Alapon

নারীর স্বাধীনতার ভিতরগত রূপ এবং কিছু কথা...



কিছু জ্ঞান পাপীকে দেখা যাচ্ছে ইউরোপ, আমেরিকা,কানাডা,ফ্রান্স সহ উন্নত দেশগুলোর অর্ধনগ্ন মেয়েদের ছবি দিয়ে(পাশে দিয়ে পুরুষরা হেঁটে যাচ্ছে,কিন্তু তাকাচ্ছে না) নীতিবাক্য শুনাচ্ছে। দৃষ্টিভঙ্গি বদলান,নিচুঁ মন মানসিকতা বদলান,এদেশে হলে কি হতো, ইত্যাদি, ইত্যাদি। কিন্তু এইসব জ্ঞান পাপীরা জানে না, সেইসব দেশের ধর্ষণের হার।

আসুন জেনে নেই, তথা কথিত সভ্য কিছু দেশের ধর্ষণের ব্যাপারে-

আমেরিকা : কি ভাবছেন ভুল পড়েছেন? না আপনি একেবারে ঠিক ই পড়েছেন। পৃথিবীর এই সুপার পাওয়ার ধর্ষণ এর দিক থেকেও সুপার পাওয়ার। এখানে ধর্ষকদের ৯৯% ই পুরুষ। ভাবছেন এটা আবার কেমন কথা? বাকি ১% ধর্ষণ নারীদের মাধ্যমে হয়। U.S Bureau of Justice এর হিসেব মতে ধর্ষিতদের ৯১ শতাংশ নারী ও বাকি ৯ শতাংশ পুরুষ। National Violence Against Women Survey এর তথ্যমতে প্রতি ৬ জন নারীর ১ জন ও প্রতি ৩৩ জন পুরুষের ১ জন আমেরিকায় ধর্ষণ এর শিকার হয়। মাত্র ১৬% ধর্ষণ কেস রিপোর্ট করা হয় আমেরিকায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা : ২০১২ সালে দক্ষিন আফ্রিকাতে ৬৫০০০ ধর্ষণ ও অন্যান্য যৌন নির্যাতনের রিপোর্ট হয়েছে। “পৃথিবীর ধর্ষণের রাজধানী” হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা বিখ্যাত। ৪০০০ নারীর উপর একটি জরিপ চালালে তাদের প্রতি ৩ জনের একজন বলেন তারা ধর্ষণের শিকার। Medical Research Council (MRC) এর এক জরিপে দেখা গেছে দক্ষিন আফ্রিকার ২৫% পুরুষ জীবনে একবার হলেও ধর্ষণ করেছে। শিশু ধর্ষণের হার দক্ষিণ আফ্রিকায় সবচাইতে বেশি। এখানে কেও যদি ধর্ষণ করে ধরা পরে তবে মাত্র দুই বছর এর সাজা ভোগ করে।

সুইডেন : ইউরোপ এর মধ্যে সর্বাধিক ধর্ষণ হয় সুইডেন এ এবং পৃথিবীর মধ্যে ৩য়। সুইডেন এ প্রতি ৪ জনে একজন নারী ধর্ষণের শিকার হয়। সুইডিশ পুলিশ এর রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০৯ সালে সুইডেন এ ধর্ষণ এর হার পূর্ববর্তী ১০ বছরের তুলনায় ৫৮% শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

যুক্তরাজ্য : যুক্তরাজ্য অনেক দেশের জন্য আদর্শ হিসেবে আছে বহু যুগ ধরে তাদের সভ্যতা, তাদের উন্নত প্রজুক্তির জন্য। কিন্তু এই যুক্তরাজ্য যে পৃথিবীর ৫ম মারাত্মক ধর্ষণপ্রবন দেশ এটা কজন ই বা জানে। ইংল্যান্ড ও ওয়ালেস এ প্রতিবছর প্রায় ৮৫০০০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। এছাড়া ৪,০০,০০০ এর উপরে নারী প্রতিবছর যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতি ৫ জনে ১ জন নারী ১৬ বছরের পরে কোণ না কোণ ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়।

জার্মানি : সরকারি হিসেব মতে ২,৪০,০০০ নারী ও কিশোরী জার্মানিতে এই ধর্ষণের কারনে মাড়া গেছে। এ পর্যন্ত সরকারি হিসেবে জার্মানিতে ৬,৫০,৭৩৯৪ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। প্রযুক্তিতে অনেক এগিয়ে গেলো মানবিকতায় পিছিয়েই পরে আছে জার্মানি।

ফ্রান্স : এইতো ১৯৮০ সাল পর্যন্ত ও ধর্ষণ ফ্রান্সে কোণ অপরাধ হিসেবে স্বীকৃত ছিল না। নারীর অধিকার বা নিরাপত্তা বিষয়ক আইন ফ্রান্সে বেশ নতুন তাদের ঐতিহ্য যতই পুরাতন হোক না কেন। সরকারি মতে ফ্রান্সে প্রতিবছর ৭৫০০০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়। তবে ধর্ষণের শিকার হওয়া নারীদের মাত্র ১০% পুলিশে অভিযোগ করে।

কানাডা : কি এই লিস্ট এ কানাডা এর নাম দেখে অবাক হচ্ছেন? আরেকটু ধৈর্য ধরুন আরো বিস্ময় অপেক্ষা করছে। যাই হোক, এপর্যন্ত কানাডাতে ধর্ষণ হয়েছে এমন রেকর্ড আছে ২,৫১,৬৯১৮ জনের। কানাডা তে যে পরিমান ধর্ষণ হয় তার মাত্র ৬% রেকর্ড হয়। কানাডার প্রতি তিনজন নারীর একজন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। Justice Institute of British Columbia এর একটি রিপোর্ট মতে কানাডার প্রতি ১৭ জন নারীর একজন ধর্ষণ এর শিকার হয়।

ইথিওপিয়া : |জাতিসঙ্ঘের হিসেব অনুযায়ী ইথিওপিয়ার প্রায় ৬০ শতাংশ নারী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। ইথিওপিয়ায় এটা মোটামুটি কমন ব্যাপার যে কারো কোণ মেয়ে পছন্দ হলে তুলে নিয়ে গিয়ে যতদিন না সেই মেয়ে গর্ভবতী হয় ততদিন ধর্ষণ করতে থাকে। এছাড়া ইথিওপিয়ার সেনাবাহিনী সদস্যরাও নিয়মিত সিভিলিয়ান নারীদের উপর ঝাপিয়ে পরে।

এইসব জ্ঞান পাপীরা কেন আমাদের মা-বোনদেরকে উলঙ্গ করতে চাই, আমরা বুঝি।এইসব করতে পারলে তারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সহজে হাসিল করতে পারবে।

- kayum

পঠিত : ১১৫৬ বার

মন্তব্য: ০