Alapon

|| টাইম ম্যানেজমেন্ট পর্ব-(১) ||




প্রডাক্টিভ মর্নিং
-------------------◾

সকালে ঘুম থেকে উঠে সাদেকীন সাহেব আড়মোড়া ভাংগে প্রায় ১ ঘন্টা ধরে। এই সময় কিছুক্ষন ফেসবুকিং, ইউটিউবে গান শোনা আর অফিসের বসকে মনে মনে গালাগালি করেই কাটে।

এরপর ঘড়ির কাটায় বেজে যায় ৯ টায়। অফিস হলো ১০ টায়। খুব বিরক্তি নিয়ে নাকে মুখে গোসল করে রেডি হয়ে অফিস এর জন্য বের হয়। রাস্তা দিয়ে চারপাশের মানুষ দেখতে দেখতে অফিস যায়।

অফিস গিয়ে মনে পড়ে প্রয়োজনীয় অনেকগুলা জিনিস বাসায় ফেলে চলে এসেছে ৷ ড্রাইভারকে দিয়ে সেগুলা বাসা থেকে আনাতে গিয়ে আবার দেরি হয় মিটিং এর। একটা জগাখিচুড়িময় সকাল।

বস রেগে গেলো। মিটিং বরবাদ হলো। চাকরি চলে গেলো। খিটমিট করছে মেজাজ। বউ দিলো ফোন। করে ফেলল রাগারাগি। বউ মন খারাপ করে চলে গেলো বাপের বাড়ি।
.

কিএক্টাওবস্তা
.

একটা প্রডাক্টিভ মর্নিং এর গুরুত্ব অনেক। উপরের ঘটনাটা কাল্পনিক। কিন্তু প্রায় কাছাকাছি ঘটনাগুলো নিত্যনৈমিত্তিক। স্টুডেন্ট অবস্থায় থাকলেতো আরো খিচুড়ি পেকে যায়। টাইম ম্যানেজমেন্ট করে চললে এরকম হত না৷

.

একটা প্রডাক্টিভ মর্নিং এর অভাব আপনার জীবনে যে প্রভাব ফেলবে তা একদিনে হবে না। ঘটনার আকষ্মিকতা বুঝতে এবং কু প্রভাব একদিন হুট করেই অনুভব করতে থাকবেন আপনি। সময়ের ব্যবহার ও অভ্যাস এর জন্য দায়ী।

.

তাহাজ্জুদের সময় থেকে সকাল ১০ টা এই সময়টার অভ্যাস আপনার জীবনকে পাল্টে দিতে পারে। আপনি রেগুলার তাহাজ্জুদ থেকে সকাল ১০ টা এই সময়টাকে প্রডাক্টিভ ওয়েতে সাজান এবং সেভাবে চলুন। টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখুন।

.

একটা সার্টেইন পিরিয়ড পরে আপনি উপলব্ধি করবেন আপনার জীবনে চেইঞ্জ এসেছে। সাদেকীন সাহেব চাকরি হারিয়েছেন এবং সম্পর্ক নষ্ট করে ফেলেছেন একটা প্রডাক্টিভ মর্নিং এর দীর্ঘ দিনের অভাবে।

.

তাই সে ঠিক করলো সে তার সকালের অভ্যাসকে নতুন ভাবে সাজাবেন। সে একটা রুটিন বানালোঃ

তাহাজ্জুদের জন্য ৩০ মিনিট।
এরপর ফজরের নামায ও জিকিরের জন্য ৩০ মিনিট। কুরআন তিলাওয়াত ৩০ মিনিট।
হাটাহাটি ও ব্যয়াম ৩০ মিনিট।
গোসল, নাস্তা, পত্রিকা ৬০ মিনিট।
স্কীল ডেভেলপমেন্ট ৬০ মিনিট (৩০ দিনে একটা)

এভাবে করে সাদেকীন সাহেব তার প্রতিদিনের সকালটা গুছিয়ে নিলো এক মাসের জন্য।

.

রুটিন লিখা শেষে সাদেকীন সাহেব খেয়াল করলো তার এখন ভাল্লাগে না রোগ হয়েছে। অলসতা তাকে জেঁকে বসেছে। দীর্ঘদিন আরাম প্রিয় অলসতাই তাকে এই রোগে আক্রান্ত করেছে।

.

রুটিন ফলো করতে তার ভাল্লাগছে না। তাই সে বুঝতে পারলো তার অলসতা আগে দূর করতে হবে একটা প্রডাক্টিভ সকাল পেতে হলে। অলসতা কাটানোর জন্য সে প্রথমে নিজে দৃঢ় সংকল্প করলো।

.

এরপর সে হাদিসে বর্নিত একটা দুয়া শিখে নিলো অলসতা দূর করার জন্যঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ ، وَالعَجْزِ وَالكَسَلِ ، وَالبُخْلِ وَالجُبْنِ ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ

হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে। (বুখারী ২৮৯৩)

এছাড়াও পাশাপাশি সে জিকির করতে থাকলো যখুনি অলসতা অনুভব হয় তার। সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবার ৩৪ বার এই তাসবীহ বেশি বেশি পাঠ করতে লাগলেন। (বুখারী ২৯৪৫)

.

এভাবেই সাদেকীন সাহেব একটা প্রডাক্টিভ মর্নিং এর অভ্যাস করে ফেললেন টাইম ম্যানেজমেন্ট ও অভ্যাসকে গুরুত্ব দিয়ে। এই অভ্যাস তার জীবনে কি কি চেঞ্জ আনলো সেগুলো আমরা পরের পর্বে জানবো। ইন শা আল্লাহ।

.

|| টপিকঃ লাইফ স্টাইল পর্ব-(১) ||
লেখাঃ সিফাত সাদেকীন চৌধুরী (রৌদ্র)
--------------------------------------------◾

পঠিত : ১২৩১ বার

মন্তব্য: ০