Alapon

রাসূলের অপমানে সহীহ আক্বীদার আলিমদের মন কাঁদে না কেন...?



গোটা মুসলিম উম্মাহ যখন ফ্রান্স ও ফ্রান্সের পন্য বয়কট করার ডাক দিয়েছে, তখন ব্রিটেন তাদের পাশে থাকার অঙ্গিকার করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের পাশের থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এমনকি আমাদের পাশ্ববর্তি রাষ্ট্র ভারতও ফ্রান্সের পাশে থাকার অঙ্গিকার করেছে। এতে কতক মানুষকে ভীষণ অবাক হতে দেখলাম। কিন্তু এটাতে তো অবাক হবার কিছু নেই। বরোঞ্জ এই ঘটনার দ্বারা আল্লাহর কথাই সত্য হয়ে যায়। সকল কাফেররা এক জোট।

আর এই জোটের অংশ হিসেবে খুব সম্ভবত ইউরোপিয় ইউনিয়নের আগামী সভায় তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে। কারণ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টকে মানসিক বিকারগ্রস্থ বলেছেন। সেইসাথে ফ্রান্সের পন্য বয়কট করার জন্য বিশ্ববাসীর কাছে আহব্বান জানিয়েছেন। আর তার আহব্বানে সাড়া দিয়ে গোটা বিশ্বের মুসলিম জনতা ফ্রান্সের পন্য বয়কট করেছে। আর এতে করে ফ্রান্সের অর্থনৈতিক বাজারে বেশ ভালোই প্রভাব পড়েছে। আর এ কারণে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট আরব দেশগুলোকে পন্য বয়কট না করার জন্য অনুরোধ করেছে।

আমার অবাক লাগছে, এই ইসুত্যে প্রধান প্রধান আরব দেশগুলোর ভূমিকা দেখে। কিছুদিন আগেই সৌদি আরব রাষ্ট্রিয়ভাবে ঘোষণা দিয়ে তুরস্কের পন্য বয়কট করার ঘোষণা দিয়েছে। সেইসাথে দেশের ব্যবসায়ীদের বলেছে, যেন তুরস্কের পন্য আমদানি করা না হয়। একই পথে হেটেছে আরব আমিরাত বাহরাইন ও মিশর। সৌদি আরব নিজেদের স্বার্থে রাষ্ট্রিয়ভাবে ঘোষণা দিয়ে তুরস্কের মত মুসলিম দেশের পন্য বয়কট করার ঘোষণা দিতে পারে। কিন্তু নবিকে অবমাননার প্রশ্নে সৌদি আরব এখন পর্যন্ত রাষ্ট্রিয়ভাবে ফ্রান্সের পন্য বয়কট করার আহব্বান করেনি। এমনকি সৌদি সরকার যে বিবৃতি প্রদান করেছে, সেখানে ফ্রান্সের নাম উল্লেখ করে কিছুই বলা নেই। আর আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশরসহ অন্যান্য আরব দেশ তো নুন্যতম বিবৃতি দেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেনি। অথচ কিছুদিন আগে তারা নিজেদের স্বার্থে তুরস্কের নাম ঘোষণা দিয়ে পন্য বয়কট করার আহব্বান জানিয়েছে।

আরও মজার বিষয় হচ্ছে, সৌদি পন্থি মাদখালি আলিমরা ফ্রান্সের বিরুদ্ধে মিছিল, মিটিং, কুশপত্তলিকা দাহ করাকে হারাম ঘোষণা দিয়েছে। অথচ সৌদি পন্থি এই মাদখালিরা নিজেদের একমাত্র সহী আক্বীদার মুসলিম বলে দাবি করে। তাহলে সহীহ আক্বীদার এইটাই নমুনা। যে আক্বীদা নবির অপমানে কষ্ট পায় না, যে আক্বীদা নবির অপমানে প্রতিবাদি করে তোলে না, যে আক্বীদা নবিকে অবমাননা করা স্বত্বেও সত্য বলতে অনুপ্রাণিত করে না, সেই আক্বীদা আর যাই হোক সহীহ হতে পারে না। তারা তাবেদার, গোলামি আক্বীদার আলিম। আর ইসলামি জ্ঞান রক্ষার আলিম নয়, তারা সৌদি রাজপরিবারের সিংহাসন রক্ষার আলিম। আর এই আলিমদের উদ্দেশ্য করেই হয়তো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলে গেছেন-

"রাসূলের অপমানে যদি না কাঁদে তোর মন,
মুসলিম নয় মুনাফিক তুই, রাসূলের দুশমন"।

যদিও এরা নিজেদের সহীহ আক্বীদার মুসলিম দাবি করছে, তবে বাস্তবিক অর্থে তারা রাসূলের দুশমন। আর ব্রিটেন, আমেরিকা, ইউরোপিয় ইউনিয়নের যে জোট ফ্রান্সকে সহযোগিতা করে যাচ্ছে, সেই জোট হল কাফেরদের জোট। সেই জোটে যদি সৌদি ও আমিরাত বলয়ও একাত্মতা প্রকাশ করে, তবে তাদের কাফের বলতেও আর বাধবে না।

পঠিত : ৫৫৫ বার

মন্তব্য: ০