Alapon

সময় কি হয়নি প্রস্তুত হবার??

এমন একটা দিন আসবে যেদিন আপনার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অনবরত কারো ফোন বাজতে থাকবে, ক্ষুদেবার্তা গুলো গন্তব্যের উদ্দেশ্যে হাওয়ায় ভাসবে, মানুষজন টুইট করবে, স্ট্যাটাস দিবে, পোস্টার টাঙানো হবে। শুধু আপনি ই থাকবেন না।”

উপরোক্ত কথাগুলো মুফতি মেংকের একটি লেকচার থেকে শুনছিলাম....

মৃত্যু! কথিত আছে যে,, মৃত্যু সৃষ্টিজগতের এমন এক মহাসত্য, যা থেকে সবাই পালিয়ে বাঁচতে চায়! কথাটা কিছু টা ভুল.. একজন মুমিন কখনো মৃত্যুকে ভয় পায় না, মৃত্যু থেকে পলায়ন করতে ও চায় না। তাহলে কেনো মৃত্যুর কথা স্মরণ হলে সাহাবীরা(রাঃ) অশ্রুপাত করতেন? কারণ, তারা আখিরাতের ভয়ে ভীত ছিলেন। তারা সর্বদা চিন্তায় থাকতেন, যা আমল করেছি- তা কি আমার আখিরাতের রসদ যোগাবার জন্য যথেষ্ট?! এই ভয়ে এমনকি জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত সাহাবীরাও সারারাত জেগে আল্লাহর দরবারে রোনাজারি করে চোখ ফুলিয়ে ফেলতেন।

সুবহানাল্লাহ! আর আমরা কোথায় আছি? কোন বিষয় টা আমাদেরকে এত স্বস্তির মাঝে থাকার সুযোগ করে দিলো? জান্নাতের গ্যারান্টি কি আমি পেয়ে গিয়েছি? না ই যদি পেয়ে থাকি, তবে আমি কীভাবে দুনিয়ার অর্থের পিছনে ছুটে চলছি অনবরত?

পার হওয়া প্রতিটা সেকেন্ড আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রাপ্ত নতুন সুযোগ!৷ নিজেকে শুধরে নেবার, রব্বের কাছে প্রত্যাবর্তনের, পরকালের জন্য নিজকে প্রস্তুত করবার, আল্লাহর নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করবার! অথচ আমি কি করছি? ক্রমাগত নাফরমানি করে চলেছি। এখনো কি তবে আমার সময় আসে নি আল্লাহর স্মরণে অন্তর বিগলিত করবার?

এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে আমাদের সবাইকে ই একদিন চলে যেতে হবে। এটাই আল্লাহর ইচ্ছে। তাহলে তো মৃত্যুকে ভয় পাবার কিছু নেই। ঈমানদার হতে আমরা সবাই ই চাই। তাই মুমিন হিসেবে এক্ষেত্রে আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে নিজকে জাহান্নামের জ্বলন্ত আগুনের জ্বালানি হওয়া থেকে রক্ষা করা এবং জান্নাতের ফুলবাগানে মনোহর পরিবেশে পায়চারী করবার জন্য নিজকে প্রস্তুত করা।

আল্লাহর কাছে আপনার আমলনামা পেশ হবার সেই দিন টি আসার পূর্বে ই দুনিয়াতে নিজের আমলনামা নিজে যাচাই করার অভ্যেস গড়ে তুলুন। প্রতিদিন সব কাজ শেষে আয়নার স্পষ্ট প্রতিফলনপর ন্যায় নিজ আমল খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করুন। কতোটি ভালো কাজ আপনার দ্বারা হয়েছে এবং কতোটি খারাপ কাজ আপনার দ্বারা সংঘটিত হয়েছে- তা নিরূপণ করুন। এবার আপনি ই নাহয় ভেবে দেখুন, আপনার এ আমল কি কোনভাবে আপনাকে জান্নাতের সুঘ্রাণ দিতে সক্ষম?! আল্লাহর সন্তুষ্টি পাবার জন্য যা কিছু করা প্রয়োজন করছেন কী? কোন কাজগুলো জান্নাতে যাবার জন্য সহায়ক, সেগুলো আইডেন্টিফাই করুন এবং বেশি বেশি আমল করুন।

কোন একটা পরীক্ষা সামনে যেকোনো সময় হতে পারে, জানবার পর আমাদের প্রথম কাজ হয়, সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া! কারণ কখন হবে তা তো জানা নেই। মৃত্যু আপনার কাছে কখন আসবে, তা আপনি জানেন ও না! অথচ আপনি দিব্যি হাসি-তামাশায় মত্ত! হয়তো আজ ই আপনার জীবনের শেষ দিন! নিজকে সমর্পণ করুন আল্লাহর কাছে। আখিরাতের পাথেয় সংগ্রহে নিয়োজিত হন কঠোরভাবে। দেরি যেনো না হয়ে যায়…….

আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন। আমীন।

।। সময় কি হয়নি প্রস্তুত হবার??।।
~~ সাবিহা

পঠিত : ৫৭০ বার

মন্তব্য: ০