Alapon

|| কুরআন না পুড়লেও, আমাদের কপাল পুড়েছে ||

বুঝি আপনাদের ফিলিংস। অন্য ধর্মের লোকদের কাছে নিজেদের ধর্মকে যৌক্তিক, অলৌকিক বুঝাতেই এমন কথা বলেন। এমন কথা বলতে গিয়ে নিজের জিভ পুড়িয়ে ফেলার ব্যবস্থা করতেছেন।

.

অনেকে মুজিযা পছন্দ করেন। গোশের টুকরায় আল্লাহু নাম খুজে বেড়ান, আলুর ভেতর মুহাম্মাদ নাম খুজে পান। বোমা বিস্ফোরণ, বন্যায় সব কিছু ধ্বংশ হয়ে গেছে কিন্তু কুরআনের আয়াতের কিছু হয় নি। এসব বলে বেড়ান।
.

কপাল পুড়েছে আপনার

.

এই বিষয়গুলো হতেও পারে মুজিযা। আল্লাহ তায়ালার রহমত। আবার নাও হতে পারে, তাই না? ধরেন কোন জায়গায় মানুষ পুড়ে নাই, কুরআন সহ অন্যান্য কিতাব পুড়ে গেলো তাহলে কি বলবেন? সংশয়ে পড়ে যাবেন।

.

তখন তো ঈমানের পরীক্ষায় পড়ে যাবেন। ভাববেন হায় আল্লাহ এটা কি হলো? তাহলে কি আল্লাহ রাসূল বলে কিছুই নাই? (নাউজুবিল্লাহ)। যারা এভাবে সবকিছুতে মুজিযা খুজেন তারা মুজিযা না পেলে কি করবেন বলেন ত?

.

সূরা রাদ এর আয়াত ৩১ এ যদি আমরা চোখ রাখি তাহলে দেখব যে আল্লাহ তায়ালা বলেন, "যদি কুরআন দ্বারা পর্বতকে গতিশীল করা হতো অথবা পৃথিবীকে বিদীর্ণ করা হতো কিংবা মৃতের সঙ্গে কথা বলা যেত, তবু তারা ঈমান আনত না; কিন্তু সব বিষয়ই আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন।"

.

মক্কার কাফির মুশরিকরা সে সময়ে নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বলতো আমরা ঈমান আনব যদি তুমি মক্কার আশে পাশের পাহাড় সরিয়ে দাও, মৃত বাপ দাদাদের খবর এনে দাও, মুজিযা দেখাও তাহলে।

.

আল্লাহ তায়ালা এরি পরিপ্রেক্ষিতে এই আয়াত নাযিল করেন। প্রিয় ভাইয়েরা আমরা বিভিন্ন জিনিসে শুধুই মুজিযা কেন খুজতে যাই যদি আমরা প্রকৃতই ঈমানদার হয়ে থাকি?

দেখুন আল্লাহ তায়ালা আরো বলছেন,"ঈমানদাররা কি এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়নি যে আল্লাহ ইচ্ছা করলে সবাইকে সৎপথে পরিচালিত করতে পারতেন!"

.

আল্লাহ তায়ালা মুজিযা দেখিয়ে সবাইকেই কেন ঈমানদার বানায়না, কেন কোন মীরাক্কেল হয় না এমনটা ভেবে থাকেন অনেকে। দেখুন আল্লাহ তায়ালা দুনিয়া পরীক্ষার জন্য তৈরি করেছেন৷ এটা বিশ্বাসের পরীক্ষা।

.

কোনো জনপদের মানুষের দাবি মেনে মুজিজা প্রকাশের পরও যদি তারা ঈমান না আনতো, তাহলে তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হতো। কিন্তু আল্লাহ ওয়াদা করেছেন, তিনি উম্মতে মুহাম্মদিকে সমূলে ধ্বংস করবেন না।

.

সুতরাং, কাফির,মুশরিকদের সাথে টক্কর দিতে এরকম বিষয়গুলো সামনে আনতে যাবেন না। আল্লাহ তায়ালা না চাইলে কেউই হিদায়াত পাবে না৷ এমনকি আপনিও ঈমানহারা হয়ে যেতে পারেন। আল্লাহ তায়ালা আয়াতটিতে আরো বলেন,

"যারা কুফরি করেছে, তাদের কর্মফলের জন্য তাদের বিপর্যয় ঘটতেই থাকবে কিংবা বিপর্যয় তাদের ঘরের আশপাশেই আপতিত হতে থাকবে যে পর্যন্ত না আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সমাগত হয়। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রম করেন না।"

.

পরিশেষে একটা কথা বলি, আল্লাহ তায়ালা চাইলে কুরআন কিতাব আকারে কাগজে বা কাপড়ে বা যেকোন উপায়ে লিখে দুনিয়ায় নবীজি সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠাতে পারতেন।

কিন্তু সমগ্র কুরআন নাযিল হয় জিবরাইল (আ) মুখে মুখে, উচ্চারণে উচ্চারণে। তার মানে কুরআনের মুজিযা কাগজে না, কুরআনের মুজিযা বা এর শক্তি হলো এর হরফে, এর আয়াতে।

কাগজ এর বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্য হলো, এটা পানিতে ভিজে যাবে, আগুনে পুড়ে যাবে। সুতরাং, এর মাঝে মুজিযা খোঁজার কিছু নাই। মুমিনরা রুহানি শক্তি দিয়ে কুরআনকে অন্তরে ধারণ করে। সেখান থেকে মুছে ফেলা সম্ভব না

.

আপনি আল্লাহ তায়ালার দিকে কাউকে আহবান করবেন কিভাবে সে ব্যপারে আল্লাহ তাআলা বলেন: “আপনি মানুষকে দাওয়াত দিন আপনার রবের পথে হিকমত ও উত্তম ওয়াযের মাধ্যমে এবং তাদের সাথে তর্ক করুন উত্তম পদ্ধতিতে।

নিশ্চয় আপনার রব, তাঁর পথ ছেড়ে কে বিপথগামী হয়েছে, সে সম্বন্ধে তিনি বেশী জানেন এবং কারা সৎপথে আছে তাও তিনি ভালভাবেই জানেন।”[সূরা নাহল, আয়াত: ১২৫]

.

তাই আমরা কোন বিষয়কে অতিরঞ্জিত করবো না। কাফির মুশরিকরা যদি আমাদের নিয়ে তামাশা করে এই বলে যে মসজিদে কেন মানুষ পুড়ে মরলো? তখন আপনি তার বিপরীতে এই উত্তর দিবেন না যে দেখো কুরআন তো পুড়ে নাই। মনে থাকবে?

.

সমসাময়িক বিষয়ঃ
|| নারায়ণগঞ্জ মসজিদে এসি বিস্ফোরণ ||
লেখাঃ সিফাত সাদেকীন চৌধুরী (রৌদ্র)
-------------------------------------------◾

পঠিত : ৪৪৩ বার

মন্তব্য: ০