Alapon

বৈবাহিক ধর্ষণ!!



যা বলতে চেয়েছি:

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে একটা সম্পর্ক, সে সম্পর্ক হবে সবচেয়ে মধুর। স্নেহ,শ্রদ্ধা - ভালোবাসা আর মায়া-মমতায় ঘেরা! এখানে রাগ আসবে আবার প্রিয়তমা প্রেয়সীর সাথে খুনসুটির মাধ্যমে, নিত্য নতুন কৌশলে রাগ -অভিমান ভাঙ্গার প্রচেষ্টাও হবে। একপর্যায়ে রাগগুলো টুটেও যাবে।

স্বামী-স্ত্রী একে অন্যকে বুঝবে, একের প্রতি অন্যের সহযোগিতা আর সহমর্মিতা থাকবে তুলনাহীন, অনেক বেশি। অনেএএএক! পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের বন্ধুত্ব সৃষ্টি হবে এবং থাকবে তাঁদের দু'জনার মাঝেই। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লার পবিত্র কালাম আল-কুরআনের সুরা তাওবাহতে তো তাই বলেছেন যে, মুমিন পুরুষ ও নারী, একে অন্যের বন্ধু,সহযোগী। কিন্তু তাদের মধ্যে টুকটাক মনোমালিন্য-ঝামেলা হবেই। কোনো কারণে দেখা গেছে তাদের মাঝে ভুল বোঝাবুঝি হতে ভালোবাসার কমতি বা মনের মিলটাও (স্বামী-স্ত্রীর) মাঝে ধীরে ধীরে ঘাটতি হতে শুরু করে।

এই যে মনের একটা দূরত্ব সৃষ্টি হওয়া, বা ভালোবাসার অভাব তৈরি হওয়া সেজন্য বা সেটাকে কাজে লাগিয়ে দিয়ে পশ্চিমাবস্তাপঁচা সভ্যতার ধারক বাহকরা একটা টার্ম তারা তৈরি করছে –বৈবাহিক ধর্ষণ! এখন এই টার্মটার বিকাশ অব্যাহত আছে মুসলিম বিশ্বেও। বৈবাহিক ধর্ষণ নামক যে বিবেক বর্জিত দর্শন ও শব্দসন্ত্রাস- এর প্রসারও ঘটছে মুসলিম সমাজে, এর পেছনেও কিন্তু একটা সুপ্ত কারণ রয়েছে। তা হলো ইসলামিস্টরা এটার কোনো যৌক্তিক আলোচনা করে না কিংবা সমাধান দিচ্ছে না, সুযোগ লুফে নিচ্ছে নারীবাদীরা, পশ্চিমা জগত।


বৈবাহিক ধর্ষণ:

ধর্ষণ! চারিদিকে আজ ধর্ষণের মহামারী। এই ধর্ষণ নিঃসন্দেহে সমাজের এবং মানুষের প্রতি অন্যতম জঘন্য একটি অপরাধ। বিশ্বের সকল দেশেই ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় এবং সকল দেশেই এটাকে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা আছে। আর ইসলাম, ইসলামের শাস্তি তো আরো ভয়াবহ! আমাদের দেশের দণ্ডবিধি ১৮৬০’র ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞা দেয়া আছে এবং ৩৭৬ ধারায় এর শাস্তির বিধান উল্লেখ করা আছে। কিন্তু বৈবাহিক ধর্ষণ? এটাকে কি আদৌ ধর্ষণের কাতারে ধরা হয়? পড়ে এটা ধর্ষণের কাতারে? এমনকি এমন কোন ধর্ষণের প্রকার আছে সেটা জানা আছে কত সংখ্যক মানুষের? কতোজন এই অবাঞ্চিত বাক্যটির মর্মার্থ ধরতে পারে?

এই যে হুট করেই পশ্চিমারা, নারীবাদীরা ম্যারিটাইল রেইপ আবিস্কার করে ফেলেছে যা যুগের পর যুগ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে কেউ কখনো তা জানতো না! যখন বলা হয় বৈবাহিক ধর্ষণের ভিত্তি কী? মানদণ্ড কী? এ-ই প্রশ্ন বা এরকম কথা যখন বলা হয় তখন তারা বলে বিবেকই মানদণ্ড! কোনটা জাস্টিস কোনটা ইনজাস্টিস --তা ঠিক করবে বিবেক!


