Alapon

নাসিম তার বাপের মতো শক্তিশালী লুটেরা হতে পারেনি!



তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিল নাসিম। আগামী বছর নির্বাচন। নির্বাচন উপলক্ষে ব্যাপক টাইট দিতে হবে বিরোধীদলকে। কী করা যায়! তখন হাসিনা সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাসিমের উদ্যোগে পাশ হয় জননিরাপত্তা আইন ২০০০। এপ্রিল মাসে এই আইন পাশ হয়। এই বিশেষ আইনের মাধ্যমে যে কাউকে বিনা মামলায় এরেস্ট করা যাবে। এই বলে এরেস্ট করা হবে যে, তার উপস্থিতি জনগণের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।

ব্যাস! নাসিম পেয়ে গেলো বিরোধী নেতা কর্মীদের গ্রেপ্তার করার আইনী অধিকার। এই মামলা দিয়ে সারা বাংলাদেশে সে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। হাজার হাজার বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মী, কওমী অঙ্গনের শত শত ছাত্র ও আলেমকে বন্দি করে, নির্যাতন করে ও হত্যা করে।

এরপর ক্ষমতার পালাবদল হয়, ২০০২ সালে সে কালো আইন বাতিল করে জোট সরকার।

এবার একটু উল্লেখ করি তার বাপ ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর কথা। একাত্তরের মার্চে তাজউদ্দিন ও মনসুরের পরিকল্পনায় সারাদেশে অনেকগুলো ব্যাংক ডাকাতি হয়। সবচেয়ে বেশি হয় বগুড়াতে। সেখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ কত ছিল তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। টাকাগুলো গচ্ছিত ছিল মনসুরের কাছে। অস্থায়ী প্রবাসী সরকার গঠন করে মনসুরকে সেই টাকাসহ দায়িত্ব দেয়া হয় অর্থমন্ত্রীর।

অবশেষে বাংলাদেশ সৃষ্টি হলে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সেই ব্যাংক লুটের টাকা নিয়ে কথা হয়। কথা হয় সারা পৃথিবী থেকে প্রাপ্ত ডোনেশনের হিসাব নিয়ে। নানামুখী চাপে বলতে শেষ পর্যন্ত মনসুর বলতে বাধ্য হয় ব্যাংক লুট বাবদ আয় হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। কিন্তু আজ পর্যন্ত পৃথিবীর কেউ জানে না একাত্তরে ১০০ কোটি টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে। কী তার হিসাব? ইত্তেফাক পত্রিকা এই নিয়ে অর্থ আত্মসাতের কয়েকটি প্রতিবেদন করেছিলো। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা মনসুর সেই সাংবাদিকের হাত ভেঙ্গে দিয়েছে।

এরপর থেকে আজ পর্যন্ত প্রবাসী সরকারের আর্থিক হিসাব আলোর মুখ দেখেনি। অবশ্য সোনাগাছিতে খরচ হওয়া অর্থের হিসাব মনসুর আর তাজউদ্দিনেরা কীভাবে দিবে? যাই হোক, গুণ্ডা স্বভাবের কারণে শেখ মুজিব তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়। মুজিবের আমলে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কেমন ছিল তা কমবেশি সবাই জানে। হেড অব স্টেট হিসেবে সব দায় মুজিবের উপর পড়ে মহামানব হয়ে রইলো গুন্ডা ক্যাপ্টেন মনসুর।

সারা দেশে লুটতরাজ, বিরোধী জাসদ কর্মিদের গুম, খুন, অপহরণই ছিল ক্যাপ্টেন মনসুরের কাজ। জাসদের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সে টিপে টিপে খুন করেছে। জঙ্গী নেতা ইনু সর্বপ্রথম মিছিল নিয়ে যার বাড়ি আক্রমণ করেছে সেই হলো মনসুর। জাসদের মূল আক্রোশ ছিল মনসুরের প্রতি। কারণ সেই তাদের কর্মীদের খুন করতো।

নাসিম বরাবর তার বাপের মতো যুগপৎভাবে অর্থলুট ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে পটু ছিল। তবে তাকে বাপকা বেটা বলা যায় না! কারণ গুণ্ডা মনসুর যা লুট করেছে ও যত মানুষ মেরেছে নাসিম তার আশে পাশেও নেই!

পঠিত : ৬৬৪ বার

মন্তব্য: ০