Alapon

ইস্তিগফারের উপকারীতা


ইস্তিগফার_অপার_সম্ভাবনার_দ্বার

ইসতিগফার-সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দশটি বিষয় উপস্থাপন করা হচ্ছে—বিইযনিল্লাহ্
.
প্রথমে বলে রাখি—ইসতিগফার হলো, আল্লাহর নিকট গুনাহ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
.
ইসতিগফার কীভাবে করতে হয়?
.
ইসতিগফারের জন্য নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অনেক দু‘আ শিখিয়ে গেছেন। এছাড়া আল কুরআনেও ইসতিগফারের অনেক দু‘আ বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোর কোনোটি নবীদের, আবার কোনোটি নেককার বান্দাদের। সেসব বাক্য দিয়ে আল্লাহর কাছে ইসতিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়। যেমন: নবীজি এভাবে ইসতিগফার করেছেন—
.
أَللّٰهُمَّ اغْفِرْلِيْ
.
[উচ্চারণ: আল্লাহুম্মাগফিরলি]
অর্থ: হে আল্লাহ্ আমাকে ক্ষমা করুন
[সহিহ মুসলিম: ২৬৯৭]
.
ইসতিগফার সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দশটি বিষয় সবার জানা থাকা দরকার:
.
[১] ইসতিগফার হাত তুলে দু‘আ করার মাধ্যমেও করা যায় আবার হাত না তুলে ইসতিগফারের বাক্যগুলো পাঠ করেও করা যায়। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অন্তরের অনুশোচনা ও অনুতাপ।
.
[২] ইসতিগফারের জন্য অযুর প্রয়োজন নেই। তবে, দু‘আর মাধ্যমে ইসতিগফার করলে অযু করে নিলে মনোযোগ, একাগ্রতা ও খুশু-খুযু পাওয়া যায়।
.
[৩] হেঁটে-হেঁটে, দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, নিঃশব্দে বা সশব্দে (খুব জোরে সীমালঙ্ঘন না করে) সর্বাবস্থায় ইসতিগফার করা যায়। ইসতিগফারের ক্ষেত্রে কোনো সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি।
.
[৪] ইসতিগফার যেকোনো সময় করা যায়। (তবে ইসতিগফারের জন্য রয়েছে কিছু শ্রেষ্ঠ সময় ও মুহূর্ত। আমরা সেগুলো নিয়ে অন্য একটি পোস্টে আলোচনা করব—ইনশাআল্লাহ্)
.
[৫] ইসতিগফার শুধু নিজের জন্যই নয়, মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজনসহ যেকোনো জীবিত বা মৃত মুসলিমের জন্যই করা যায়। [সূরা ইবরাহিম, আয়াত: ৪১]
.
[৬] কোনো কাফিরের জন্য ইসতিগফার করা হারাম। নবীজির চাচা আবু তালিব সারাজীবন নবীজির জন্য নিজের জীবন বাজি রেখেছেন, কিন্তু ঈমান আনার সৌভাগ্য হয়নি। তার মৃত্যুর সময় নবীজি আল্লাহর নিকট ইসতিগফার করছিলেন। তখন আয়াত অবতীর্ণ হয়—‘‘নবী ও মুমিনদের উচিত নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে—যদিও তারা নিকটাত্মীয় হয়—যখন তাদের কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, তারা জাহান্নামী।’’ [সূরা তাওবাহ, আয়াত: ১১৩]

[৭] কুরআন-হাদিসে ইসতিগফারের জন্য যেসব শব্দ এসেছে, সেগুলোর বাইরেও অন্য যেকোনো উপযুক্ত শব্দ বা বাক্য দিয়ে ইসতিগফার করা যায়। এমনকি যেকোনো ভাষায় ইসতিগফার করা যায়। তবে, কুরআন-সুন্নাহয় উল্লেখিত ইসতিগফারের বাক্যগুলোর মর্যাদা ও নেকি অনেক বেশি। এগুলো কবুল হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশি সম্ভাবনা রাখে। [বিস্তারিত জানতে দেখুন: রাহে বেলায়াত, ড. আব্দুল্লাহ্ জাহাঙ্গীর; ৯৬-১০৪ পৃষ্ঠা]
.
[৮] যতবার ইচ্ছা ইসতিগফার করা যায়। নির্দিষ্ট সংখ্যক পড়া বাধ্যতামূলক নয়। তবে, যেসকল হাদিসে স্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট সংখ্যায় পড়ার কথা এসেছে, সেগুলো সেভাবেই পড়তে হবে। যেমন: প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে তিন বার ইসতিগফার পড়া। [সহিহ মুসলিম: ৫৯১]
.
[৯] পিরিয়ড অবস্থায় কুরআন পড়া নিষেধ থাকলেও ইসতিগফার, দরুদ, যিকর, দু‘আ ইত্যাদি পড়তে কোনো বাধা-নিষেধ নেই। এ ব্যাপারে আলিমগণ একমত।
.
[১০] সিজদায় ইসতিগফার পড়া যাবে। কারণ ইসতিগফার এক ধরনের দু‘আ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিজদার হালতেও ইসতিগফার পড়েছেন। [সহিহ বুখারি: ৭৯৪]
.

পঠিত : ৭৩৫ বার

মন্তব্য: ০