Alapon

মিডিয়ায় ইসলাম বিদ্বেষ



আমাদের দেশটা মুসলিম প্রধান দেশ। এখানে কিন্তু প্রত্যেকটা বিষয় ইসলাম দিয়ে, মানুষের মন-মননে-মগজে ইসলামি মূল্যবোধ সৃষ্টি করে সকল সমস্যার সমাধান করা যায়। আসোলে সব সমস্যার সমাধান তো ইসলাম বাতলে দিয়েছে। কুরআন তো একজন মুসলিমের, মুসলিম রাষ্ট্রের সংবিধান হওয়ার কথা! কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, আমরা চলি মানব রচিত ত্রুটিযুক্ত জুলুমবাজ সংবিধানের দ্বারা!

ইসলামি বিচারব্যবস্থা দিয়ে বিচার করা, ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে নীতি-নৈতিকতার গঠন পরিগঠন করলে অপরাধ অন্যায় অনাচার অনেকাংশে কমে যাবে। কমতে বাধ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই মুসলিম প্রধান দেশে মুসলমানদের সন্তানদের ইসলামি শিক্ষার বিরুদ্ধেই প্রকাশ্যে বিষেদগার করা হচ্ছে! তাও দিন দুপুরে। প্রকাশ্যে। দিবালোকে। মেইনস্ট্রীম মিডিয়ায় বসে, মিডিয়ার আয়োজনে।


এই দেশের নিন্দিত ঘৃণিত হার্ডকোর ইসলাম বিদ্বেষী, দেশ বিরোধী ও ইসলাম বিরোধীদের ক্রিড়নক এবং ভারতীয় উগ্রবাদী মুসলিম বিদ্বেষীদের তাবেদার শাহরিয়ার কবিররা [প্রকাশ্যে দিবালোকে সর্বাধিক প্রত্যাখ্যাত সমালোচিত উগ্রবাদের উস্কানিদাতা নাস্তিক মুরতাদদের মুখপাত্র-মদদদাতা টিভি চ্যানেল একাত্তর টিভি এবং ডিবিসি নিউজের টকশোতে বসে বসে ইসলামের শিক্ষা, ইসলামের মূল্যবোধের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানোর একটা অংশ হিশেবে, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্যান আরবি পড়ানো হয়, ক্যান আলিফ বা তা পড়ানো হয় সেটা নিয়ে ক্রুব্ধতা আর ক্ষুব্ধতার প্রকাশ ঘটায়!

অ- তে অজগর পড়ায় তাদের কোনো আপত্তি নেই, কিন্তু অ-অজু ক্যান পড়ানো হয় তা নিয়ে তীব্র আপত্তি তোলা হয়! ও-তে ওল পড়ুক, হাট্টিমাটিম টিম পড়ুক তাতে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু যখনই "ও-"তে ওড়না পড়ানো হচ্ছে তখনই খুশি কবিররা, শাহরিয়ার কবিররা আপত্তি আর উগ্রতা ছড়ানো শুরু করছে! সহযোগী হিসেবে মিডিয়া তো আছেই। তাও একাত্তর টিভি আর ডিবিসি নিউজ!

আচ্ছা, হাট্টিমাটিম টিমটিমের মতো অপ্রয়োজনীয়, অর্থহীন ছড়ার চেয়ে কি এসব হাজারগুণে ভালো না? আমি তো মনে করি শুধু যে ভালো, তা না! বরং প্রয়োজনীয় এবং এভাবে এসব ছড়া এসব বাক্য একটা সুন্দর মন মানসিকতা গঠনের জন্য অপরিহার্যও বটে। ইসলামের অনুসারীদের জন্য এই সুন্দর শিক্ষা দেয়া অবশ্যই কর্তব্য!


