Alapon

অনলাইনে নারীবাদী এক্টিভিস্ট আর অফলাইনে ধর্ষকের সহযোগী!



মারজিয়া প্রভা। শাহবাগী এক্টিভিস্ট ছাড়াও তার সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো সে বাংলাদেশের শীর্ষ নারীবাদীদের একজন। নারীবাদীদের সর্ববৃহৎ ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ওইমেন চ্যাপ্টার এর একজন নিয়মিত লেখিকা। এছাড়াও লিখেন দেশের শীর্ষ অনলাইন পোর্টাল গুলোতে। দেশের বিভিন্ন জায়গায় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় গুলোতে জরুরি প্যাড কর্নার চালু করার অন্যতম উদ্যোক্তা সে। পর্যায়ক্রমে ৬৪ জেলায় এ কর্নার চালু করতে চায় সে। যে উদ্যেগের অন্যতম লক্ষ বাংলাদেশে মাসিক বা মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার নিয়ে যে ‘ট্যাবু’ বা গোপনীয়তা আছে, তা ভাঙ্গা। এছাড়াও 'ধর্ষণ' ও 'পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা' নিয়ে নিয়মিত তাকে অনলাইনে বিভিন্ন তীর্যক সমালোচনা করতে দেখা যায়। এইবার জানা যাক সম্প্রতি তার একটি ধর্ষণের ঘটনায় সহযোগিতার আদ্যোপান্ত।

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় মাহমুদ এইচ খান নামের এক বাম এক্টিভিস্টের 'একটি ধর্ষণ: একজন নারীবাদী ও একজন বাম নেতার ধর্ষণের সহযোগিতা' শিরোনামের একটি পোস্ট ভাইরাল হয়। যেখানটায় সে বর্ণনা করেছে কিভাবে একটি মেয়েকে পার্টিতে ডেকে এনে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ধর্ষণ করা হয়, ধর্ষণের আলামত বুঝতে পেরে পার্টিতে অংশগ্রহণকারী একজন তার নারীবাদী বন্ধু ও প্রগতিশীল সাবেক ছাত্র নেতাকে সতর্ক করে এই ঘটনা আটকানোর অনুরোধ করে কিন্তু তারা একপাক্ষিকভাবে ধর্ষক ছাত্রনেতা কবিকে সহায়তা করে যায়। ঘটনার পর মেয়েটি অভিযোগ করলে বিষয়টি নিয়ে তারা বিভিন্ন মাধ্যমে এটা ধর্ষণ নয় বলে বক্তব্য প্রদান করেন এবং ভিক্টিম ব্লেমিং শুরু করেন। ধর্ষণের আলামত নষ্ট হওয়ার পর মেয়েটিকে মামলা করতে বলে তারা “বিচার পাবে না” বিষয়টি মিন করে তারা ধর্ষকের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন!

