Alapon

"এক নজরে ইসলামি আন্দোলনের মহান নেতা শহীদ মুরসি রহিমাহুল্লাহ"



নাম : মুহাম্মাদ মুরসি ইসা আল-আইয়াত

জন্মেছেন : ৮ আগস্ট ১৯৫১

পড়াশোনা : তিনি ছোট্টবেলায় কুরআন হিফজ করেন। ১৯৭৫ সালে কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি অর্জন করেন। এবং ১৯৭৮ সালে ধাতব প্রকৌশল বিভাগে এমএস ডিগ্রি অর্জন করেন।

পিএচডি অর্জন : ১৯৮২ সালে ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডের ওপর গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

পেশাগত জীবন : ১৯৮২ সালে ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটিতে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ।

দেশে ফেরা : ১৯৮৫ সালে দেশে ফেরেন। এবং জাগাজিগ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকৌশল বিভাগের প্রধান অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১০ সাল অবধি উক্ত পদে বহাল থাকেন।

বৈবাহিক বন্ধন : শহীদ মুরসি ১৯৭৯ সালে নাগলা আলী মাহমুদকে বিবাহ করেন। তাঁদের ছিলো পাঁচজন সন্তান।

সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন :
তিনি সর্বপ্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ২০০০ সালে।

রাজনৈতিক শাখার প্রধান : ইখওয়ানুল মুসলিমিন তাদের রাজনৈতিক শাখা ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টি (এফজেপি) নামে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করলে শহীদ মুরসি ২০১১ সালে সেই দলের চেয়ারম্যান মনোনীত হন।

প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত : ২৪ জুন, ২০১২ সালে ৫১.৭ শতাংশ ভোট পেয়ে মিশরের ইতিহাসে একমাত্র এবং সর্বপ্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ৩০ জুন শপথ গ্রহণ করেন।

ক্ষমতাচ্যুত : মিশরীয় জালিম স্বৈরচারী গাদ্দার সেনাপ্রধান আব্দেল পাত্তাহ আল সিসি ৩ জুলাই ২০১৩-এ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে।

ইন্তেকাল : ইসলামী আন্দোলনের এই সিংহ পুরুষ স্বৈরাচারি গাদ্দার সিসির কারাগারে আটক অবস্থায় দুনিয়া থেকে চির বিদায় গ্রহণ করেন। মৃত্যুকালে এই মুজাহিদের বয়স ছিলো ৬৭ বছর।

মুরসির শাহাদাতে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের প্রতিক্রিয়া :

তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান মুরসির ইন্তেকালের খবর শুনে বলেন,
“মোহাম্মদ মুরসি আমাদের কাছে শহীদ। আমাদের ভাইকে আল্লাহ কবুল করুক। আমাদের শহীদের আত্মা শান্তি পাক। আমি আল্লাহর কাছে তাঁর জন্য রহমত কামনা করছি। সেই একনায়ক স্বৈরাচারী সিসিকে ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না। সে জনগণের ভোটে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুরসিকে জেলে বন্দি রেখেছে, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার ওপর নির্যাতন চালিয়েছে এবং তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে।”



এই এক অনন্য প্রেসিডেন্ট :

মিশরের অন্যান্য নেতারা সরকারি সকল অফিস আদালতে সরকার প্রধানের ছবি ঝুলানো বাধ্যতামূলক করেছিলো, যেটা আমাদের দেশেও আছে। আছে পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও। কিন্তু মুরসি এই কাজ করেননি। তিনি সকলকে নিষেধ করে দিয়েছিলেন যেন তাঁর ছবি কোথাও ঝোলানো না হয়।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবার পরে এই মহান নেতা বলেছিলেন যে,

আমি ভাড়া বাসা থেকে সরকারি ভবনে এসেছি, আমার পকেটে কোনো পয়সা নেই। আমি যখন চলে যাবো তোমরা তখন আমাকে পরীক্ষা করে দেখবে এরচেয়ে বেশি কিছু আমার কাছে পাও কিনা! যদি পাও, তবে ভেবো আমি খেয়ানত করেছি ।


শহীদ মুরসি প্রেসিডেন্ট হবার পরে তাঁর এক ভাষণে ইমামুদ দাওয়াহ শহীদ হাসান আল বান্না রহিমাহুল্লাহর উদ্ধৃত্তি দিয়ে বলেন-

কুরআন আমাদের সংবিধান,
রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম আমাদের নেতা,
জিহাদ আমাদের পথ,
আল্লাহর রাহে শহীদ হওয়া আমাদের সবচেয়ে বড়ো আকাঙ্ক্ষা,
দুনিয়ার সব কিছুর ওপর আল্লাহর সন্তোষই আমাদের লক্ষ্য।


আরো সংক্ষেপে মুরসির বিষয়ে বলতে গেলে এভাবে বলা যায় যে-

তিনি ছিলেন হাফেজে কুরআন,
তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান,
তিনি ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীল নেতা,
তিনি ছিলেন স্বচ্ছ ও আমানতদার নেতা,
তিনি ছিলেন ফ্রিডম এন্ড জাসটিস পার্টির চেয়ারম্যান,
তিনি ছিলেন মিশরের ইতিহাসে একমাত্র নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।



আল্লাহ এই মহান মুজাহিদকে শান্তিতে রাখুন। জালিমদেরকে দুনিয়া ও আখেরাত, দুজাহানেই অপমানিত করুন। মুরসিদের আত্মা চিরকাল হাসবে। তাঁদেরকে আমরা চিরকাল ভালোবাসবো। পক্ষান্তরে ফেরাউনের প্রেতাত্মা সিসিদেরকে চিরকাল ঘৃণা আর অভিসম্পাতই করে যাবো আমরা। করে যাবো সত্য পথের পথিক ঈমানদার জনতা.........

~রেদওয়ান রাওয়াহা

পঠিত : ৪৮০ বার

মন্তব্য: ০