো বাড়তে থাকবে।এটা শুধু স্রোতের মতো বাড়তে থাকবে। সেই সময় আপানার সামনে যদি আল্লাহর কথা বলা হয় আপানার চোখ দিয়ে একফোটা পানিও পড়বে না। এটা হবার কারন হলো সব প্রকাশিত অশ্লীলতার দরূন আপনার হৃদয় সম্পূর্ণরূপে শক্ত হয়ে গেছে। সব সময় যে সমস্ত গুনাহর কাজগুলি করার জন্য আপনার চোখ জোড়া ব্যবহার করছেন। আপনি এমনকি আর এটার জন্য মোটেও পরোয়া করেন না। আপনি জানেন যে একটি ভাল হৃদয় … যখন সে দেখে কোন খারাপ কাজ ঘটছে যাকিনা আল্লাহর হুকুমের বাহিরে তখন সে অস্থির হয়ে উঠে। এটা তাকে আকৃষ্ট করেনা। এটি তাকে বিরক্ত বোধ করায়। সে বলে উঠে, না এটা ভুল, সঙ্গে সঙ্গেই আপনার সতর্ক মন জেগে উঠে, এলার্ম বা বিপদ্সঙ্কেত বেজে উঠে। কিন্তু যখনই আপনি এই অবস্থায় চলে যাবেন যে আপনার মধ্যে গুনাহ করার পরে কোন অপরাধবোধ কাজ করছেনা। আপনি শুধু মনে করছে এটা কিছুইনা, আপনি এটাকে ভুল বলেই মনে করছেন না। আপনি শুধু সেটাকেই পাত্তা দিচছেন।

যখন আপনি কোন মেয়ের দিকে তাকাচছেন তখন ভাবছেন কেউ আমাকে দেখে ফেললো কি না। যখন দেখবেন কেউ আাপনাকে দেখছে না তখনই আপনি মেয়েটির দিকে খুব ভালো ভাবে তাকাবেন। এটার অর্থ হলো আল্লাহর ভয় মন থেকে সম্পূর্ণভাবে চলে গেছে।আপনি শুধুমাত্র ভয় পান যে জিনিস দেখা যায় তাকে, অদেখা শক্তিকে আর ভয় পান না। এটি হলো একটি ভয়ঙ্কর আধ্যাত্মিক দুরবস্থা। আল্লাহ বলেন,
يَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ চোখের চুরি এবং অন্তরের গোপন বিষয় তিনি জানেন। (৪০;১৯)

তিনি জানেন - তোমরা চক্ষুর মাধ্যমে যে সামান্য চুরি করে দেখ, তাও ধরা পড়ছে। তিনি জানেন যে, তোমর এই সামান্য চাহনির কী উদ্দেশ্য? এবং তিনি জানেন অন্তরের অভ্যন্তরে কী লুকিয়ে আছে।

- উস্তাদ নোমান আলী খান

পঠিত : ৪৭৮ বার

মন্তব্য: ০