একজন শিক্ষক তার ছাত্রদের কাছে নামাজ পড়ছে কিনা জানতেই পারে, এবং তিনি মুসলিম হয়ে থাকলে এটা জিজ্ঞেস করা, নামাজ পড়ার জন্য মোটিভেশান করা অত্যাবশ্যকীয় কর্তব্যও বটে। কিন্তু এই নাস্তিক আর হার্ডকোর ইসলাম বিদ্বেষীরা এটা নিয়েও প্রকাশ্যে মিডিয়ায় বসে বসে আপত্তি তোলে, এবং তীব্র বিরোধিতা করে। এদের সব আপত্তিকর, বিভ্রান্তিকর দর্শন, চিন্তার মাঝে সরাসরি মদদ দিচ্ছে, সমর্থন দিচ্ছে একাত্তর টিভি এবং ডিবিসি আর তাদের কালপ্রিট সাংবাদিকেরা।

এদেশের অন্যতম একজন প্রবীণ আলিমেদ্বীন শাহ আহমদ শফি হুজুরের কথাকে কাট করে ওরা ওনার মতো বিদগ্ধ আলিমকে তেতুল হুজুর বলে কটাক্ষও করেছে,করে যাচ্ছে। এই মানুষটা মারা যাবার পরে একাত্তর টিভি ন্যূনতম ভদ্রতার পরিচয়ও দেয় নি, ওনার মতো প্রবীনতম একজন নাগরিক আলিম মারা গেছে, তারা নিউজ করেছে চরম অভদ্রভাবে – হেফাজত নেতা শফির ইন্তেকাল – এই শিরোনামে! কী বর্বর আর অসম্ভব অসভ্য এরা ভাবা যায়!!


এই যে পাতরা নীতিহীন কালপ্রিটগুলো, তারা ধর্ষণ বন্ধ করতে চায়, ধর্ষকের বিচার চায়। কিন্তু কখনোই তার মূল কারণ কী, সে বিষয় নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা করে নি। করে না। সঠিক আর গঠন মূলকভাবে। তারা যদিও ধর্ষণের জন্য মানসিকতাকে দা'য়ি করে, কিন্তু ধর্ষকের মানসিকতা কীভাবে, ক্যান নষ্ট হয়, নোংরা হয় তার কোনো সঠিক ব্যখ্যা দিতে পারে নি। দেয় নি। দেয় না।

এই যে একজন অভিনেতা (অনন্ত জলিল) ধর্ষেকদের নোংরা মন, অমানুষ বলে বক্তৃতা দিয়ে শেষে আবার মেয়েদের শালিন পোশাক পরার একটা উপদেশ প্রদান করেছে, তখনই তাদের গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে। তাকে ছলেবলে কৌশলে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। অথচ এই পাণ্ডার দলই কিন্তু ধর্ষণের জন্য ওয়াজ-মাহফিলকে দা'য়ি করেছে, এবং সেসব প্রচারণা চালাচ্ছেও অব্যাহতভাবে! পোশাকের কি সামন্যতম কোনো ভূমিকা নেই? যাই হেক আছে কী নেই সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চাই না আমি। সচেতন আর বিবেকবান অগণিত মানুষই তা বুঝতে পারবে। সীদ্ধান্তটা তাঁদেরই হাতে। তবে এটা সত্য ইসলাম নারীর পূর্বে পুরুষের দৃষ্টি অবনতির কথা বলেছে। তবুও কিছু অমানুষ কিংবা শয়তানের প্ররোচনা তো আছেই....


আমি যা বলতে চাই তা হলো মায়ের পেট থেকেই কি বিকৃত মানসিকতা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করে কেউ? নাকি মানসিকতা বিকৃত হওয়ার পেছনেও কিছু ফ্যাক্টর কাজ করে? যদি মানসিকতাই সম্পূর্ণরূপে দা'য়ি হয় তা হলে একজন ধর্ষককে জেলে না পাঠিয়ে হাসপাতালে পাঠানো উচিত! তাই না? অথচ এখন আমাদের দেশীয় সুশীলরা মানসিকতার দোষ দিলেও তাকে হাসপাতালে নেয়ার মানসিক চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে কোনো কথা বলছে না। একজন পুরুষ কি মায়ের পেট থেকেই বিকৃত মানসিকতা নিয়ে বেড়ে ওঠে? ধর্ষক হয়ে জন্মগ্রহণ করে? করে না! তাকে মূল্যবোধহীন সমাজ-পরিবেশ আর মূল্যবোধহীন শিক্ষাব্যবস্থা বিকৃত হতে সাহায্য করে।