মাহমুদ এইচ খান ঐদিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছেন,

“গত ৩ আগস্ট বন্ধুরা মিলে ঈদ পূর্ণমিলনী পার্টির আয়োজন করি। একান্ত বন্ধুদের এই আয়োজনে যুক্ত হন আমার বন্ধু নারী অধিকারকর্মী মারজিয়া প্রভা, তার প্রেমিক ছাত্র ফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলার সাবেক নেতা বর্তমান শ্রমিক ফ্রন্টের সংগঠক রায়হান আনসারি। তাদের সাথে পার্টিতে নিয়ে আসেন ছাত্র ফ্রন্টের মৌলভীবাজার জেলা কমিটির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক কবি সজিব তুষারকে। তুষারের সাথে সে পার্টিতে যুক্ত হয় তারই বাল্য বন্ধু একটি মেয়ে। যাকে এর আগে আমি চিনতাম না।
পার্টিতে ব্যাপক খাওয়াদাওয়া হয়, আড্ডা হয়, এক পর্যায়ে আমরা উইড টানি। নতুন যে মেয়েটি পার্টিতে আসে সে এর আগে এসব তেমন পান করেনি। তুষার তাকে ইচ্ছাকৃত-ভাবে ব্যাপক উইড খাওয়ায় এবং মেয়েটি একটা পর্যায়ে তার শারীরিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। তুষার তখন মেয়েটির সাথে খুনসুটি করছিল। মেয়েটি তাতে বিরক্ত হয়ে তুষারকে সতর্ক করছিল। তুষার বিভিন্ন অজুহাতে মেয়েটির গায়ে পড়ছিল, গায়ে হাত দিচ্ছিল। বিষয়টি আমার নজরে আসার পর আমি তুষারকে সতর্ক করি এবং বলি, “তোমার কেমন বন্ধু জানি না, তবে সে বিরক্ত হচ্ছে তোমার এসব কাজে। তুমি নিজেকে কন্ট্রোল করো।” এর কিছুক্ষণের মাথায় তুষার মেয়েটিকে ধরে ধরে বাসার ছাদে নিয়ে যেতে চায়। মেয়েটি যাওয়ার সময় আমাকে বলে ভাইয়া আপনি যাবেন না? , আমি বলছি তোমরা যাও পরে আসব। এবার মেয়েটি আমাকে আবারও ডাকতে শুরু করে তাদের সাথে যাওয়ার জন্য। আমি এবার নিশ্চিত হয়ে যাই যে মেয়েটি তুষারের সাথে ইন-সিকিউরিটি ফিল করছে। আমি তাদের সাথে যাই ছাদে।
সেখানে একইভাবে মেয়েটিকে উত্যক্ত করছিল তুষার। আমি এটা টের পেয়ে মেয়েটির এটেনশন আমার দিকে নিয়ে এসে তাকে চাঁদ দেখাতে ব্যস্ত করে দেই। এরই মধ্যে রায়হান আনসারি ছাদে গিয়ে আমাকে বলে তাদের স্পেস দিতে অর্থাৎ ছাদ থেকে আমাকে চলে আসতে বলতেছে। আমি তখন রায়হানকে আমার সন্দেহের কথা প্রকাশ করে বলি- মেয়েটিকে তুষার বিরক্ত করছে. সেক্সুয়ালি হেরাজ করছে। এবং এক পর্যায়ে মেয়েটিকে বুঝতে না দিয়ে রায়হানকে ইংরেজিতে আমি প্রশ্ন করি "প্রভা এবং তুমি কেন তুষারকে ফেভার করছ? এটা তো ঠিক হচ্ছে না। আমার কাছে বিষয়টি স্বাভাবিক মনে হচ্ছে না। " প্রভা নাকি রায়হানকে ছাদে পাঠিয়েছিল আমাকে সরিয়ে এনে তুষারকে এবং ওই মেয়েকে স্পেস দিতে (পরবর্তীতে রায়হান আমাকে বলেছে)। যাই হোক এক পর্যায়ে আমি তাদের নিয়ে রুমে চলে আসি।

রুমে আসার পর আমি একটু খাবার খেতে যাই। এমন সময় মেয়েটি ঘুমানোর কথা জানালে তুষার ওই মেয়েকে নিয়ে রুমে চলে যায় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়। (আমি যা পরে টের পাই যে তুষার মেয়েটিকে নিয়ে রুমে গেছে)। তখন দরজার পাশ থেকে শুনি মেয়েটি বলছে ডোন্ট, ডোন্ট ডু দিস, না না না। আমি সাথে সাথে রায়হানকে বিষয়টি অবগত করি এবং বলি যে মেয়েটির সাথে খারাপ কিছু হচ্ছে। তখন রায়হান আমাকে বুঝাতে চায় তাদের সেক্সুয়াল রিলেশন আছে, দু’জনের সে আন্ডারস্ট্যান্ডিং রয়েছে। সমস্যা নেই। আমি বললাম দু’জনের আন্ডারস্ট্যান্ডিং থাকলে মেয়েটি না না করছে কেন? আর আগে থেকেই মেয়েটা বিরক্ত হচ্ছে। রায়হান আমার কথায় পাত্তা দেয়নি।

