Alapon

সুন্দরবন বাংলাদেশের অন্যতম পরিচয় বাহক....



আমরা অনেকেই বিদেশ ভ্রমণ করি। অথচ নিজের দেশে কত সুন্দর দেখার মত, উপভোগ করার মত কত জায়গা রয়েছে। আমরা সবাইকি দেশের সব জায়গা দেখেছি। না দেখেই বিদেশ ঘোরার জন্য পাগল। যাহোক এবার সুন্দর বনের কথা বলি।

স্কুলে পড়ার সময় বইয়ের পাতা থেকে জেনেছিলাম এই বন সম্পর্কে। চোখে দেখার এখনো সুযোগ হয়নি। সুন্দর এই রুপসী বাংলার বিশেষ আকর্ষণ সুন্দর বন। পদ্মা,মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্রের স্রোত দিয়ে তৈরি পৃথিবীর বৃহত্তর ব-দ্বীপ সুন্দরবন। পশ্চিম বঙ্গে গঙ্গার স্রোতের একেবারে শেষ প্রান্তে সুন্দরবন অবস্থিত। অসংখ্য খাল, বিল ছোট নদী এই অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে গেছে। পৃথিবীর মধ্যে ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদের সবচেয়ে বড় আবাসস্থল এই সুন্দরবন। সুন্দরী গাছে ভরা এই জঙ্গলের বৈশিষ্টকে মাথায় রেখেই সুন্দরবনের নামকরন করা হয়েছে।

সুন্দরবনের বর্তমান আয়তন, ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার। সুন্দর বনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার পৃথিবীর স্বতন্ত্র বাঘ হিসাবে পরিচিত। এমন বাঘ পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। এই বনের হরিণও আলাদা। সুন্দরবনে বাংলাদেশ অংশে ২০৬ টি বাঘ আছে। এখানে ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে। এখানে ১৫০ রকমের মাছ ও ২৭০ রকমের পাখীর দেখা মিলে। এখানে রয়েছে বৈচিত্রময় উদ্ভিদকূল। এখানে এমন কিছু উদ্ভিদ আছে যা বিশ্বের অন্যান্য বনভূমি থেকে আলাদা। ১৯০৩ সালের হিসেব অনুযায়ী সুন্দর বনে প্রায় ৩৩৪ রকমের উদ্ভিদ আছে। সুন্দরী, গরান, গেওয়া, কেওড়া এখানকার প্রধান উদ্ভিদ।বনভূমির পাশাপাশি সুন্দরবনের বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে নোনতা ও মিঠা পানির জলাধার, আন্তস্রোতীয় পলিভূমি, বেলে মাটিতে উম্মুক্ত তৃণভূমি এবং গাছ গুল্মের এলাকা।
এটি দেশের বনজ সম্পদের একক বৃহত্তম উৎস। বন থেকে আয়ের ৪১ শতাংশ আসে সুন্দরবন থেকে। নিউজ প্রিন্ট, দিয়াশলাই,হার্টবোর্ড, নৌকার আসবাব সুন্দর বন থেকে আহরিত কাচামালের উপর নির্ভশীল। এই বন প্রতিরোধ ও উৎপাদনমূলক ভূমিকা পালন করে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যে পরিমান অক্সিজেনের দরকার হয় তার বৃহৎ অংশ সরবরাহ করে সুন্দরবন।

সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তর ম্যানগ্রোভ বন হিসাবে পরিচিত। ম্যানগ্রোভ লবনাক্ত পানিতে শ্বাসমূল দিয়ে বেঁচে থাকা গাছ পালার বন। এই বনে এমন কিছু উদ্ভিদ আছে যা পৃথিবীর অন্যত্র পাওয়া যায় না।

এই বন সৌন্দর্যের প্রতীক। বনের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো দেখে, পশু পাখী, গাছপালা দেখে মুগ্ধ না হয়ে কেউ থাকতে পারে না। দেশ বিদেশের বহু পর্যটক মুগ্ধ হয়েছে এই বনের সৌন্দর্যে। এই বন বিশ্ব ঐতিয্যের অধিকারী হিসাবে পরিচিত। অপূর্ব এই বনটি সাহিত্য সংস্কৃতিকেও দিয়েছে পূর্ণতা। তবে সুন্দরবন বাঁচলে দেশ বাঁচবে কথাটি মনে প্রাণে বিশ্বাস করতে হবে এবং বাঁচাতে হবে এই বনকে।

পঠিত : ৩৬২ বার

মন্তব্য: ০