Alapon

সাজানো বৈরুত বন্দর এক নিমিশেই ধ্বংসস্তুপ...


সারাবিশ্ব যখন করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত ঠিক সেই সময়ে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা গোটা বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। গতকাল বৈরুত সমুদ্র বন্দরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই বিস্ফোরনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছে ১০০ বেশি মানুষ এবং আহত হয়েছে প্রায় ৪০০০ মানুষ। নিহতদের মধ্যে ১ জন বাংলাদেশিও রয়েছে। আর আহতদের মধ্যে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ১৯ জন সদস্য রয়েছে। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর একটি জাহাজ লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্ব পালন করছিল।

এতো ভয়াবহ বিস্ফোরণ থেকে প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসী হামলাই মনে হয়েছিল। আর সন্দেহের তীঁর ছিল ইসরাইলের দিকে। কিন্তু ঘটনার পরপরই ইসরাইলি সরকার এক টুইট বার্তার মাধ্যমে এই ঘটনার সাথে ইসরাইলের কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে। সেইসাথে লেবাননে ইসরাইলের প্রধান শত্রু হিজবুল্লাহও এই ঘটনার জন্য ইসরাইলকে দ্বায়ী করেনি। তবে ঘটনার আকর্ষিকতা দেখে মনে হয়েছিল, পরমানু হামলা হয়েছে। অন্যদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও হামলার ভয়াবহতা দেখে মন্তব্য করেছিলেন, এটা সন্ত্রাসী হামলাই হবে। তা না হলে নিছক কোনো দূর্ঘটনা থেকে এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে না। আর এমনটা মনে করাও অস্বাভাবিক না। কারণ, বিস্ফোরণের মাত্রা এতোই ভয়ংকর ছিল যে, ১৮০ কি.মি দূরের সাইপ্রাস থেকেও এই বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। আর ঘটনাস্থল থেকে ১০ কি.মি দূরের বাড়ির জানালার কাচ এই বিস্ফোরণের কারণে ভেঙ্গে গেছে।

তবে লেবাননের সরকার বলছে এটা কোনো সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা নয়। ছয় বছর আগে একটি জাহাজে ২ হাজার ৭৫০ ম্যাট্রিক টন অ্যামানিয়াম নাইট্রেট আনা হয়। কিন্তু কাগজ পত্র ঠিক না থাকার কারণে সেগুলো জব্দ করে বন্দরের গুদামে রাখা হয়। কথা ছিল পরবর্তিতে নিলামের মাধ্যমে সেগুলো বিক্রয় করা হবে। কিন্তু কোনো এক কারণে সেই নিলাম আর অনুষ্ঠিত হয়নি। আর রাসায়নিক পদার্থগুলো বন্দরের গুদামে ৬ বছর ধরে এভাবেই অরক্ষিত অবস্থা পড়েছিল।

অ্যামানিয়াম নাইট্রেট মূলত জমিতে সারের কাজে লাগে। খনিতে কাজে লাগে। আবার বোমা তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়। সামান্য তাপ পেলেও এ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটতে পারে। অ্যামানিয়াম নাইট্রেট এর পরিমাণ বেশি হওয়ার কারণেই এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে লেবাননের সরকার প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করছি। তবে বৈরুতের আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখে মনে হয়েছিল এ যেন আরও একটি হিরোশিমা-নাগাসিকা।

বিস্ফোরণের পর বৈরুত শহর এবং মানুষের অবস্থাটা ছবিতে দেখে নেই-



ছবি: বিস্ফোরণের পর বৈরুতের আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলি।



ছবি: এই ঘটনায় আহতদের রাহাজানি।



ছবি: বিধ্বস্ত বৈরুত সমুদ্র বন্দর।



ছবি: আহতদের উদ্ধারে ছুটছে উদ্ধারকর্মীরা।

পঠিত : ৩৭৯ বার

মন্তব্য: ০