Alapon

পর্দা কি কেবল নারীদের জন্যই ফরজ করা হয়েছে... ?


নারীদের নিয়ে ভাবতে ভাবতে আমরা ক্লান্ত। কিন্তু, নিজেদের দিকেও খেয়াল দিতে হবে যে
পুরুষদের পর্দা নিয়ে যেন মাথা ব্যাথাই নেই।

আল্লাহ তা’আলা কুরআনে পুরুষদের পর্দার কথা বলেছেন আগে তারপর এসেছে নারীদের কথা, আলহামদুলিল্লাহ।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা বলেন,

قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِہِمۡ وَ یَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَہُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَہُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ

‘মুমিন পুরুষদেরকে বল, তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করবে। এটাই তাদের জন্য অধিক পবিত্র। নিশ্চয় তারা যা করে সে সম্পর্কে আল্লাহ সম্যক অবহিত।’
{সূরা : আন্-নূর | আয়াত : ৩০}

আর নাভী থেকে টাখনুর উপরে হাটুর নিচে পর্যন্ত ঢাকা থাকতেই হবে এটা মূল সতর, সাথে মূল বডিটাও ঢাকবেন (এটাই তাকওয়া)।
প্রিয় ভাই আমার, চোখ আমাদের সকল পরিক্ষার মূল প্রশ্নপত্র। চোখের উত্তরটা ঠিক ঠাক লিখলে ভুরি ভুরি নাম্বার অর্জন করা সম্ভব, ইন শা আল্লাহ। তাই একে সংযত করতে হবে, নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ইমাম গাজ্জালী (রঃ) বলেই গেছেন..
‘চোখ নিয়ন্ত্রণ ব্যতীত, পাপ নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব।’
মনে রাখবেন ভাই, চোখ সঙ্গযত তো মস্তিষ্ক সংযত। আর মস্তিষ্ক সংযত তো অন্তর সংযত। আর অন্তর সংযত তো লজ্জাস্থান সঙ্গযত ফলে জীবন সংযত, ইন শা আল্লাহ। একটার সাথের আরেকটার সম্পর্ক বেশ গভীর ভাবুন চিন্তা করুন কতইনা সুন্দর ব্যবস্থা, সুবহানাল্লাহ।

প্রিয় ভাই,
নারী যে অবস্থাতেই থাকুকনা কেন তাদের দিকে তাকানো যাবেনা কারন আপনাকে জান্নাতে যেতে হবে আপনার আল্লাহভীতির উপর নির্ভর করে সেই নারীর কর্ম আপনার ঝুলিতে উঠবেনা। তাই নিজের দিকে আঙুল তুলতে হবে। ভুলবশত নজর গেলেও বা অনিচ্ছাকৃত ভাবে সামনে পরে গেলেও নিজেকে সংযত করে চোখ তুলে নিতে হবে, এটাই একবার চোখ পরার বিধান। তখন চোখ অবনত করতে হবে, দৃষ্টিকে স্থানান্তর করতে হবে। কারন এটাই আল্লাহর আদেশ। বিনা তর্কে দ্বীনমেনে নেওয়াই মুমিন বান্দার উত্তম পরিচয়।

ও ভাই, কোন নারীর পাপের বোঝা আপনি বা আমি বইবো কিঅবশ্যই না, আমাদের নিজের কর্মের ফল নিজেদের ভোগ করতে হবে। বিচারের মাঠে কেউ সাথী হবেনা, আপনি বলতে পারবেন না যে মেয়ে খোলা মেলা ছিলো তাই আমি তাকিয়েছি কেননা সর্বাবস্থায় আপনাকে দৃষ্টি সংযত করতে হবে, এটা আল্লাহর আদেশ, ফরজ বিধান।

প্রিয় ভাই.. আমাদের এই পরিক্ষায় পাশ করলে হুর ঈন আইন দিবেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা। তাদের বর্ননা কুরআনে সুন্দর করে দেওয়া আছে বিশেষ করে সূরা আর রহমান দেখুন। আমি লিখছিনা কারন আমি চাই আপনি নিজেই আল্লাহর তরফ হতে বরাদ্দকৃত রমনীর বিবরন পড়ে নিবেন।

