Alapon

অনিচ্ছা-ইচ্ছায় জড়িয়ে পড়া হারাম থেকে বাচার উপায়



এত এত মানুষের ভীড়ে হয়ত একজন মানুষকে মন থেকে সারাজীবনের জন্য চেয়েছিলেন আপনি।
.
আপনার কাছে অপছন্দের কিন্তু তার কাছে পছন্দের জিনিসগুলোকেও হয়ত নিজের পছন্দের উপরের তালিকায় নিয়ে এসেছিলেন, শুধুমাত্র তাকে ভালোবেসেই।
.
তার প্রতি কখনও ডিজঅনেস্ট হন নি। খুব বেশি করেই চেয়েছিলেন, আপনাদের বিয়েটা যাতে হয়ে যাক।
.
এই দোলাচলে থাকা জীবনের অবসান চাচ্ছিলেন খুব বেশি করে।
.
.
কিন্তু........................
.
.
কিন্তুু.....
আল্লাহর ইচ্ছা হয়ত! অন্যরকম ছিল।
.
সেই সময়টাতে আল্লাহ আপনাকে ইসলামের সৌন্দর্য বোঝার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিছুদিন পরে জানলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সেই বিখ্যাত হাদিস, যেইখানে তিনি স্পস্ট করে বলেদিয়েছেন:-
একজন বেগানা (যাদের বিয়ে করা জায়েজ, আরবী পরিভাষায় একে গাইরে মাহরাম বলে।) নারীর শরীরের কোন অংশ স্পর্শ করার চেয়েও তিনি পেরেক দিয়ে মাথা চিড়ে ফেলাকে অধিক পছন্দ করবেন। এসব আসতে থাকলো আপনার চোখের সামনে অহরহ। নিজেই বুঝতে পারছিলেন, নিজের সাথে নিজে প্রতারণা করছেন প্রতিদিন।
.
মহান আল্লাহকে ভালবেসে, যেই আমলগুলো করছেন, দিন শেষে টা একবার "হ্যালো" বলার সাথে সাথে সব পানির মত তরল হয়ে যাচ্ছে।
.
ডেইটিং এ গিয়ে তার হাত ধরতেই ঈমানের লেভেলটা যেন কমে আসছে। এ থেকে মুক্তি চাচ্ছেন, আবার ফিরেও আসতে পারছিলেন না।
.
মহান আল্লাহ যেই বুঝ দিয়েছেন, তা সব জায়গায় ব্যবহার করতে পারলেও এই জায়গাতেই কেন জানি বারবার নিজের সাথে পরাজিত হচ্ছিলেন প্রতিনিয়ত ।
.
.
.
তাহলে এখন আপনার জন্যে সামনে দুইটা পথ খোলা আছে!
.
১. তাকে যত দ্রুত সম্ভব বিয়ে করা।
.
২. তানা হলে এখনই তাকে গুডবাই বলা।
.
.
.
কি?;কি ভাবছেন???কোনটা করবেন??????
.
.
প্রথম শর্তে তাকে বিয়ে করতে পারেন।
কিন্তু শুরুতেই আপনার মনে আসলো তার চালচলন। আপনি তাকে শুধু যে নিজের স্বামী/ স্ত্রী করে পেতে চাইছেন তা কিন্তু নয়।
.
.
তিনি আপনার ভবিষ্যত সন্তানের বাবা/ মা।
.
যিনি এখনই ইসলাম পালন করছেন না, দাড়ি রাখতে পারছেন না, পরিপুর্ন পর্দা করতে পারছেন না, সিগারেট টা ছেড়ে দিতে পারছেন না, গান- বন্ধু- আড্ডার পৃথিবী থেকে এখনও নিজেকে সরিয়ে আনতে পারছেন না, তাকে কিভাবে নিজের স্বামী/ স্ত্রী বানাবেন?????????
.
.
.
আপনি বুঝতে শিখে গিয়েছেন-
আপনি এই দুনিয়া নয় বরং পরের দুনিয়ার জন্য বাঁচবেন। একজন মুমিন যে এভাবেই চিন্তা করবে। এরপর তাকে দাওয়াত দিলেন ইসলামের, যতটুকু সম্ভব,যেভাবে সম্ভব!
.
.
আপনি জানেন, কাজটা ঠিক হচ্ছে না। কারণ, সে আপনার জন্য গাইরে মাহরাম,হারাম।
.
তাকে ইসলামের দাওয়াত দিবে তার সেইম জেন্ডারের কেউ,আপনি না।
.
ছেলে হলে তাকে অন্য ছেলে, মেয়ে হলে তাকে অন্য মেয়ে দাওয়াত দিবে।
.
.
