Alapon

মুক্তচিন্তার অপর নাম যে ইসলাম বিদ্বেষ, তা এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট...



ইংরেজি ভাষা শেখার চেষ্টা করছি। দিন কয়েক আগে এক বড় ভাইয়ের সাথে ইংরেজিতে কথা বলতেছিলাম। বলা যায়, প্রাকটিস করছিলাম। সেই বড় ভাই বললেন, তোর উচ্চারণ তো দিন দিন বেশ ভালো হচ্ছে! শুনতে বেশ স্মার্ট লাগছে! চালিয়ে যা। তার প্রশংসার জবাবে বললাম, জাজাকাল্লাহু খইরান।
শেষের কথাটা শুনে সেই ভাই ভ্রু কুঁচকে বললেন, ‘তুই তো বাংলায় ধন্যবাদ দিতে পারতি! আরবী সংস্কৃতির প্রতি এতো বাড়তি টান কীসের?’

তখন আমি তাকে বললাম, ‘ভাই, একটু আগে আমি শুদ্ধ উচ্চারণে যখন ইংরেজিতে কথা বলছিলাম, তখন তো অনেক প্রশংসা করলে। আর যখন আরবী ভাষায় তোমাকে ধন্যবাদ জানালাম, বলতে পারো ধন্যবাদের চেয়ে আরও বেশি কিছু জানালাম তখনই বিপত্তিটা ঘটল। ইংরেজি বললেই আপনার বা আপনাদের কাছে হয়ে যাই স্মার্ট আর আরবী বললেই সমস্যা?’

প্রগৃতির দাবিদাররা ভিনদেশি যেকোনো সংস্কৃতিকে সাদরে গ্রহণ করতে পারলেও, ইসলামের সাথে সম্পর্কিত কোনো কিছুই তারা সহজে মেনে নিতে পারে না।

আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল ছাত্র তাদের র‌্যাগ ডে তে জুব্বা ও ও পাগড়ি পরিধান করেছিল। তখন এটা নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছিল একাত্তর টেলিভিশন। একাত্তর টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা সেই ব্যাচের একজনকে প্রশ্ন করেছিল, দেশিয় সংস্কৃতি থাকতে আপনারা ভিনদেশি সংস্কৃতির পোশাক পরিধান করে উদযাপন করতে গেলেন কেন?
মজার বিষয় হচ্ছে, প্রশ্নকারী উপস্থাপিকা নিজেই শার্ট-প্যান্ট পরিহিত অবস্থায় ছিলেন। একাত্তর টেলিভিশনের উপস্থাপিকা নিজেই শার্ট-প্যান্ট পরে সংবাদ পাঠ করলেও তাতে আমাদের দেশিয় সংস্কৃতিতে কোনো আঘাত আসে না। কিন্তু যেই না কুয়েটের শিক্ষার্থীরা জুব্বা ও পাগড়ি পরিধান করল, অমনি দেশের সংস্কৃতি ধ্বংস হয়ে গেল!

প্রগতিশীলরা যখন দেখছে, বর্তমান সময়ের অধিকাংশ তরুণেরা ইসলামের দিকে ঝুঁকছে তখনই তারা ইসলামের বিরুদ্ধে এমন উঠে পড়ে লেগেছে!

একটা সময় ছিল ফজরের ওয়াক্তে মসজিদে এক কাতার মানুষও হতো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে এর চিত্র পাল্টে গেছে। ফজর ওয়াক্তেও এখন উল্লেখযোগ্য নামাজির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। নামাজিদের অধিকাংশরাই আবার তরুণ প্রজন্ম। আর জুমাবার শুক্রবারের দিনগুলোতে নামাজের সময় তো পুরো ঢাকা শহরের চিত্রই পাল্টে যায়। মসজিদে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় নামাজিরা রাস্তায় জায়নামাজ বিছিয়ে দাড়িয়ে যায়। যার জন্য দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বে নিয়োজিত থাকা পুলিশ বাহিনী জুমার নামাজের সময় রাস্তাগুলো একমুখি করে দেয়। আর অন্য রাস্তায় নামাজের ব্যবস্থা করা হয়।

যে দেশে শাহবাগে নাস্তিকদের মিলনমেলা বসতো সে দেশে এখন নামাজের জন্য রাস্তা বন্ধ করতে হয়। এই চিত্র দেখে তো প্রগতিশীলদের মাথা খারাপ অবস্থা হবেই। আর তাদের অবস্থা এতোটাই শোচনীয় যে, তারা এখন শুদ্ধ সালামের প্রচলনকেও নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করছে! যদিও প্রগতিশীলরা নিজেদের মুক্তচিন্তার দাবি করে থাকে, কিন্তু যখনই ইসলাম প্রসঙ্গ আসে তখনই তাদের অন্তরের সংকির্ণতা প্রকাশিত হয়ে যায়। এই মুক্তচিন্তার অপর নাম যে ইসলাম বিদ্বেষ, তা এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট।

পঠিত : ৩৬৫ বার

মন্তব্য: ০