Alapon

|| টপিকঃ টাইম ম্যানেজমেন্ট পর্ব-(৫) ||



ভালো অভ্যাস গঠন ও খারাপ অভ্যাস ত্যাগ
---------------------------------------------

সাদেকীন সাহেব এবং রৌদ্র দুজনি প্রডাক্টিভ মর্নিং রুটিন রেডি করলো। টাইম ম্যানেজমেন্ট কে কাজে লাগিয়ে অলস দুপুরকে করে ফেলল একটিভ। আর স্লিপ ম্যানেজমেন্ট রুটিন ফলো করে রাতকে করে ফেলেছে দারুন প্রডাক্টিভ।

.

সাদেকীন সাহেব তার বউকে এবং রৌদ্র তার বন্ধুকে করেছে টিম মেট। নিজেদেরকে প্রডাক্টিভ করতে তারা গুরুত্ব দিয়ে টিম ওয়ার্ক করছে। । আল্লাহ তায়ালার কাছে দুয়া করে অলসতা থেকে মুক্তির জন্য। এভাবে তারা তাদের সারাদিন সাজিয়ে ফেলল।

.

এছাড়া তারা এই অভ্যাসগুলো দ্রুত রপ্ত করতে এবং নিজেদের খারাপ অভ্যাসগুলো রিডিউস করার জন্য কিছু স্ট্র‍্যাটেজি ফলো করলো। এই স্ট্র‍্যাটেজি বা কৌশলগুলো তাদেরকে দ্রুত ভালো অভ্যাস গঠনে ও খারাপ অভ্যাসগুলো ত্যাগে সাহায্য করলো।

.

যখন আমরা আমাদের ডেইলি রুটিন চেঞ্জ করি তখন আমরা কিছু কঠিন সিচুয়েশনের মুখে পড়ে যাই। যেমনঃ সকালে ঘুম থেকে উঠার টাইম নিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের অভ্যাস চেঞ্জ করা খুব কঠিন হয়ে যায়। কিংবা ফেসবুকিং কমিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না।

.

টাইম ম্যানেজমেন্টকে কাজে লাগিয়ে যদি আমরা নতুন কোন অভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে যাই তখন এই বিষয়গুলো আমাদের কাছে একটা সময় নরমাল মনে হবে। ইন শা আল্লাহ। এছাড়াও নতুন অভ্যাস গঠন ও খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করার জন্য তিনটি কৌশল সর্বাধিক কার্যকর প্রমাণিত হয়েছেঃ

৩০ দিনের চ্যালেঞ্জ
লুপ ক্র‍্যাকিং
প্রতিস্থাপন পদ্ধতি

(সূত্রঃ প্রডাক্টিভ মুসলিম, মুহাম্মাদ ফারিস)

.

৩০ দিনের চ্যালেঞ্জঃ
----------------------------
একটা নতুন অভ্যাস গঠন করতে গেলে আপনাকে কিছু সময় বিনিয়োগ করতেই হবে। এই সময় বিনিয়োগ যেকোন বিনিয়োগের চাইতেও বেশি ফ্রুটফুল বা লাভ জানক বলতে পারেন। বলা হয়ে থাকে, কোন কাজ যদি ক্রমাগত ২১ দিন করা হয় তাহলে সেটি অভ্যাসে পরিনত হয়ে যায়। মানে হলো, প্রডাক্টিভ মর্নিং এর রুটিনটা যদি আপনি টানা ২১ দিন ক্রমাগত ফলো করতে পারেন তাহলে দেখবে ৩০ দিনের ভেতর এটি আপনার নিয়মিত অভ্যাসে পরিনত হয়ে যাবে।

.

