Alapon

সুশীল শয়তানরা ইবলিশ শয়তানের চেয়েও বড় শয়তান...


জনৈক হুজুর বলেছিলেন, সুশীল নামের শয়তানরা নাকি ইবলিশ শয়তানের চাইতেও খারাপ! হুজুরের এই কথা শুনে তখন হেসে ছিলাম। ভেবেছিলাম, হুজুর মানুষকে হাসানোর জন্যই হয়তো এমন কথা বলেছেন। কিন্তু করোনার এই মহামারীর সময়ে সুশীলরা যা শুরু করেছে, তাতে এখন বুঝতে পারছি হুজুর কথা মিথ্যা বলেননি।

বাংলাদেশে করোনা সংকট শুরুর সময় থেকেই এক শ্রেণির সুশীলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা। যার দরুন বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার সাথে সাথে কতিপয় সুশীল কলাম লিখে এবং টেলিভিশনের টকশোর মাধ্যমে দাবি তুলে, মসজিদগুলো বন্ধ করে দেওয়া হোক। সেই সাথে মসজিদে নামাজও নিষিদ্ধ করা হোক। কিন্তু ওই একই সময়ে কিন্তু বাজারঘাট দিব্যি চালু ছিল। এছাড়াও আজ অবধি বাজারগুলোতে শতভাগ স্বাস্থবিধি মেইনটেইন করা সম্ভব হয়নি। তারপরও বাজারগুলো বন্ধ করা হয়নি, আর সুশীলরাও বাজার বন্ধ করতে বলেনি। কিন্তু তাদের দৃষ্টি ছিল মসজিদের দিকে! এই লোকগুলোর বক্তব্য শুনে মনে হয়েছিল, মসজিদেই যেন করোনা ভাইরাসের আবাদ হচ্ছে!

তারপর সরকার মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের যাতায়াতে বাধ্য-বাধকতা আরোপ করে। কিন্তু সুশীলরা আদৌত যেভাবে মসজিদ বন্ধ করতে চেয়েছিল, সেভাবে বন্ধ করা হয়নি। তাই তাদের গাত্রদাহ হচ্ছিল। এই গাত্রদাহের ঘি ঢেলে দেয়, ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার একটি জানাজার নামাজ! চলতি বছরের এপ্রিলে ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়ার একজন বর্ষিয়ান আলেম ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের খবর শুনে সাধারণ মানুষ তার জানাজা পড়তে আসে। এভাবে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ একত্রিত হয়। এই করোনার সময় এতো মানুষ কীভাবে একত্রিত হল, তার দ্বায় প্রশাসনের উপর বর্তায়! কিন্তু সুশীল নামক কতিপয় মূর্খের একমাত্র কর্মই হল, ইসলামকে আক্রমণ করা। এই সুযোগে তারা আবারও ইসলামকে আক্রমণ করতে শুরু করল।

তারপর এলো পবিত্র ঈদুল ফিতর। কতিপয় সুশীল চেয়েছিল যেন ঈদুল ফিতরের নামাজ না হয়! দেশের কোথাও যেন ঈদুল ফিতরের নামাজ পড়ার অনুমতি প্রদান করা না হয়। কিন্তু সরকার তাদের সেই অযৌক্তিক চাওয়াকে উপেক্ষা করে নামাজের অনুমতি দেয়। ফলে তারা আরও আগ্রাসী হয়। তাদের সেই আগ্রাসী মনোভাবের বাস্তব প্রতিফলন বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে। সামনে যখন কুরবানি ঈদ তখন এক শ্রেণির সিজনাল পশুপ্রেমি ও সুশীল করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে কুরবানির পশুর হাট বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছে। সেই সাথে তারা এটাও বলছে, যেন পশু কুরবানি রাষ্ট্রীয় ভাবে বন্ধ করা হয়। সে লক্ষ্যে তারা হাইকোর্টেও রিট করেছে। এই সুযোগে কতিপয় ইসলাম বিরোধী কিন্তু তাদের এলাকায় পশু কুরবানি নিষিদ্ধ করেছে। তাদের মধ্যে অন্যতম মুহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি কতৃপক্ষ। করোনা ভাইরাসের দোহাই দিয়ে তারা বলছে, জাপান গার্ডেন সিটি এরিয়ার ভেতরে কেউ পশু কুরবানি করতে পারবে না। অথচ করোনার কালে সবই ঠিকঠাক চলছে, বিয়ে শাদির অনুষ্ঠান চলছে শুধু ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত বিষয় পালন করতে গেলেই ভাইরাস মহামারী আকার ধারণ করে।

এগুলো স্রেফ শয়তানি ছাড়া আর কিচ্ছু না। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের স্বাস্থ্য খাত যখন ভেঙে পড়েছে, দুর্নীতির কবলে স্বাস্থখাতের মাজা ভেঙে যাওয়ার পরও তারা সেসব নিয়ে টু শব্দটিও বলছে না। সরকার দলীয় নেতার হাসপাতাল রিজেন্ট হাসপাতালের কারণে বৈশ্বিক দিক থেকে বাংলাদেশ প্রায় এক ঘরে হতে যাচ্ছে, সেটা নিজেও কারো কোনো মাথা-ব্যাথা নেই। আর একজন সরকার দলীয় এমপি পাপুল সাহেব বিদেশে বসে অবৈধ ব্যবসা করতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে এখন জেলের ঘানি টানছেন, তারপরও তার দ্বায় সরকারের উপর বর্তায় না। এমনকি সুশীল সমাজ এই ঘটনায় সরকারের কোনো দোষ দেখছে না। তারা এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই খালাস।

অথচ তারা এইসময়ে কীভাবে কুরবানি বন্ধ করা যায়, সেই কাজে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে। তাদের এই অবস্থা দেখে বলতে হয়, সুশীলরা ইবলিশ শয়তানের চাইতেও বড় শয়তান।

পঠিত : ৫৩৬ বার

মন্তব্য: ০