তখন আমি প্রভাবে বিষয়টি ব্যাখ্যা করি। প্রভা আমাকে বলে এই পার্টিতে সবাই কাপল আর আমি সিঙ্গেল বলে আমার জেলাস হচ্ছে। এটা নিয়ে সে আমাকে বিদ্রূপ করে। আমি তার থেকে এমন কথা আশা করিনি, কিন্তু একজন নারীবাদী বন্ধুর থেকে একজন নারীর সমস্যাকে ব্যাখ্যা করে আমি এমন উত্তর পেয়েছি তখন আমি হতাশ হয়ে যাই। এর পর একটা পর্যায়ে ঘরে দরজা খুলে তুষার বেরিয়ে আসে। মেয়েটি তখন বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলে তুষার আবার দরজা বন্ধ করে দেয়। আমাকে রায়হান আর প্রভা এই বিষয় থেকে সরিয়ে নিয়ে আমাকে ব্লেম করে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেয়। এবং দরজা খুলে তাদের ঘর থেকে বের করে আনতে গেলে তারা আমাকে বাধা দেয়। নেশার ঘুরে আমিও কনফিউজড হয়ে যাই। পরে সকালে আমার সন্দেহ থেকে যায়, মেয়েটির সামনে আমি ঘটনাটি জানতে চাই। তখন সে রিয়েক্ট করে ওঠে এবং জিজ্ঞেস করে তার সাথে রাতে কী হয়েছে! তখনও মেয়েটি মাতাল। তাৎক্ষনিক সে তুষারকে কিল ঘুষি মারে এবং আমার সাথে এমন করলি কেন জানতে চায়। তুষার সেটাকে ব্যালেন্স করার জন্য বারবার বলতেছে আমি কি একা কিছু করেছি? মেয়েটিকে তখন বললাম যে ওরা তো আমাকে বলল তুষারের সাথে তোমার সেরকম সম্পর্ক আছে। তখন সে রিপ্লে করে না, সে আমার শুধু বন্ধু ছিল। রায়হান ভাই তো সব জানেন যে সে আমার বাল্য বন্ধু।

তখন আমি রায়হান এবং প্রভার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। " আমাদের চোখের সামনে এমন একটি ঘটনা ঘটে গেল। আমি তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত না জেনেও তোমাদের বারবার বললাম যে এটা মেয়েটির সম্মতিতে হচ্ছে না। এখানে ধর্ষণ হচ্ছে তোমরা আমাকে উল্টো ব্লেইম করে তুষারকে এই কাজ করতে সহযোগিতা করেছ। আমাকে বাধা দিতে দাওনি।" এক পর্যায়ে তারা সবাই চলে যায়। (মেয়েটি তখনও আউট অব কনট্রোল ছিল) আমি ওই দিন বিকেলেই “মদ্যপ অবস্থায় যৌনতার সুযোগ নেয়া” শিরোনামে ফেসবুকে একটি লেখা প্রকাশ করি। সেখানে আমি যৌনতার এমন ফাঁদকে সমালোচনা করি এবং এমন ঘটনাকে সরাসরি ধর্ষণ হিসেবে ব্যাখ্যা দেই।

এর পর বিকেলে তুষার আমার সাথে দেখা করে এবং এই ঘটনার জন্য সে তার গিল্টি প্রকাশ করে। পরের দিন রায়হানকে নিয়ে আমি তুষারের বাসায় যাই এবং বিষয়টি আলোচনা করি। সেখানে তুষার জানায় এই ঘটনার পুরো সময়ে সে স্বাভাবিক সেন্সে ছিল। তবে সে তার এটা করা অন্যায় হয়েছে স্বীকার করে। (যার একাধিক প্রমাণ আমার কাছে আছে।) আমি সেদিন রায়হান ভাইকে বলি যে আপনি মেয়েটিকে নিয়ে এবং তুষারকে নিয়ে বসেন এবং জিজ্ঞেস করেন মেয়েটি কী শাস্তি চায় এই ঘটনার। এরপর মেয়েটির সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে আমি ব্যর্থ হই। আমার বাসা থেকে সে বাড়ি ফেরার পর এটা ধর্ষণ যখন সে বুঝতে পারে তখন মেয়েটি সবাইকে ফেসবুকে ব্লক করে দেয়। সে এই ঘটনায় ট্রমায় চলে যায় এবং ৪/৫ দিন পর সে স্বাভাবিক হয়।