হ্যাবিট লুপ ক্র‍্যাকিংঃ
------------------------------
সহজে নতুন অভ্যাস গঠনে আরেকটা পদ্ধতি হলো হ্যাবিট লুপ ক্র‍্যাকিং পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে উপাদান হলো তিনটিঃ ১) ট্রিগার ২) রুটিন ৩) পুরস্কার।

ধরুন আপনার বাজে অভ্যাসটি হলোঃ
সারাদিন সময় অসময় নাই আপনি ফেসবুকিং করেন। কিংবা আপনি কথায় কথায় রেগে যান।

আপনি রুটিন করলেনঃ
প্রতিদিন কেবল এক ঘন্টা আপনি ফেসবুকিং করবেন। রাগ কমানোর জন্য অযু করলেন, দুয়া পড়লেন, জায়গা চেঞ্জ করলেন।

পুরষ্কারঃ
আল্লাহ তায়ালা প্রতিটা ভালো কাজের জন্য নেকি দেন বা গুনাহ মাফ করে দেন। তেমনি আপনিও প্রতিটা ভালো অভ্যাস রপ্ত করার জন্য নিজেকে পুরস্কার দিবেন।

এভাবে ধীরে ধীরে আপনার ব্যাড হ্যাবিট লুপ করবে।

.

প্রতিস্থাপন পদ্ধতিঃ
--------------------------
প্রতিস্থাপন পদ্ধতি হলো, আপনার একটা খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে সে জায়গায় একটা ভালো অভ্যাস পুনঃস্থাপন করা। টাইম ম্যানেজমেন্ট ব্যবহার করে এই কাজটা খুব দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করা যায়।

ধরুন, আপনি হস্তমৈথুন করতে অভ্যস্ত। রাতের একটা সময় আপনি হস্তমৈথুন করেন। আপনি রুটিনে ঠিক করে নিলেন যখনি হস্তমৈথুন করতে মন চাইবে তখনি আপনি ইউটিউবে একটা নাশিদ শুনবেন কিংবা কুরআন তিলাওয়াত শুনবেন।

আর এক্ষেত্রে আপনার ইচ্ছা শক্তিই প্রধান।

আবার ধরুন, আপনার হারাম প্রেম করার অভ্যাস আছে। আপনি ছেড়ে দিলেন হারাম প্রেম। এখন আপনার একা লাগছে বা সময় কাটছে না। একা লাগার সেই সময়টায় আপনি দ্বীনি ভাইদের সাথে কথা বলতে পারেন।

আবার আপনি প্রচুর টিভি দেখেন। টিভি দেখা বন্ধ করলেন কিন্তু সেই সময়টা আপনি অলস ভাবে না কাটিয়ে সৃজনশীল কাজ করতে পারেন। এভাবে একটা বাজে অভ্যাস ত্যাগ করে নতুন একটা ভালো অভ্যাস গঠন করা যায় এই পদ্ধতিতে।

.

সাদেকীন সাহেব ও রৌদ্র উপরের পদ্ধতি গুলোর তিনটা পদ্ধতিই অনুসরণ করলেন। প্রতিটা অভ্যাস ক্রমাগত করে ৩০ দিনের ভেতর রপ্ত করার চ্যালেঞ্জ নিলেন। প্রতিটা ভালো অভ্যাস প্রতিস্থাপন করতে থাকলেন খারাপ অভ্যাসের জায়গায় এবং প্রতিটা ভালো অভ্যাসের জন্য তিনি নিজেকে পুরস্কৃত করতেন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে পুরস্কারের আশা করলেন।

.

ভালো অভ্যাস গঠনের মাধ্যমে এবং খারাপ অভ্যাস গুলো ত্যাগ করার মাধ্যমে আপনি একজন প্রডাক্টিভ মানুষে পরিনত হবেন। ভালো কাজ করবেন আর ভালো কাজের বিনিময়, আল্লাহ তায়ালা আখিরাতে দান করবেন৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন," যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে হাযির হবে সৎকাজ নিয়ে তার জন্য রয়েছে দশগুণ প্রতিফল।" (আল-আনয়াম:১৬০)

.

|| টপিকঃ লাইফ স্টাইল পর্ব (৫) ||
লেখাঃ সিফাত সাদেকীন চৌধুরী (রৌদ্র)
-------------------------------------------

পঠিত : ১১১৮ বার

মন্তব্য: ০