আহা কতইনা সুন্দর হবে ভাবলেই হারিয়ে যাই অজানা ভাবনায় হুর নিয়ে ভাবুন নিজেকে সংযত করুন প্রিয় ভাই।

প্রিয় ভাইরা এই নন মাহরাম ও বেগানা নারী আপনার আমার জন্যে পরিক্ষার না জানা প্রশ্নের মতো, যদি এড়িয়ে যেতে পারি তবেই আমরা উওর প্রদানে সফল, ইন শা আল্লাহ।

ভাই, আমি (কলেজ পড়ুয়া) ছেলে আমিও জানি নজরের হেফাজতের কষ্টের পরিমান হাতে আগুন নিয়ে চলার চেয়ে ভয়ানক। বরং, হাতে নিয়ে বসে থাকাও ভালো বোনেরাও শুনুন, বুঝুন।

আর প্রিয় বোনদের বুঝানো দিনকে দিন কষ্ট হয়ে যাচ্ছে, আমাদের সাহায্য করুন আপনার পর্দার করার মাধ্যমে। আমাদের দৃষ্টিকে সংযত করতে সাহায্য করুন, প্লিজ। আপনাদের সাইকোলজি আর আমাদের সাইকোলজি এক না। আমাদের আপনাদের প্রতি দুর্বল করেই তৈরি করা হয়েছে।
আর প্রিয় ভাইরা..

আমরা যদি না তাকাই ,পাত্তা না দেই তবেই হয়তোবা তারাও নিজেদের আবৃত করে নিবেন ইনশাআল্লাহ| কেননা বিপরীত লিঙ্গের ভালোলাগার উপর ভরসা করেই তারা সাজুগুজু করে (ভিন্ন হতেও পারে)। বেগানা মানে পর্দা করেনা এমন নারীদের আমরা এড়িয়ে যাব, দাতে দাত কামড়িয়ে চলব সেই হুরদের জন্য, আগুনের স্পর্শ থেকে বাঁচাতো লাগবে তাইনা তো ভাই এখানে নফসের সাথে যুদ্ধ করতে থাকাই লাগবে। আর ভাই বড় কথা হচ্ছে আমাদের ভাবতে হবে আল্লাহর শাস্তির কথা, জাহান্নামের কথা আর দুনিয়াবি কষ্ট ও ঝামেলার কথা।

ভাবুন আপনি যেভাবে একটা বেগানা নারীর দিকে তাকাচ্ছেন একই ভাবে যদি অন্য একটা ছেলে আমাদের মা বা বোনের দিকে তাকায় তবে সহ্য করতে পারবেন কি এইসব মেনে নেওয়া অসম্ভব তাইতো তাহলে ভাই আপনি আমি কেন অন্যের মা বা বোনের দিকে নজর দিবে আমাদের নিজেকে সংযত করতে হবে।নজরেরে হেফাজত করতে হবে|

কোন নারী কি পরল বা কি করলো তা দেখার বা ভাবার প্রয়োজন নাই। ভাই নিজেকে নিয়ন্ত্রন করাও আমাদের জন্যে পরিক্ষা, এটাই সিস্টেম। তাই আমরা ছেলেরাও পর্দা অবলম্বন করব আর ভাই মেয়েদের শালীনতা নিয়ে আমাদের অতিরিক্ত মাথা না ঘামালেও চলবে। তাদের জবাব তারা দিবে (তবে তাদেরও সতর্ক করতে হবে, পর্দার সহিত)। ছেলে মেয়ে রেশারেশি বা তর্ক না করে আমরা আমাদের শরঈ পর্দায় মনোযোগী হই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা প্রথমে আমাকে ও সকল ভাইদের কর্মের মাধ্যমে তাকওয়া অবলম্বন করার তাওফিক দান করুক, আমিন।

পঠিত : ৬৪৬ বার

মন্তব্য: ০