এমতাবস্থায় সে অপেক্ষায় ছিল যেহেতু রায়হান ও প্রভার মত মানুষের সামনে ঘটনা ঘটেছে তারা এর কী বিচার করে সে দেখার অপেক্ষায় ছিল। আইনগত ব্যবস্থায় সে শুরুতে যেতে চায়নি কারণ রক্ষণশীল পরিবেশে সে একটু ডিফ্রেন্ট লাইফস্টাইল লিড করে সেখানে এরকম বিষয় সামনে আনল এই কমিউনিটি নিয়ে মানুষ প্রশ্ন তুলবে। তাকে ব্লেইম করবে। এবং তার পরিবারের সমস্যা হবে। সে এটার একটা সামাজিক সিদ্ধান্ত, অর্থাৎ আমরা এই ধর্ষকের ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেই সেটা দেখার অপেক্ষায় ছিল।

কয়েকদিন আগে তারা সবাই মিলে একটি ট্যুর এরেঞ্জ করে। যেখানে সজিব তুষারকে হোস্ট করা হয়। একই সাথে রায়হান ও প্রভা এবং আরও আমার পরিচিত কয়েকজন। বুঝলাম তারা ধর্ষকের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি এবং তাকে সামাজিকভাবে পেট্রোনাইজ করা হচ্ছে। ওইদিন বিকেলে রায়হান আমাকে ফোন করে ট্যুরে যেতে বলে। আমি সাথে সাথে রিপ্লে করি কোনো রেপিস্টের সাথে আমি ট্যুরে যাব না। একই সাথে আমি প্রশ্ন করি এ ঘটনায় তোমরা এখনও তুষারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নাওনি কেন? তখনই রায়হান তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে এবং জানায় যে "এটা ধর্ষণ আমি নিশ্চিত কিভাবে। এক পক্ষের বক্তব্য শুনে আমি কাউকে ব্লেইম করতে পারি না" হেনতেন বলে ভিক্টিম ব্লেমিং শুরু করে। একটা পর্যায়ে রায়হান বলে "বিচার চাইলে মেয়েটিকে আমার কাছে আসতে হবে, তাকে বিচার চাইতে হবে।" তখন আমি রায়হানকে বলি " একটা ধর্ষণের ঘটনায় তোমরা সহযোগী এবং সাক্ষী। মেয়েটি তোমাদের সামনে সকালেই অভিযোগ করেছে, তুষার এক পর্যায়ে শিকারও করেছে। তারপরও তোমরা কেন চাও যে মেয়েটি এসে বিচার চাইবে? তোমার দায়িত্ব কী এ ব্যাপারে? গ্রাম্য মুড়লদের মতো কথা বলার কোনো মানে বুঝলাম না।" এসব কথার পর তখনই আমি মেয়েটির সাথে যোগাযোগ করে বিষয়টি অবগত করি এবং সে কী বিচার চায় জানতে চাই। তার বক্তব্য তখন একই, "আমি সামাজিক ও পারিবারিক বিষয় চিন্তা করে তার বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ায় যেতে পারিনি। কিন্তু রায়হান ও প্রভার সামনে এই ঘটনা ঘটার পরও তারা রেপিস্টকে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আবার বলছে আমি বিচার চাইব! আমার বিচার চাইতে হবে কেন, তাদের দায়িত্ব কী সেখানে? আমি ছেড়ে দিলে তারাও একটা ধর্ষককে এভাবে ছেড়ে দিতে চাইছে কেন?" কথা শেষ হওয়ার পর মেয়েটি ফেসবুকে ৩ লাইনের একটা স্ট্যাটাস দেয়। এর পর রায়হান আমার সাথে দেখা করে মেয়েটিকে নিয়ে বসে। তুষার এসে কনফেস করে এবং মেয়েটি সবার সামনে তুষারকে থাপ্পড় দেয়। (রায়হানরা বক্তব্য বদলাতে পারে এবং এই ঘটনা ভবিষ্যতে আলোচ্য হতে পারে ভেবে এক পর্যায়ে আমি তার ভিডিও ও অডিও ধারণ করি)। এই সময়ে মেয়েটি রায়হানকে বলে তুষারকে সামাজিকভাবে বয়কট করতে। তুষার নিজের দোষ স্বীকার করে পানিশমেন্ট মেনে নেয়ার পরও আমাদের ঘনিষ্ঠজন যে ২/৩ জন অবগত হয়েছিলেন বিষয়টিতে তাদের কাছে রায়হান বিষয়টি ধর্ষণ নয় বলে প্রচার করতে শুরু করে। এবং আমি এই ঘটনায় বিচার চাওয়ায় আমাকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ক করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়।

