Alapon

সৈন্যরা যুবকদের তাদের নিজের মা ও বোনদের হত্যা বা ধর্ষণ করতে বাধ্য করত।



রাবারের লোভে উন্মত্ত হয়ে উঠা ইউরোপিয়ানরা রাবার সংগ্রহের জন্য স্থানীয়দের জন্য কোটা বেধে দিত, ব্যর্থ হওয়ার শাস্তি মৃত্যু। রাবার সরবরাহ করতে অস্বীকার করলে পুরো গ্রাম মুছে ফেলা হত। একবার এক গ্রামের পুরুষদের মাথা কেটে গ্রাম পলিসেডে বা লোহা বেড়ায় ঝুলিয়ে দিয়ে নারী ও শিশুদেরকে পলিসেডে একটি ক্রসের আকারে ঝুলানোর আদেশ দেয়া হয়েছিল।

একটি বর্ণনা আছে। কাটা হাতের ঝুড়ি, ইউরোপীয় পোস্ট কমান্ডারদের পায়ের কাছে রাখা হত যা কিনা ছিল কঙ্গো ফ্রি স্টেটের প্রতীক। সৈন্যদের বলা হত হয় রাবার দাও নয়ত কাটা হাত। কাটা হাত এক ধরণের মুদ্রায় পরিণত হয়েছিল। সৈন্যরা কতটা হাত সংগ্রহ করেছিল তার ভিত্তিতে তাদের বোনাস প্রদান করা হত।
কিছু ক্ষেত্রে কোন কোন গ্রাম পাশের গ্রামে আক্রমণ চালাত কাটা হাতের জন্য, রাবারের কোটা পূরণ করা কঠিন হয়ে পড়লে।

১৮৮৪-৮৫ সালের বার্লিন সম্মেলনে ইউরোপীয় দেশগুলো পুরো আফ্রিকা ভাগাভাগি করে গিলে ফেলার ব্যবস্থা করে, অনেকটা কেক কাটার মত করে। বেলজিয়ানদের দ্বিতীয় রাজা লিওপোল্ডের ভাগে পরে বর্তমান গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের কঙ্গো। ১৮৮৫ থেকে ১৯০৮ সাল পর্যন্ত যেটি ফ্রি স্টেট নামে পরিচিত।

রফতানির জন্য প্রাকৃতিক রাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে নরপিশাচ লিওপোল্ড, অনেকের মতে প্রায় দেড় কোটি কঙ্গোলিজদের হত্যা করে।

তার নৃশংসতা থেকে শিশুরা রেহাই পায়নি। "শিশু উপনিবেশ"তৈরি করা হয়েছিল লিওপোল্ডের নির্দেশে। অনাথ কঙ্গোলিজ শিশুদের অপহরণ করে পাঠানো হত ক্যাথলিক মিশনারি স্কুলে কাজ করার জন্য কিংবা সৈন্যে পরিণত হওয়ার জন্য। রোগে মারা যেত অর্ধেক, হাজার হাজার শিশুরা মারা যেত শিশু উপনিবেশের যাত্রা পথে।
সারা পৃথিবীতে সভ্য পশ্চিমাদের অত্যাচারের কাহিনী লিখে শেষ করা যাবে না। পশ্চিমাদের উন্নতিতে সারা দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষের রক্ত মিশে আছে। যা আমাদের দেশের সাদা চামড়াদের তল্পিবাহকরাও ভালোভাবে জানে। আমাদের দেশেও নাকি ব্রিটিশ নীলকররা নীলের চাষ না করলে বিশেষ করে বাংলাদেশের কৃষকদের হাত কেটে ফেলত।

সারা পৃথীবিতে হাজার হাজার মানুষ মারা গেলেও এই তল্পিবাহকদের বিবেক অন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু একটা সাদা চামড়ার কিছু হলেই আহাজারি শুরু করে সভ্যতা গেল বলে।

ফরাসীরা ১৫ লাখ আলজেরিয়ানকে হত্যা করেছিল, উপনিবেশ গড়তে। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর আলজেরিয়ানদের ফ্রান্সে আনা হয়েছিল, যুদ্ধে বিধ্বস্ত ফ্রান্স গড়ে তোলার জন্য। এখন আলজেরিয়ান কিংবা আফ্রিকান কিংবা মুসলমানেরাই ফরাসীদের সভ্যতার জন্য হুমকিস্বরূপ। আলজেরিয়া ছাড়াও আরো অনেক দেশ ফরাসীদের অত্যাচার সহ্য করেছে কয়েক শ বছর। এই ফরাসীরা এখন আমাদের শেখাচ্ছে ফ্রিডম অব স্পিচ আর শেখানের পন্থাটি উপনিবেশবাদের কথা মনে করিয়ে আমাদের কিন্তু সেটি বুঝতে পারেনা কিছু কুলাঙ্গার বা সাদা চামড়াদের তল্পিবাহক।


~ফারজানা ঐশি

পঠিত : ৬৪৮ বার

মন্তব্য: ০