Alapon

ফেসবুকের আর্বিভাব কি অভিশাপ নাকি আর্শীবাদ...?


সভ্যতার উৎকর্ষতার সাথে সাথে যান্ত্রিক সভ্যতার উন্নতি সাধিত হয়েছে।একসময় কথা বলার জন্যে টেলিফোন,মোবাইল,স্মার্টফোন ইত্যাদি আবিস্কৃত হয়েছে বা হচ্ছে। বিজ্ঞান যখন আরো এগিয়ে গেল ইন্টারনেট জগতে google,browser ,Facebook ,Twitter ,messenger ,imo,viber,whatsapp ইত্যাদি দৃষ্টিনন্দন আবিস্কার চোখের সামনে চলে এল।

ইন্টারনেটের গতি মন্থরতা কমিয়ে 2G,3G, 4G তে প্রবেশ করল। নিঃসন্দেহে এই অর্জন গুলোকে আপনি মন্দ বলতে পারেন না। যে কোন আবিস্কারক আবিস্কার করে কল্যাণের জন্যে। ভাল-মন্দ নির্ভর করছে মানুষের ব্যবহারের উপর।

একসময় আপনি সিনেমা, চলচ্চিত্র দেখার জন্যে অনেক দুরে যেতেন লোকচক্ষুর অন্তরালে, টাকাও কম খরচ হত না।মোটামুটি অশ্লিলতার দিকে নিজেকে নিয়ে যাওয়া এতবেশী সহজলভ্য ছিল না। সেসময় আর বর্তমান সময়ের পারাক অনেক বেশী। এখন সবকিছুকে সহজে পাচ্ছেন, সহজে দেখছেন এটাকে আপনি কার অপরাধ বলবেন?

প্রথমে, আমাদের সমাজের চিত্রটা এভাবে যে ছোট শিশুটা বড় হচ্ছে স্মার্টফোন,ট্যাবে সময়দানের মধ্যদিয়ে হয়তো সে ভিডিও গেমস খেলছে, কার্টুন দেখছে অথবা নিত্য নতুন অডিও,ভিডিও গান দেখছে মুখে মুখে বুলাতে চেষ্টা করছে কিংবা পিতামাতার কোলে বসে সিরিয়াল দেখছে। সিনেমার মারপিঠ দেখছে বাস্তবজীবনে অনুশীলন করতে গিয়ে অনাকাঙ্কিত কিছু ঘটে যাচ্ছে। এসব ছেলে যখন বড় হয়ে উঠবে তাঁর চিন্তা-চেতনা সবকিছু স্মার্টফোন, ট্যাব কেন্দ্রীক সীমাবদ্ধ হয়ে যাবে। সে হয়তো পড়াশুনা করছে বাকি সময়গুলো এক কেন্দ্রিক ব্যয় হয়। তাঁর মুক্তচিন্তা, সৃজনশীলতা প্রতিনিয়ত ভাটা পড়ছে। বয়স যখন আরো একটু বাড়বে কিশোরের গন্ডি পেরিয়ে যাবে অশ্লিলতা তাকে জড়িয়ে ধরবে। সে ফেসবুক ইন্টারনেটের মাধ্যমে যত্রতত্র পাবে, পোস্ট করবে,গার্লফ্রেন্ডের ছবিতে অশ্লিলতা সংযুক্ত করে ভাইরাল করে দিবে। একটি পোস্ট যেমন ভাল কিছু দিতে পারে। আবার আপনার মনমানসিকতার উপর ভিত্তি করে কলংঙ্ককজনক অধ্যায় রচিত করে শেষ করে দিতে পারে আরেকজনের সাজানো বর্ণিল জীবন তাও আবার একটি পোস্ট। ভুয়া বন্ধু সেজে কতজনকে ধোঁকা দেয়। ভুয়া মেয়ে বন্ধু সেজে চেয়ে নিছে চ্যাটিং এ অন্তরঙ্গ ছবি। এভাবে আস্তে আস্তে নষ্টের শেষ সীমানায় পৌঁছতে খুব বেশী সময় লাগবে না।