বিবেক-ই যদি মানদণ্ড হয়....


সেক্যুলাররা যেই আমেরিকাকে তাদের কেবলা মানে, সেই আমেরিকাতেই কিন্তু ১৯৭৯ সালের পূর্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কোনো পুরুষকে তার স্ত্রীকে ধর্ষণ করার দায়ে অভিযুক্ত করা যেতো না। ১৯৫০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কিছু রাজ্যে কোনো শ্বেতাঙ্গ নারী স্বেচ্ছায় কোনো কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির সঙ্গে যৌনসঙ্গমে লিপ্ত হলেও সেটিকে 'ধর্ষণ' বিবেচনা করা হত। [০১]

আচ্ছা বিবেকই যদি মানদণ্ড হয় তা হলে ৭৯ সালের আগে যে আমেরিকান পুরুষেরা তাদের স্ত্রীকে ধর্ষণ করে গেছে (তাদের ভাষায়) তার বিচার কী? কে করবে সেটার বিচার? কিংবা শ্বেতাঙ্গ নারীরা যে ইচ্ছে কৃত কৃষাঙ্গ পুরুষদের ধর্ষণ করে আসছে তার প্রতিকার তার বিচার তার সমাধান কী? কে করবে? আর যারা এমন জঘন্যতম কাজ করে গেছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে-- তাদের যদি কোনো বিচার কোনো সাজা-শাস্তি না হয়, তা হলে এখন বা এরপরবর্তীদের কোন যুক্তিতে হবে? এক গ্রুপকে একই কর্মের জন্য ছেড়ে দেয়া, পরবর্তীতে সেই একই কাজের জন্য অন্যদের শাস্তি দেয়া, সেই কাজকেই অপরাধ হিশেবে গণ্য করা কীভাবে জাস্টিস হয়?


পশ্চিমা ভোগবাদী সেক্যুলারদের ভাঁওতাবাজি:


পশ্চিমা ভোগবাদী বস্তুবাদী ও স্বার্থ পূজারী সভ্যতার সেবাদাস নাস্তিকরা কুযুক্তি আর শব্দ-তথ্য সন্ত্রাস, মানবতাবিধ্বংসী, সভ্যতা বিনষ্টকারী, সততা নৈতিকতা বিবর্জিত অসংখ্যসব চটকদার হাস্যকর ফাউল কথাবার্তার নমুনা রয়েছে, সেসব নমুনার মাঝে এই বৈবাহিক ধর্ষণও একটি। এই শব্দও সারাবিশ্বের মানুষের মগজে ছড়িয়ে দিয়েছে, দিচ্ছে। দেয়ার প্রচেষ্টা করছে। আচ্ছা বিবাহের সাথে ধর্ষণ শব্দটা যায়? যদি তা ধর্ষণই হবে তা হলে তাকে বিয়েও বা বলা হচ্ছে ক্যান? পশ্চিমাদের এই যে শব্দ সন্ত্রাস, এই শব্দ সন্ত্রাসের শিকার আজ মুসলিম নামধারী-বেশধারী কিছু মানুষও। তাদের ভেতরও ঢুকে গেছে তা।

এই যে ম্যারিটাইল রেইপ, এরকম শব্দ সন্ত্রাস আর তথ্য সন্ত্রাসী করে তারা বিয়ের মতো একটা পবিত্র বন্ধনকে হালকা করে ফেলতেছে,ফেলার প্রচেষ্টা করছে ধীরে ধীরে। পরকীয়ার দিকে নিরবে সরবে সবরকমের উস্কানী দিচ্ছে।

