Alapon

ধর্মান্ধ মুসলিম বনাম উদার মুসলিম

১.
সাকিব বলেছে সাকিব নাকি পূজো উদ্বোধন করতে যায় নি। অথচ সমস্ত মিডিয়া এই রিপোর্ট করেছে সে কালীপূজো উদ্বোধন করার জন্যই কোলকাতায় গিয়েছে।

তো মুসলিমরা যখন প্রতিবাদ করলো তখন সাকিব ক্ষমা চাইতে বাধ্য হলেন ও ক্ষমা চাইলেন। কিন্তু যদি সাকিব সত্য বলে থাকেন তবে উচিত ছিল মিথ্যে কথার দায়ে দেশিয় মিডিয়া হাউসগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা ও ব্যবস্থা নেওয়া অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য।

কিন্তু সেটা হবে না। দেশিয় সেক্যুলারগুলো ক্ষেপে যাওয়ার আগেই ধর্মান্ধ না এমন মুসলিম ও ইভেন একজন তাফসীরকারককেও দেখলাম মুসলিমদের মুণ্ডুপাত করতে। তারা নাকি যাচাই না করে সাকিবের বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছে।

সারাক্ষণ ট্রল করা মানুষরা এখন লাইভে এসে বলতে চাইছেন সাকিবকে নিয়ে ট্রল করা যাবে না। তার বিরুদ্ধে বলা যাবে না। অথচ তাদের কাছ থেকেই জেনেছি খালেদ মাহমুদ সুজনের নাম নাকি গদাখামাসু।

অথচ সাকিবের পূজো উদ্বোধন করার মিথ্যা খবর চাউর হবার পরেও মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় নাই এবং সাকিবও লাইভে এসে তার প্রতিবাদ করে নি। যত দোষ মুসলিমদের!

২.
বিবর্তনকে বিবর্তনবাদে পরিণত করেছে একদল নাস্তিক। তারা এর মাধ্যমে মুসলিমদের পৃথিবীতে মানুষ আসার বিশ্বাসকে নাড়িয়ে দিতে চেয়েছে গত প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে। তারা বিবর্তনকে ধর্মের মুখোমুখি করেছে।

বাংলা ব্লগিং জগতে এই নিয়ে ডিবেট তারা তৈরি করেছে। বিজ্ঞানের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ধর্ম ও বিজ্ঞানকে মুখোমুখি করেছে। বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে উড়িয়ে দিতে চেয়েছে।

এখন যখন গত কয়েক বছর ধরে আরিফ আযাদ পালটা ন্যারেটিভ তৈরি করেছে। তখন আরিফ আযাদ লেইম, তার যুক্তি স্ট্রং না ইত্যাদি শত ব্যাপার নিয়ে এসেছে ধর্মান্ধ না এমন মুসলিম ও সেই তাফসীরকারক। তাদের দাবি ইসলামকে বিজ্ঞানের মুখোমুখি নাকি আরিফ আযাদ করেছে। অথচ মূল ব্যাপার ছিল সে একজন নাস্তিকের লেখা বইয়ের বিরুদ্ধে যুক্তি দিয়েছে। যত দোষ মুসলিমদের।

৩.
মক্কার কুরাইশ, নজদের গাতফান ও মদিনার ইহুদিরা একজোট হয়ে মদিনা আক্রমণ করেছে। মদিনার মুসলিমরা দিশেহারা হয়ে পড়লো। মদিনাকে রক্ষা করার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে গর্ত খুঁড়তে লাগলো।

এইসময় মুহাম্মদ সা. এই দূর্বল অবস্থা দেখে ধর্মান্ধ নয় উদার(!) এমন অনেক মুসলিম আল্লাহর রাসূলকে সমালোচনার বাণে জর্জরিত করেছে।

এই কঠিন মুহুর্তে মদিনায় থাকা ও মুসলিমদের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকা ইহুদি গোত্র বনু কুরাইজা মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। সেই উদার মুসলিমদের অনেকে এই বিশ্বাসঘাতকতার জন্য মুহাম্মদ সা.-এর অযোগ্য নেতৃত্বকে দায়ী করেছে।

পরবর্তীতে ধর্মান্ধ মুসলিমদের একনিষ্ঠ আনুগত্য ও লড়াইয়ের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের বিজয় দিলেন খন্দকের যুদ্ধে। এরপর যখন আল্লাহর নির্দেশে মুহাম্মদ সা. বনু কুরাইজাকে শাস্তি দিতে গেলেন তখন সোচ্চার হতে দেখা গেল সেই উদার মুসলিমদের।

তারা মুহাম্মদ সা.-কে নসিহত করা শুরু করলো আপনি তো রহমাতুল্লিল আলামিন। আপনি কেন প্রতিশোধ নিবেন? আপনার উচিত ক্ষমা করা। আপনার উচিত ধৈর্য ধরা, আপনার উচিত সহ্য করা। ওদের ধৃষ্টতা দেখুন! ওরা মুহাম্মদ সা.-কে মুসলমানিত্ব শেখায়!

--------_-----------_--------------_-------
যখন ইসলামের ওপর আঘাত আসে তখন তাদের শব্দ শোনা যায় না। কিন্তু যখনই পালটা প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তখন তারা শান্ত থাকার নসিহত করে, উদারতার নসিহত করে। এদের পরিচয় সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা সূরা আহযাবে বর্ণনা করেছেন। আমার নতুন করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই।

পঠিত : ৪৫১ বার

মন্তব্য: ০