Alapon

অলসতা কর্মস্পৃহা ধ্বংস করে ফেলে...



অলস পুরুষ মেয়েলী পুরুষ বলতে, কোন কথা নেই। তবে ঘটনা বুঝার জন্য খুবই জরুরী। কখনও দেখেছেন কি, একটি বয়স্ক বিড়াল, ছোট বিড়াল ছানার সাথে মিলে মায়ের দুধ পান করছে? এটা কোন বিরল ঘটনা নয়। ছবিতেই প্রমাণ দেখুন এবং তা প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়।

বিশেষ করে পুরুষ বিড়ালের ক্ষেত্রেই এমনটি হতে দেখা যায়। মা বিড়ালী দুইবার বাচ্চা দেবার পরও, এ ধরণের অলস বিড়ালগুলো মায়ের স্তন থেকে, ছোট ভাই-বোনের দুধে ভাগ বসায়। সে এক চুমুকে দুধের যত টানতে পারে, চারটি নতুন শিশু বিড়াল ছানা এক সাথে একত্রে অত টানতে পারেনা! আশ্চর্যের বিষয় হল বড়টার এভাবে দুধ চুরিতে কিন্তু মায়ের সায় থাকে!

বড় হলে দলাদলি করবে, মাস্তানি করবে, অন্যের বাড়ী দখল করবে। এই ভয়ে এক বিড়ালের বাচ্চা, অন্য বাবা বিড়াল, সুযোগ পেলেই মেরে ফেলে। সেক্ষেত্রে মায়ের অবর্তমানে, দুধ চোরা এই বড় ভাই বিড়াল, অন্যান্য ছোট ছানাদের রক্ষায় কাজ করে। সে স্বার্থের কারণে মা দুধ পানে তাদের বাধা দেয় না।

পুরুষ বিড়াল এমনিতেই একটু অলস প্রকৃতির হয়। এই পর্যায়ে তারা মায়ের সাহচর্যে, কষ্ট ছাড়া পেট চালাবার সুযোগ পেলে, আরো অলস হয়ে উঠে। সে মায়ের সাথে থেকে প্যাঁ প্যাঁ করে বিরক্ত করে। মা কখনও তাকে জিহ্বা দিয়ে আদর করে, ঘাড়ে কামড় দিয়ে টেনে হেঁচড়ে নেয়। অর্থাৎ শিশু সন্তানের মত আদর করে।

বিড়াল ইতর প্রকৃতির প্রাণী। যখন দেহে পরিপূর্ণ যৌবন আসে তখন ভুলে যায় কে তার মা, কে তার বোন!

কিছু কিছু মানুষের কাছেও বিড়ালের এই অভ্যাস গড়ে উঠতে দেখা যায়। তারা বড় হয়েও মা কেন্দ্রিক হয়ে উঠে। বস্তুত তারা অলস সময় কাটায়। মায়ের কাঁধে বসেই দায়িত্ব এড়িয়ে চলে। বাহিরের মানুষেরা তাদের দেখলে মনে করবে, আহা! কত বড় মা ভক্ত সন্তান!

মা যদি এদের বিয়ে করিয়ে দেন কিংবা নিজ দায়িত্বে একটি বিয়ে করতে পারে। তখন তারা স্ত্রী ও শ্বশুর বাড়ী নির্ভর হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে মায়ের কথাই ভুলে যায়! সে কারণে এসব মানুষ অলস পুরুষ মেয়েলী পুরুষ হিসেবে বিবেচিত হয়।

এটা মায়ের প্রতি গোস্বা কিংবা হিংসের কারণে হয় না। তার অলসতার কারণেই ঘটে। অলস মানুষ চরম অকর্মণ্য ও হীনমন্য হয়। আগে মায়ে দায়িত্বে খেত এখন শ্বশুর বাড়ীর কল্যাণে খায়! এতটুকুই শুধু তফাৎ। তাই সন্তানের অলসতাকে এড়িয়ে যেতে নেই।

অন্যের কাঁধে বসে নিজে খায়, সেখানে মায়ে নিয়ে খেতে গেলে বড় অবিবেচনার কাজ হয়। এই প্রেরণার কারণেই মাকে এড়িয়ে চলে। ফলে সন্তান যতই উচ্চ শিক্ষিত হউক, অলস আজীবন অকর্মণ্যই হয়, কোনদিন পিতা-মাতার উপকারে আসেনা। এমনকি তারা নিজে, নিজের উপকারও করতে পারে না।

রাসুল (সাঃ) আল্লাহর কাছে ব্যক্তিগত পর্যায়ের, যত দোয়া করতেন। সকল দোয়াতেই অলস না হওয়ার জন্য আবেদন করতেন। তিনি উম্মাহকে বলে গেছেন যাতে করে, তারাও অলস না হবার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে।

সামান্য অলসতা দেখানোও জীবনের প্রতি কঠোরতা দেখানোর সমতুল্য! রাসুল (সাঃ) বলেছেন, "আমার অন্তরে কখনও অলসতা দেখা দেয়, তাই আমি দৈনিক একশত বার আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকি।" মুসলিম-৬৭৫১

- tipu

পঠিত : ৫৩২ বার

মন্তব্য: ০