স্বামী-স্ত্রী তাদের বেডরুমে কী করবে, কী আচরণ করে তাকে সংজ্ঞায়িত করার কী এক মহা কোশেশ-ই না করছে তারা। কিন্তু তারাই আবার বুলি আওয়ড়ায় কারো ব্যক্তিগত জীবনে, কারো বেডরুম, কারো একান্ত নিরিবিলি অবস্থায় কী করবে, কোথায় যাবে, কার সাথে যাবে তা তার বা তাদের নিজস্ব বিষয়, নিজস্ব স্বাধীনতা। তারা এমন চটকদার বুলি কপচিয়ে কিন্তু যার-তার সাথে, যেই-সেই অবস্থায় শুয়ে পড়ার, যৌনতা করার লাইসেন্স দিচ্ছে। এসবের পক্ষে প্রচারণাও করছে। খেয়াল করুন, তারা দুজন সম্মতি হলে, বা একটা মেয়ে ইচ্ছে করলে যার-তার সাথে যৌন ক্ষিধে মেটাবার, যৌন কর্ম করার স্বীকৃতি দিচ্ছে! সে যেই হোক তাতে তাদের মাথা ব্যথা নেই! কিন্তু ইসলামের একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আছে। অন্যান্য ধর্মেও আছে!( যদিওবা অন্যান্য ধর্মগুলো তাদের আবেদন হারাচ্ছে)। ইসলামে ১৪ জনের সাথে বিয়ে-সেক্স করা টোটালি নিষিদ্ধ, হারাম। শাস্তি ভয়াবহ! এমন জঘন্যরকম মানবতাবিরোধী চিন্তা কেউ কখনো ভাবতেই পারে না। কিন্তু বর্বরতম নোংরা সভ্যতার ধারক-বাহক নাস্তিক আর তাদের গডফাদাররা অসভ্যতার প্রসার ঘটাচ্ছে সারটা দুনিয়াজুড়ে। মানুষের মগজে সেই সব চিন্তার উন্মেষ ঘটাবার বন্দোস্ত করে যাচ্ছে নানাবিধ কায়দায়। সুকৌশলে। তাদের কাছে ১৪ শ্রেণি বা ১৪ জন তো দূরে থাক, একটা শ্রেণি বা একজনেরও নিষিদ্ধের নিয়ম বা কথাবার্তা নেই! এবং তাদের দৃষ্টিতে এটা অনৈতিকও নয়! স্টান্ডার্ড কী? তা হলো সম্মতি! আস্তাগফিরুল্লাহ! এভাবেই তারা সুকৌশলে আমাদের নৈতিকতাবোধ আর সভ্যতা-সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানছে, হানার চেষ্টা করছে! আমাদের পবিত্র বন্ধনগুলোকে হালকা করে দিয়ে পশুর স্তরে নামিয়ে দিতে চায়, আমাদের বন্ধন, নৈতিকতা আর আদর্শের ওপর একটা কালো দাগ দিতে চায় –যে দাগে হয়তো-বা তারাও আজ দগ্ধ, আক্রান্ত!

এই যে এমন নোংরামি আর ভাঁওতাবাজি মূলক নৈতিক অবস্থান, নিজেদের এমন ভয়াবহতম নষ্ট আর ভেঙ্গে পড়া সভ্যতা–তারা তাদের গলিত-পঁচিত আর ভেঙ্গে পড়া সভ্যতার মেরামত না করে স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়টিকেও ধর্ষণ হিশেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সুবিশাল কসরত করে যাচ্ছে হরদম! আসোলে স্বামী স্ত্রীর সাথে ধর্ষণ শব্দটাই একটা প্রতারণাপূর্ণ শব্দ৷ একটা কাণ্ডজ্ঞান বহিঃর্ভূত শব্দ! স্বামী স্ত্রী উভয়কেই তো উভয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। উভয়কেই তো বিবেচক হতে হবে। তাদের মধ্যে তো এমন সুন্দর সুশৃঙ্খল জীবন নেই, বন্ধন নেই; তাই তারা তাদের সেই বিশৃঙ্খল অবস্থা আমাদের ওপরও চাপিয়ে দিতে এমন উদ্ভট আর প্রতারণাপূর্ণ পরিভাষা চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে!


স্বামী-স্ত্রীর বিষয়ে ইসলাম কী বলে?:


আচ্ছা, এ ব্যাপারে ইসলামের শিক্ষা কী? ইসলাম কী বলে এ বিষয়ে? ইসলামি শরীয়াহ'র মূল উৎস আলকুরআন। আলকুরআনে বলা হয়েছে তাঁরা দুজনেই দুজনের পোষাক। [০২] তারা তো একে অন্যের দেহ, দেহের অর্ধেক, দ্বীনের অর্ধেক।[০৩] স্বামীকে বলছে স্ত্রীর প্রতি সদাচরণ করতে। যদি স্ত্রী অপছন্দেরও হয়–তবুও আল্লাহ সুবহানাহু ও'তাআলা আদেশ দিয়েছেন স্ত্রীর সাথে সদাচরণ করতে [০৪] এবং আল্লাহর রাসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীর সাথে অসদাচরণ করতে নিষেধও করছেন। [০৫] একটা হাদিসে নবিজি সল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নারীদের ব্যাপারে কল্যাণকামীও হতে বলেছেন। [০৬]