এভাবে হয়তো কোন গার্লফ্রেন্ডের জীবন সিলিং ফ্যানে আটকে যাবে ওড়না পেছিয়ে।আবার কোন বয়ফ্রেন্ডের জীবন যাবে সম্পর্কে ফাটল বেদনায় গলায়ফাঁস কিংবা আত্নহত্যার মধ্য দিয়ে। যারা তথ্য প্রযুক্তির আবিস্কারক তাদের দেশগুলোতে দেখতে পারেন তারা কি ছোট ছেলে মেয়েদের হাতে মোবাইল তুলে দেয়? বিলগেটস বলেন,জুকারবার্গ বলেন,বারাক ওবামা বলেন তারা কিন্তু তাদের ছেলে মেয়েদের হাতে ছোটকালে স্মার্টফোন,আইফোন ইত্যাদি তুলে দেয় নি। মনে হয়, টাকা পয়সার ঘাটতি? আসলে তা নয়। শিশুদের এই বয়স গুলো হলো তার আচার, আচরণ শেখা,মেধা,মনন, সৃজনশীলতা, বিকশিত হবার সময়। এখানে এর বাইরে ব্যহ্যিক কিছুর ফলাফল সন্তোষজনক নয়। আজকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বড় বড় ডিগ্রিধারী বের হয়। কিন্তু দেখা যায় না তার ভিতর সৃজনশীলতা,নতুনত্বতা,অথচ নজরুল স্কুলের গন্ডি পেরুতে পারেনী রোগে শোকে বিবর্ণ তার ভিতর কত!উদ্যমতা,নতুনত্বের অপূৃর্ব সমাবেশ। আগে একসময় ফেসবুক আসার পূর্বে পড়ালেখায় সময় দিত ৬-৮ ঘন্টা পর্যন্ত।

এই সময় গুলো দখল করে নিয়েছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। পড়ে না বই,করে না নতুন কিছু। ইসলামীক স্কলারদের লেখা, মুসলমানদের সোনালী যুগের গৌরবময় ইতিহাস। নজরুলের কবিতা,গবেষকদের গবেষণা কিছুই তার তৃপ্তির খোরাক হয় না,সে প্রশান্তি খুঁজে পায় ফেসবুকের মাধ্যমে।

পর্ণোগ্রাফি একটি আসক্তি মদ খাওয়ার মত বলতে পারেন। আমি এটাকে কয়েকভাগে ভাগ করেছি মুলত এর ফলাফল টা নির্ভর করছে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার উপর।

*the period of enter: এটাকে ধরতে পারেন ২০০৬ সাল থেকে মোবাইলও এতবেশী ছিল না। ইন্টারনেটও এত ছিল না।যারা যোগাযোগ করত পিতামাতার চোখ ফাঁকি দিয়ে fnf number talk time কথা বলার মাধ্যমে।

*the period of growth: ২০১২ সাল থেকে এটাকে ক্রমবিকাশের যুগ ফেসবুক হাতে এসেছে। বেছে নিয়েছে লাইফ স্টাইল। চ্যাটিং হয়, পোস্ট হয় ইত্যাদি।

*the period of blow up: ২০১৫ সাল থেকে ধরতে পারেন এটাকে বিস্ফারণের সময় ধরতে পারেন। এই সময়ে যেটা ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। এটা talk of the town,talk of the country,talk of the world রুপান্তরিত হয়ে যায়। যেমনঃ পহেলা বৈশাখের দিন নগ্ন করে ফেলা,প্রশ্নফাঁস,রোহিঙ্গা ইস্যু,জেরুজালেম ইস্যু ইত্যাদি। এখানে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ইস্যু , পজেটিভ এবং নেগেটিভ উভয় দেয়া হয়েছে। কোন বখাটে কোন মেয়েকে ধর্ষণ করে ধর্ষক এটা ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। রোহিঙ্গা ইস্যু নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদী জানা যায়। ফেসবুকের মাধ্যমে পুরো বিশ্বব্যাপ্তি নিন্দাও চিন্তার অন্যতম কারণ। সারা বিশ্বব্যাপী তাদের প্রতি সহানুভূতি সৃষ্টি হয়েছে।

এখন আপনি এখানে ফেসবুককে কি বলবেন? একজন ডাক্তারে হাতে একটা কাটার দিলে সে মানুষকে চিকিৎসার কাজে মানুষকে সেবা দিতে ব্যবহার করবে, আরেকজন ডাকাতকে দিলে সে মানুষ হত্যা করবে। এটা আমাদের মুল্যবান সময় হাতিয়ে নিচ্ছে। যেসময় আধাজল খেয়ে পড়ার কথা পরিক্ষার জন্যে। সেসময় কোন প্রশ্নফাঁস হচ্ছে কিনা ফেসবুকে সময় দানে ব্যস্ত।

পঠিত : ৪৫১ বার

মন্তব্য: ০