Alapon

জাহিলিয়াতের থাবায় বিপর্যস্থ বিয়ের অনুষ্ঠানগুলো...


বিয়ের ক্ষেত্রে সামাজিক অপসংস্কৃতিগুলোর দুই গালে কষে দুইটা চড় না মানলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম এর ভুক্তভোগী হবে। একটা পঙ্গু প্রজন্ম গড়ে উঠবে।

সাহাবা (রাঃ) রা যখন যুদ্ধে শহীদ হতেন তখন তাদের বিধবা স্ত্রীদের অন্য সাহাবা(রাঃ) রা বিবাহ করে নিতেন। কোন মেয়েকে পছন্দ হলে তারা সাথে সাথেই তার বাবাকে প্রস্তাব দিতেন। একটা খাসি জবাই করে অথবা যার যা আছে তা একসাথে জমা করেই ওয়ালিমা হয়ে যেত। সর্বোচ্চ পর্যায়ের দ্বীন দেখতেন আর সব কিছু ছাড় দিতেন। মোহর ছিলো সাধ্যের মধ্যে। স্ত্রীরা সংসারের দেখাশোনা করতেন, সতীত্ব হেফাজত করতেন আর ইলম অর্জনে লিপ্ত থাকতেন।সংসার চালানোর দায়িত্ব ছিলো ছেলেদের উপর। আর কখনো একান্তই বনিবনা না হলে তালাক বা খুলা দিতেন। দুজনই আবার অন্যত্র বিয়ে করতেন। ইটস দ্যাট সিম্পল।

আর এখন যা হয়,

দ্বীনদার পাত্রের বাবা মা শুধুমাত্র সামাজিক স্ট্যাটাসের জন্য রিকোয়ারমেন্ট দেয় পাত্রীকে ডাক্তার/ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে যেন তার চাচা-মামাদের অন্তত বলতে পারেন যে "আমার বউমা একজন ডাক্তার/পিএইচডি হোল্ডার" এখানে দ্বীন কোন বিবেচ্য বিষয় না। ছেলের আকুতি নিমিষেই তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন উনারা। যেন তাদের পূত্রবধু সমাজকে প্রদর্শনের জন্য একটা শোপিস আর তাদের ছেলে বোবা এবং অন্ধ।

দ্বীনদার পাত্রীর বাবা মা বলেন "বিয়ের পরে ওকে নিজের মতো গড়ে নিস। বউয়ের আচলে সব ছেলে নরম হয়ে যায়।" আরে আরে! এগুলো কোন ধরণের তামাশা? রাসূল (সাঃ) এর যুগ, সাহাবা (রাঃ) বা তাবেয়ী (রহঃ) এর যুগে বিন্দুমাত্র কোন উদাহরণ আছে এসবের? তাহলে এই ফালতু কথাটার দলিল কি? যুক্তিটাই বা কি? বরং দেখা যায় বেদ্বীন ছেলের সাথে বিয়ে হলে মেয়ের বোরকা ৬ মাসেই হিজাব হয়ে যায়। কোথায় পানি ছিটিয়ে তাহাজ্জুদের জন্য জাগিয়ে দেয়া বা একসাথে আরবি শিখা? সব ফ্যান্টাসি উবে যায় তখন।

যৌতুকের ক্ষেত্রে আসি,

শিক্ষিত অনেক দ্বীনদার ভাই আছেন এই জায়গায় এসে নূন্যতম প্রটেস্ট করতে পারেন না। একেবারে শিশু হয়ে যান। উনার মত সামনেই মেয়ের পরিবারের চুলচেরা গীবত চলে আর উনি নাকে রুমাল চেপে বসে থাকেন, বাহ! ভাইয়েরা একটু আত্নমর্যাদাবোধ গ্রো করতে শিখুন আল্লাহর ওয়াস্তে। আপনার আহলিয়া যদি কোন জুলুমের স্বীকার হলে তার আর রবের মাঝে কিন্ত কোন পর্দা থাকবে না মাইন্ড ইট।

মোহরের ব্যাপারে,

এই ক্ষেত্রে পাত্রীদের একটা রেডিমেড উত্তর থাকে "পরিবারের চাহিদা, আমার কিছু বলার নেই।" ভাইয়েরা আমার, এই কথা শুনলে বিয়ের কথাবার্তা এখানেই থামিয়ে দিবেন। অন্য জায়গায় দেখবেন আর আল্লাহর কাছে ক্রমাগত দোআ করতে থাকবেন। ১০, ২৫, ২০, ৩০ লাখ টাকার মোহর দিয়ে তারা তাদের রাজকন্যাকে দ্বীনদার বিল গেটসের সাথে বিয়ে দিক৷ আমি আপনি এই ক্ষেত্রে অক্ষম এবং আমাদের চাহিদাও কম। আপনার জন্য আল্লাহ তা'লা এমন কিছু রেখেছেন যে আপনি খুশি হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

সংসারের ক্ষেত্রে,

ভাইদের জন্য,

হিজাব/নিকাব/বোরকা পড়ে কিন্ত স্বামীর আনুগত্য করতে পারবে না, সন্তান প্রতিপালন করতে পারবে না, স্বামীর খেদমত করাকে প্রেস্টিজ ইস্যু ধরে নেয়, স্বামীর ভালো কথাকে নিজের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হিসেবে মনে করে, গায়রে মাহরামদের সাথে উঠাবসা করে নির্দ্বিধায় তাকে তালাক দিয়ে দিন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব। বিয়ে করার আগে শুধু লেবাস দেখেছেন কোন দুঃখে?

বোনদের জন্য,

পায়জামা-পাঞ্জাবী পড়ে, বড় বড় দাঁড়ি, বাহ্যিক বেশভূষা সুন্দর কিন্ত ফরজিয়াতই ঠিক নেই, অফিসের মেয়ে কলিগদের সাথে দহরম-মহরম সম্পর্ক, গোপনে প্রণয়, আপনার ভরণপোষণ দেয় না, ক্ষেত্রবিশেষে শারীরিক নির্যাতন করে, আর সব চেষ্টা ব্যার্থ। দেরি না করে বিবাহ বিচ্ছেদ করে ফেলুন। সমাজ কি বললো না বললো এগুলা মাথাতেই আনবেন না। আত্নীয়স্বজনরা উল্টাপাল্টা কথা বললে মুখের উপর জবাব দিবেন। এই ক্ষেত্রে চুপ করে থাকলে অনেক বেশি ক্ষতি।

দিনশেষে আমরা শুধু ব্যাক্তিগত জীবনে ৫% দ্বীন পালন করে তৃপ্তির ঢেকুর তুলি আর বাকি ৯৫% জাহিলিয়াত যে কুড়ে কুড়ে আমাদের সমাজকে শেষ করে দিচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখি না।

পরিবর্তন আসা সম্ভব, তবে নিজেদের দিয়ে সবার আগে শুরু করতে হবে ইনশাআল্লাহ।

Collected

পঠিত : ৯১৪ বার

মন্তব্য: ০