মানুষের নানাবিধ চাহিদার পাশাপাশি রয়েছে জৈবিক চাহিদা। বিবাহ হলো এই জৈবিক চাহিদা পূরণের হালাল মাধ্যম। এর মাধ্যমেই মানুষের অবাধ যৌনাচারের মুখে লাগাম টেনে দেয়া হয়েছে। বিয়ের মাধ্যমে একে অন্যের দিকেই মনোনিবেশ করবে। তাই স্বামীর অন্যতম দায়িত্ব হল স্ত্রীর যৌন চাহিদা পূর্ণ করা। পশুর মতো নিজের চাহিদা পূরণ করে সরে না যাওয়া। মানে শুধু স্ত্রীরই কর্তব্য নয় স্বামীর চাহিদা পূরণে সদা তৎপর থাকা।স্বামীরও স্ত্রীর প্রতি এটা একটা প্রধান কর্তব্য![ ০৭]

মানুষের তো একটা স্বভাবজাত চাহিদা আছেই, সবসময় তা থাকবেই। ইসলাম বৈবাহিক জীবনেও কিছু সময় বা কিছুদিন স্ত্রীর সাথেও সহবাস করারও কিন্তু অনুমতি দেয় নি। মানে বৈধ স্ত্রীর সাথেও বিয়ের পরে কিছু নিষেধাজ্ঞা রয়েছে; কোন পুরুষ তার স্ত্রীর রজঃস্রাবকালীন সময়ে [০৮]এবং সন্তানপ্রসবের পর একটি নির্ধারিত সময়কালে তার সাথে মিলন করতে পারবে না। স্ত্রীর পায়ূতে লিঙ্গ প্রবেশকরণ তার জন্য কঠিন পাপ হিসেবে বিবেচিত হবে। [০৯]এছাড়া সিয়াম ও হাজ্জরত অবস্থায়ও নিষিদ্ধ।


যারা নিজেরা পশ্চিমাদের চিন্তার দাসত্ব কবুল করে ইসলামের মতো সুশৃঙ্খল সুবিন্যস্ত সুন্দর ভারসাম্যপূর্ণ একটা জীবনব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়--তারা কিন্তু দুজনের সম্মতিতে পায়ুপথে সঙ্গমের মতো, সমকামিতার মতো একটা বর্বরতা, নৈতিকতা বিবর্জিত,মানবতা বিধ্বংসী এই ঘৃণিত কাজটাকে জাস্টিফাই করেছে। সারা পৃথিবীতে তা ছড়িয়ে দিতেও তৎপর তারা! সেজন্য আন্দোলনও করে যাচ্ছে।


যে দায় আমাদেরও:


পাশ্চাত্যের এমন বর্বরতা আর অসভ্যসব নোংরামি কর্মের যোগানদাতা হয়েও বিশ্বের মধ্যে আজকে তারা সভ্য দাবিদার। সেই যাই হোক, ওপরের আলোচনায় মানে ইসলামে একজন স্বামীর স্ত্রীর প্রতি যে দায়িত্ব বা একজন স্বামীর কী বৈশিষ্ট্য থাকবে সে বিষয়ে এরকম আরো অসংখ্য দলীল প্রমাণ আর আলোচনা রয়েছে ! কিন্তু সেসবের উপস্থাপন করা হয় না সমাজের মধ্যে,আমাদের সমাজে অধিকাংশ স্বামীর মাঝে এসব আলোচনা থাকে অনুপস্থিত।হুজুরদের আলোচনায়ও তা অতোটা থাকে না। অনেক পুরুষের আচরণে মনে হয় যেনো সকল বিধান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ'লা স্ত্রীদের জন্যই দিয়েছেন। তো অনেক স্বামীরা কী করে, স্ত্রীর অবস্থা গোল্লায় যাক, তার মনের মধ্যে কিয়ামত চলুক, তার মানসিক অবস্থা ভালো না থাকুক, যাই হোক না ক্যান করতেই হবে। হাদিস উপস্থিত তো আছেই! এদের কী একপক্ষীয় আচরণ! তাকে যে সদাচরণ করতে বলেছে, একে অন্যের পোষাক বলা হয়েছে, নিজ শস্য জমিন বলা হয়েছে, তাকে তো যত্ন নিতে হবে, তার মুড খারাপ? পাশে গিয়ে ভরসা দাও, সান্ত্বনা দাও। সদাচারণ করো, পোষাকে ময়লা জমেছে - পরিষ্কার করো, এরপর ধুয়ে শুকিয়ে সুন্দর করে তারপর পরো, জমিনে সার দাও, পানি সিঞ্চন করো, যত্ন নাও। পোকার আক্রমণ থেকে তাকে হেফাজত করো। মানুষ তো তার সম্পদকে সবসময়ই যত্ন করে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তার জায়গায় রাখে। কিন্তু একজন মু'মিন পুরুষের জন্য তাঁর স্ত্রী-ই হচ্ছে দুনিয়ার সবচে' সেরা সম্পদ! [১০]