এই যে মানসিক বিকৃতি, এর থেকে উত্তরণের জন্য কিন্তু কোনো পদক্ষেপ এই সমাজ এই রাষ্ট্র, এই রাষ্ট্রের নেতা এই সমাজের কর্তৃত্ববানরা নিচ্ছে না! বরং সামাজিক-ধর্মীয় মূল্যবোধ সৃষ্টি করতে যারা কাজ করে তাদেরই নানাভাবে হেনস্তা করার জন্যে এই মুসলিম প্রধান দেশে কাজ করে যাচ্ছে তারা।

এই সমস্ত টাউট, গণধিকৃত ফালতু মিডিয়া, সাংবাদিক, আর ভাড়াটে শ্রেণির বুদ্ধিজীবী নামক ধর্মদ্রোহীদের দৃষ্টিতে [b]একটা চরিত্রহীন মেয়েকে দুশ্চরিত্রা বলা দোষের[/b], কিন্তু শতো পুরুষের সয্যাসঙ্গীনি হওয়াটা দোষের না। বরং তাদের দৃষ্টিতে সে মেয়েরা নন্দিত এবং সাহসী নারী! কোনো প্রমাণ ছাড়া যুক্তি ছাড়া নিরপরাধ মানুষকে মানে ছেলেকে ধর্ষক বললে তার মানহানী ঘটে না, কিন্তু লম্পট্যপূর্ণ আর সহস্র পুরুষের স্বাদ নেয়া নারীদের বা অসংখ্য নারীদের ভোগ করা পুরুষদের চরিত্রহীন বা দুশ্চিরত্র/দুশ্চরিত্রা বলাটা নাকি দোষণীয়!

এরা নাটক সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে ইসলামি তাহজিব তমুদ্দুন, ইসলামি পোশাক-আশাককে কীভাবে তারা হেয় করার আয়োজন করে যাচ্ছে[/b] যুগের পর যুগ ধরে তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না! কী ভয়াবহ অবস্থা তৈরি করে যাচ্ছে এরা আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র আর পরিবারে!

এদের বয়কট করার সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে! এদের রুখে দেয়ার সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাচ্ছে! আসুন একটু তলিয়ে দেখি এদের খুঁটির জোর কোথায়? এদের পেছনে কারা? কারা এদের মদদদাতা-অর্থদাতা তাদের সামনে আনা এখন সময়ের দাবি! কী জন্যে এমন হার্ডকোর ইসলামদ্রোহী একাত্তর টিভি, ডিবিসি নিউজরা কয়দিন পরপর আলিমদের ওয়াজের কাটছাঁট করে ওয়াজ-মাহফিলের বিরুদ্ধে হিংসা ঘৃণার বিষবাষ্প ছড়ায়! এরা কার বলে কীসের বলে মুসলমানদের লাশ পুড়িয়ে ফেলার মতো জঘন্যরকম মানবতাবিরোধী কথা বলে? কীসের শক্তির বদৌলতে এই ঘুটিকয়েক সমাজচ্যুত রামবামদের মুখপাত্র একাত্তর টিভির মসজিদকে জায়গা দখলের বিষয় বলে ঘৃণা ছড়ায়? এদের উদ্দেশ্য কী মতলব কী সবই আজ মানুষের সম্মুখে দিবালোকের মতো স্পষ্ট!


|[b]|মিডিয়ায় ইসলাম বিদ্বেষ||
-রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ৬৮৬ বার

মন্তব্য: ০