একটি ধর্ষণের ঘটনায় তারা আলোচনায় আসলে আমাদের সামনে এটা ধর্ষণ স্বীকার করলেও অন্যদের ক্ষেত্রে এটাকে যৌন সম্পর্ক হিসেবে উল্লেখ করে ধর্ষণ নয় বলে বক্তব্য দিতে থাকে। যার একাধিক কল রেকর্ড আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। এই ঘটনায় আমি প্রভার সাথে আলোচনা করতে গেলে এবং প্রভা কেন তখনকার পরিস্থিতিতে ধর্ষণে সহযোগিতা করেছে জানতে চাইলে সে আমাকে জানায় রায়হান তাকে ভুল বুঝিয়েছে। যার প্রমাণও আমার কাছে আছে। একজন নারীবাদী হিসেবে এই ধর্ষণের ঘটনায় প্রভার ভূমিকা নিয়ে আমি সার্কেলের মধ্যে প্রশ্ন তোলার পর এতদিন পর এসে সে বলছে আমাকে ধর্ষণের সহযোগী উল্লেখ করে মামলা করা হোক। ধর্ষণের আলামত নষ্ট করে, মেয়েটি সামাজিক কারণে মামলা করবে না জেনে এই কথা বলার মানে আসলে ধর্ষণের বিচার চাওয়া বুঝায়? শুরুতে প্রভা এটাকে ধর্ষণ স্বীকার করলেও পরে ভিক্টিমকে সে ব্লেইম করে এবং আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমন করে। যা আমি গ্রুপ করে অনেককে দেখিয়েছি।

মদ্যপ অবস্থায় যৌনতা নিয়ে প্রভার দৃষ্টিভঙ্গি এমন যে যা হওয়ার হয়ে গেছে বা এমন হতেই পারে। এটা বুঝার পর আমি প্রভাকে বলেছিলাম তোমার সাথে এমন ঘটেছে বহুবার। তোমারে দু’জন মিলে রেপ করেছে বলেও তুমি আমাদের বলেছ। তুমি নিশ্চয়ই জানো একটা মেয়ের জন্য এটা কতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি। তার পরও সেদিন রাতে তুমি কেনো এরকম ঘটনা ঘটতে দিলে এবং আমাকে ঘটনা থেকে সরিয়ে নিতে ব্লেইম করলে। তার সঠিক উত্তর আমি পাইনি।

