Alapon

মেয়েটি নিজেও জানে না যে সে বিপ্লবী...


নেকাবি আর হিজাবি মেয়েটার নিজের ছেলের সাথে ক্রিকেট খেলা বিপরীতমুখী দুই গ্রুপের পশ্চাদে আগুন ধরিয়েছে। এক দল বলছে বাংলাদেশের মেয়েরা এমন হিজাবি-নেকাবী কেনো? এটা বাংলাদেশ, আফগানিস্তান নয়। হিজাব যখন পরেছ, ঘরে যাও; নাহলে হিজাব খুলে মাঠে আসো। এজ ইফ মাঠ কেবল তাদের। সেখানে কে কিভাবে আসবে তা তারাই ঠিক করে দিবে।

আর আরেক দল বলছে আস্তাগফেরুল্লাহ মেয়ের হাতে ক্রিকেট ব্যাট কেনো, তার পা মাঠে কেনো, তার তো কেবল ঘরের ভিতর থাকার কথা। মেয়ে হয়ে জন্মেছে কেবল ঘরে থেকে হাড়ি ঠ্যালা, বাচ্চা মানুষ করা, আর স্বামী শ্বশুর বাড়ির খেদমতের জন্য। সুতরাং তাদের মা মেয়েদের মতন পোশাকে এক মেয়ের হাতে ক্রিকেট ব্যাট দেখে তারা থমকে গেছে। এরপর জোর গলায় মেয়েটার সমালোচনা শুরু করেছে। তাদের চিরাচরিত চিন্তাধারায় বিরাট ধাক্কা লেগেছে। ভাবতেই পারছে না এ কি করে সম্ভব - এক মেয়ে একই সাথে হিজাবি আর আধুনিক।

এই মেয়েকে সাপোর্ট দিতে গিয়ে তৃতীয় এক গ্রুপ আবার প্রথম গ্রুপের মেয়েদের চেহারা কেমন কুৎসিত সেটা টেনে এনে নিজেদের যুক্তি উপস্থাপন করছে। মেয়েগুলার চেহারা নাকি এত কুৎসিত যে তাদের দিকে এদের তাকাতেই ইচ্ছা করে না। অন্যের কথার সমালোচনায় যারা শারীরিক সৌন্দর্য টেনে আনেন তারা হলো তৃতীয় শ্রেণীর মানুষ। যারা কথার পিঠে কথা না বলে, যুক্তির পিঠে যুক্তি না দিয়ে বিরোধী মানুষের চেহারা সুরতে আটকে যায় তারা যুক্তি প্রতিবন্ধী ।

এবার নেকাবি মা খেলোয়ারটির উপর দুইটা কথা বলি। আমি এই মেয়েকে চিনি না, তার নামও জানিনা। কিন্তু তার এই একটা কাজই তার সম্পর্কে কিছু কথা বলে দিচ্ছে। এই মেয়ে শিক্ষিত এবং প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী। এমন আত্মবিশ্বাস অনেক জিন্স শার্ট পড়া আধুনিক মেয়েদেরও নাই। একই সাথে সে একজন ভালো আর আধুনিক মা।

মেয়েটি নিজেও জানে না যে সে বিপ্লবী। তার এই এক ছবি হিজাবীদের নিজেদের নিয়ে ভিন্ন ভাবে চিন্তা করতে শিখাবে। তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সেই আত্মবিশ্বাস থেকে ঘর এবং সমাজে অনেক ভালো কিছু হবে। সেটাই হয়তো হবে আগামীর বাংলাদেশ।

- সাবিনা

পঠিত : ১০৪৩ বার

মন্তব্য: ০