আপনি বড়জোড় যা করতে পারেন- তেমন কোন ছেলে/ মেয়ের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে। সেটাও অবশ্য বাকি রাখেন নি।
.
মোদ্দাকথা, তাকে যতভাবে সম্ভব, বুঝানোর চেষ্টা করেছিলেন।
.
.
কিছুতেই যেন সে আপনার হাত ছাড়া না হয়।
.
কিন্তুু সেও এসব বুঝছিল না। আপনার মাঝে মধ্যে এটা ভেবে অবাক লাগতো কীভাবে একজন মানুষ মহান আল্লাহর পরিচয় পেয়েও তাঁকে অস্বীকার করে (মুখে ঈমান এনেছি বললে, সারাজীবনে একবার কালেমা পড়ে- ব্যক্তিজীবনে তার প্রভাব না পড়লে তা আল্লাহর প্রতি মিছে ভালবাসা)?
.
আপনার কাছে ব্যাপারটা যতটা সহজ তার কাছে ঠিক ততটাই কঠিন। কি করবেন????
কি করবেন? কি করবেন???
.
.
ভাবকে ভাবতে.....
এই পরিস্থিতি আপনাকে অবশেষে ২ নাম্বর অপশনে নিয়ে এল।
.
ভাবতে ভাবতে সিদ্বান্ত নিলেন তাকে গুডবাই বলেই দিবেন।
.
.
কিন্তুু আবার বাধা হয়ে আসলো, এতদিনের সবকিছু, আপনার প্রতি তার নির্ভরতা, কত মধুর স্মৃতি- আপনি সবই জানেন, সবই বুঝেন,সবই মনের মাঝে এখনও রয়ে গেছে।
.
.
তারপরেও এটা বুঝেছেন- যে কিছু ছেড়ে দেওয়াটাই আসলে পাওয়া হিসেবেই ফিরে আসবে।
.
.
এটাই ঈমান....
তাকে খুব অসহায় অবস্থায় রেখেই চলে আসলেন। আপনি যে খুব ভাল আছেন, তাও নয়। আপনি মহান আল্লাহর জন্যেই ছেড়ে দিয়ে এসেছেন। সবর করেছেন।
.
.
হয়ত তার কথা কখনই ভোলা যাবে না,যাবেনা তার সাথের জড়িয়ে থাকা সেই সব ময়াবি মধুর সৃতি!
.
কিন্তু, এটাও জানেন যে,সে আপনাকে যতটুকু ভালোবাসত, মহান আল্লাহ যে তার চেয়েও বেশি আপনাকে ভালোবাসেন।
.
.
আপনাকে জীবন দিয়েছেন, মুসলিম বানিয়েছেন, ইসলাম বুঝিয়েছেন, এত অবাধ্যতা সত্ত্বেও প্রতিবেলা খাবার দিচ্ছেন,আলো-বাতাস-পানি সহ হাজারও নিয়ামতে ডুবিয়ে রেখেছেন।
.
.
তো,কিভাবে মহান আল্লাহর অবাধ্য হবেন?
একজন জীবন থেকে চলে গেলে আরেকজন পাবেন। কিন্তু, মহান আল্লাহ যদি আপনাকে ভাল না বাসেন,
মহান আল্লাহ যদি রাগ করে থাকেন, কার কাছে যাবেন???????
.
কাকে বলবেন নিজের সব দুর্লব ব্যাথা ব্যদনা????
কষ্টের কথাগুলো কার কাছে বলে কাঁদবেন????
.
চিন্তা কি করেছেন কখনও???
.
.
.
তাই শেষ পর্যন্ত মজান আল্লাহকেই বেছে নিয়েছেন।(আল হামদুলিল্লাহ)
.
ভাই আমার, বোন আমার, ওয়াল্লাহি, আপনি ঠকেন নি।
.
অবশ্যই অবশ্যই আপনি ঠকেন নাই!
.
মহান আল্লাহ আপনার কষ্ট দেখেছেন, শুধুমাত্র মহান আল্লাহর জন্য কিসের ভিতর দিয়ে গিয়েছেন, মহান আল্লাহ তা জানেন,বুঝেন।
.
মনে রাখবেন ভালো কাজের প্রতিদান মহান আল্লাহ নষ্ট করেন না।
আল্লাহ তা'য়ালা আপনার সামনের দিনগুলোতে এমন কিছু উপহার দিবেন, যা কল্পনাই করেন নাই
.
তাই, সিজদায় পড়ে যান.....
.
সব কিছু কেঁদে কেঁদে বলুন,বার বার বলুন,বলতেই থাকেন!
.
কথা দিচ্ছি ভাই-বোন!
.
ইন শা আল্লাহ আজকের এই দুঃখ কষ্ট গুলো একদমই ভুলে যাবেন,ভুলিয়ে দিবেন।
.
.
.
এক বোনের ওয়াল থেকে নেয়া।
.
আল্লাহ তার সাওয়াবের সাথে আপনাকে/আমাকেও কবুল করেন।
.

পঠিত : ১৪১২ বার

মন্তব্য: ০