Alapon

চলুন, আজ থেকে আল্লাহর রাসূলের জীবনী পড়ি...



দুর্ঘটনাক্রমে কোন ব্যক্তির সন্তানের জন্মদিন ও মৃত্যুদিন যদি একই হয়ে যায়। তাহলে প্রতিবছর ঐ তারিখ যখন আসবে তখন পিতা-মাতার কাছে কোন দিনটির কথা আগে মনে পড়বে?

- কোন ব্যক্তির নতুন গাড়ীর কেনার তারিখ ও এক্সিডেন্টের মাধ্যমে পঙ্গু হবার তারিখ যদি একই হয় এবং বছর ঘুরে সেই তারিখ সামনে আসে তাহলে তিনি দুটোর মধ্যে কোন স্মৃতির কথা আগে মনে করবেন?

- কোন ব্যক্তির বিয়ের তারিখ ও তাদের একজনের দুনিয়া ত্যাগ কিংবা মারাত্মক আহত হয়ে বিছানায় যাবার ঘটনা ঘটে এবং বছর ঘুরে যখন সেই তারিখটি সামনে আসে, তখন কোন ঘটনাটি আগে মনে দাগ কাটবে?

যদিও একই তারিখে এ ধরনের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তারপরও আপনারা নিজেরাও নিজেদের কিছু ঘটনাকে কল্পনা করুন। দেখা যাবে সর্বদা পরের ঘটনাটিই বেশী কষ্টের কারণ হবে। এটিই স্মৃতিকে বেশী আঘাত দিবে। এটাই বারে বারে মনে পড়বে।

তাহলে আমাদের প্রিয় রাসুল (সা) এর ক্ষেত্রে আমাদের উল্টো আচরণ কেন? তিনি তো জগতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মহামানব। মুসলমানেরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে তাঁকে তারা হুবহু অনুসরণ করবেন।

সবাই জানে তার মৃত্যুর তারিখ ১২ই রবিউল আউয়াল। তাই এই দিনটি প্রতিটি মুসলমানদের জন্য বড় বেদনার দিন। এদিনে মদিনায় তাঁর সাথীরা এই খবরে পাগল হয়ে উয়ে উঠেছিল। বৃদ্ধ বয়সে ক্রীতদাস বেলাল (রাঃ) কে একদা মসজিদে নববীতে আজান দিতে অনুরোধ করা হলে তিনি আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বাক্যটি পুরো বলতে পারেন নি। নবী বেঁচে নেই এই কথা মনে পড়ে তিনি বেহুশ হয়ে পড়েছিলেন। তাঁর স্ত্রীদের ঘর থেকে আনন্দ উবে গিয়েছিল। তিন মাস চুলায় আগুন জ্বলেনি!

এমন ছিল রাসুল (সা) এর প্রতি ভালবাসা ও মানুষের হৃদয়ের অনুভূতি।

আবার বলা হয় ১২ই রবিউল আউয়াল শিশু মোহাম্মদ (সা) এর জন্মদিন। যদিও তারিখটি নিয়ে বিস্তর মতভেদ আছে। তারপরও ধরে নিলাম সেটিই সঠিক। তাহলে একই দিনে একটি উত্তম শিশুর জন্ম আর একই দিনে একজন মহামানবের বিদায়, দুটো ঘটনার গুরুত্ব, অনুভূতি কি এক হবে? যদি একই হয়, তাহলে আগে তার মৃত্যুর ঘটনার চেয়ে জন্মের ঘটনাটিই কি বেশী আলোচিত হবে? মানুষের বিবেক বুদ্ধি কি সায় দেয় যে, মহামানবের মৃত্যুর ঘটনার চেয়ে জন্মের ঘটনাটি বেশী প্রাধান্য পাবে!

নিশ্চয়ই নয়। উপরের মত এখানেও তাঁর মৃত্যুর ঘটনাটিই আমাদের বেশী কষ্ট দিবে। এটিই আলোচনার বিষয় হয়ে উঠবে এবং এমনটি হওয়াই বেশী যুক্তিযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক। যদি আমাদের কাছে ইতিহাসের জ্ঞান থাকে তাহলে আমাদের অন্য কারো কথায় পথভ্রষ্ট হবার সুযোগ থাকবে না।

তাই, এই মহা মানবের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আজ থেকেই আমারা তাঁর সীরাত তথা জীবনটি অধ্যয়ন শুরু করি। অধ্যয়নের পরে করণীয় ঠিক করে নেই এবং তাঁর আদর্শ মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেই। কেননা কারো আদর্শের পক্ষে কথা বলতে হলে আগে তার জীবনী জানাটা অপরিহার্য।

- টিপু

পঠিত : ৩৬১ বার

মন্তব্য: ০