ইসলামের কী সুন্দর ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান। নরীকেও যেভাবে তাকিদ দিয়েছে স্বামীর চাহিদা পূরণে সহোযোগিতা করতে। আবার পুরুষকেও তাকিদ করেছে স্ত্রীর অধিকার পূর্ণ করতে। তার সঙ্গে উত্তম আচরণ করতে। দেখুন দিনের পর দিন যদি একজন স্ত্রী তার স্বামীর ডাকে সাড়া না দেয়। কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়াই অবজ্ঞা প্রদর্শন করে থাকে, তা হলে সেই নারীকেই কিন্তু অভিশাপ করা হয়েছে হাদিসে। [১১]

অনেক নাস্তিক আবার এই হাদিস নিয়ে ফালতু অযৌক্তিক অভিযোগও করেন, অথচ তারা ওপরে যে এতোগুলো হাদিস আর কুরআনের নির্দেশ আছে তার দিকে কর্ণপাত করেন না। আবার কিছু পুরুষও হাদিসটাকে নিজের সুবিধেমতো প্রয়োগের চেষ্টা করলেও তাকে যে নির্দেশ দিয়েছে ইসলাম তার দিকে নজর করে না!
অথচ ইসলামের শিক্ষা, রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আ'লাইহি ওয়াসাল্লামের মুখনিঃসৃত অমীয় বাণী-ই হলো সেই ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে তার স্ত্রীর কাছে ভালো। [১২]

আসোলে দুনিয়ায় চলতে গেলে টুকটাক সমস্যা হবেই। দুজনের মিমাংসাও ইসলাম বাতলে দিয়েছে, সে অনুযায়ী সুন্দর করে তা করতে বলে। কিন্তু আফসোসের বিষয় হচ্ছে আমরা তা ধারণ করি না, ফলাফল পশ্চিমের চটকদার বুলির পেছনে ছুটে নিজেদের সবটুকুনই খুইয়ে ফেলি! যার প্রেক্ষিতে আমরাও বৈবাহিক নামক সম্পর্কের সাথে ধর্ষণ শব্দটা জুড়িয়ে দিই কথিত সভ্যতার ধ্বজাধারী আর নারীবাদীদের প্রচারণায়, তাদের সুরে সুর মিলিয়ে! অথচ ইসলামে, বা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারীদের কাছে বৈবাহিক ধর্ষণ নামে আদৌ কোনো ধর্ষণই নেই। বিষয়টি টোটালি পশ্চিমাদের বস্তাপঁচা প্রপাগাণ্ডা!


||বৈবাহিক ধর্ষণ!!||
-রেদওয়ান রাওয়াহা


রেফারেন্স
--------

[০১] উইকিপিডিয়া।
[০২] আলকুরআন-০২/১৮১
[০৩]সুনানে আবু দাউদ
[০৪] আলকুরআন-০৪/১৯
[০৫] সুনানে আবু দাউদ-২১৪২
[০৬] সহীহ্ বুখারী-
[০৭] মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক-১০৪৬৮
[০৮] আলকুরআন -০২/২২২
[০৯] ইবনে মাজাহ-৫২২
[১০] সহীহ্ মুসলীম-১৪৬৭
[১১] সহীহ্ মুসলীম-৩৪৩৩
[১২] তিরমিজি-১১৬২

পঠিত : ৭০৯ বার

মন্তব্য: ০