একটি ধর্ষণের ঘটনার পর প্রভা কিভাবে সেই ধর্ষকের সাথে প্রোগ্রামের হোস্ট হয়। রায়হান তাকে সামাজিক ভাবে বয়কট না করে ট্যুরে যায়। সে পার্টির একজন সিনিয়র নেতা হয়ে বিষয়টি পার্টিকে না জানিয়ে সাথে নিয়ে ঘুরে? এই ঘটনা আমাদের সার্কেলে জানানোর কারণে সে ব্যক্তিগত ইগোতে নিয়ে আমাকে ব্লেইম করে? তার ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সে একটি ধর্ষণকে আড়াল করতে উল্টো বক্তব্য দিতে থাকে? (তার পূর্ববর্তী বক্তব্য ও বর্তমান বক্তব্যের প্রমাণ আছে আমার কাছে) একজন ধর্ষককে আমি বিভিন্ন কারণে প্রকাশ্যে আনতে না পারলে অন্তত তাকে আমার কমিউনিটি থেকে বয়কট করতে চেয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয় কিভাবে? কেন সে এটাকে আড়াল করার জন্য বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছে? আমার ব্যক্তিস্বার্থে সেখানে কী সে কেন স্পষ্ট করতে পারছে না? শুধু মাত্র তুষার রায়হানের পার্টির মানুষ হওয়ার কারণে সে চুপ করে আছে। একই সাথে বিষয়টি ঢাকার চেষ্টা করছে। মারজিয়া প্রভা তার নারীবাদ ও আদর্শকে ভুলে প্রেমিককে সমর্থন করা এবং তার আসল চরিত্রকে ঢাকার জন্য কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।



ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সারাজীবন স্লোগান তোলা বামপন্থি নেতা আজকে নিজের পার্টির ধর্ষকের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে না দাঁড়িয়ে তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন কেন? তারাই তো ধর্ষণের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়াত। মারজিয়া প্রভা "নারীর শরীর অধিকার একান্ত তার" এসব বাণী কম আউড়েছেন? তিনি কেন সামাজিকভাবে তুষারের বিরুদ্ধে গেলেন না? বরং আমি তুষারের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কারণে তার বয়ফ্রেন্ড আমাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেয় আর প্রভা এসে সেখানে লাভ রিয়েক্ট দেয়। সজিব তুষার রায়হানের পার্টির কমরেড আর প্রভার সামাজিক কাজের সহযোগী হওয়ার কারণে তারা বিষয়টি নিয়ে চুপ আছেন?”

মাহমুদ এইচ খান সর্বশেষ আরো হুমকি দিয়ে রেখেছে, এই ঘটনার পুরো সাক্ষ্যপ্রমাণ নিয়ে আমি কথা বলছি প্রয়োজনে প্রমাণ নিয়ে আসব। এইরকম ব্যক্তিবাদী চরিত্রের মানুষ ধর্ষক তুষার ও তার পৃষ্ঠপোষককে আমি বয়কট করছি। একই সাথে মৌলভীবাজারের সামাজিক সকল কর্মকাণ্ড থেকে আমি প্রভাকে বয়কট ঘোষণা করছি। সে এরপরও এসব কাজে এসে নারীবাদ ফলাতে গেলে তার অর্থনৈতিক উৎস ও অর্থসংস্থানের দুর্নীতি সামনে আনব। আমরা মৌলভীবাজারের যারা বিভিন্ন সময়ে প্রভাকে সহযোগিতা করেছি তাকে ভাল মানুষ মনে করেছি, আমাদের কাছে সে একজন ভন্ড নারীবাদী।আমরা সবাই তাকে বয়কট করার ব্যাপারে একমত।



যদিও মারজিয়া প্রভা একটা পোস্ট দিয়ে নিজের দায়ভার অস্বীকারপূর্বক পুরো ঘটনাকেই বিভ্রান্তিকর ও আরোপিত বলে মন্তব্য করেছে। কিন্তু ঘটনা পরবর্তীতে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপে মারজিয়া প্রভার বক্তব্যে স্পষ্ট হয় এটা পূর্বপরিকল্পিত ধর্ষণ এবং সে ইচ্ছাকৃতই এই ধর্ষনের ব্যবস্থা করে রেখেছিল পূর্ব হতে।




এদিকে ধর্ষক তার আইডি থেকে পোস্ট দিয়ে পুরো বিষয়টিকেই মিউচুয়াল বললেও ভিক্টিমের বক্তব্যে উঠে এসেছে পুরো ভিন্ন চিত্র। এবং সে বলছে এতদিন সামাজিকতার ভয়ে চুপ করে থাকলেও সে এই ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নামবে শীঘ্রই।



বাম আন্দোলন আর নারীবাদের নামে এই ভণ্ডামির শেষ কোথায়?

পঠিত : ৩২৫০ বার

মন্তব্য: ০