Alapon

বিয়ে এবং কিছু কথা...



"আমি বাইশ বছর তিন মাস বয়সে বিয়ে করেছি। কিন্তু আমি এখন চিন্তা করি আমার পনেরো থেকে বাইশ বছর অবধি যেসব কবিরা গুনাহ হয়েছে, সেগুলির দায়ভার কে নিবে আমি নাকি আমার বাবা? সিরিয়াসলি আমি এটা এখন চিন্তা করি। আমি আমার বাবাকে মাফ করে দেই, তার উপর আমার কোনো দাবি নাই।

শুধুমাত্র ঢাকা মহানগরের ৬৭ ভাগ স্কুল-কলেজের স্টুডেন্টদের জীবনের স্বাদ গ্রহণ করা হয়েছে, বিয়ের আগেই। আর এটা আমার জরিপ না, তথাকথিত সেক্যুলারদের জরিপ।
হ্যাঁ, সবার বিয়ে তাড়াতাড়ি প্রয়োজন এমন কোনো কথা নাই। যেমনঃ ইমাম ইবনুল তাইমিয়্যাহ (রাহি.) বিয়ে করেননি। আবার জনৈক সাহাবি এগারো বছর বয়সে বিয়ে করেছেন। এটা ব্যক্তি বিশেষে একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম।

আমি আমার ১৫ বছরের নাতিকে বলেছি, তোর যদি বিয়ে করতে হবে বলে মনে হয়, তুই যদি ফিল করিস বিয়ের প্রয়োজন, আমাকে বলবি। তোর আব্বা-আম্মা না মানলে, আমার বাসায় থাকবি তোর বউকে নিয়ে। আমি খেলে, তোরাও খাবি। যতদিন তুই নিজের পায়ে না দাঁড়াবি, আমার সাথেই থাকবি-খাবি।

রিজিকের মালিক তো আমি না। রিজিক দিবেন আল্লাহ!

ইয়াং জেনারেশন নর্দমায় গিয়ে পরতেসে, জাস্ট এটা (বিয়ে) না করার কারণে। ইয়াং জেনারেশনের মাঝে জরিপ চালান, দেখেন তারা কতো সময় সিনেমা দেইখা, গান শুইনা, পর্ণোগ্রাফি দেইখা, মাইয়্যা মাইনষের সাথে আড্ডাবাজি কইরা কাটাই দিতেসে।

আমার বউ আমার বারো দিনের ছেলেকে রেখে অনার্স পরীক্ষা দিয়েছেন। এবং তিনি অনার্সে ম্যাথম্যাটিকসে ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট! এটা একটা ভোঁতা যুক্তি যে, বিয়ে করলে পড়াশোনা হয় না, ক্যারিয়ার হয় না। বরং উল্টোটা। বিয়ে হইলে ছেলেপেলে ঘরে থাকবে, বনে-বাজারে ঘুরবে না, আড্ডাবাজি করবে না। পড়াশোনায় কন্সেন্ট্রেট বাড়বে, অন্তত আমি এটাই মনে করি এবং আমার জীবন থেকে অভিজ্ঞতা পেয়েছি।

আমাদের দেশে বিয়েতে অন্তত পাঁচটা প্রোগ্রাম করা হয়। গায়ে হলুদ, বৌ-ভাত ইত্যাদি ইত্যাদি। মূলত এসবের জন্যই বিয়ে দেরিতে দেওয়া হয়। এবং এসব কালচারের প্রায় সবক'টাই ইসলাম বহির্ভূত। ইহুদি-নাসারাদের চক্রান্তের ঢালস্বরূপ!

ধরেন, একটা ছেলের দশটা গার্লফ্রেন্ড ছিল। একজনের চুল সুন্দর, একজনের চোখ সুন্দর, একজনের হাসি সুন্দর তাইলে ব্যাপারটা হইলো কি সে যখন তার বউরে পাবে, তখন সে এই সব গুণ এক মেয়ের মধ্যে খুঁজবে। কিন্তু সেটা কি সম্ভব? তারপর আবার হচ্ছে, দেরিতে বিয়ে করবার কারণে সে তার যৌবন কাটিয়েছে পর্ণ দেখে, ওখানে এক এক এক নায়িকার এক এক ফিগার। অনেক সময় ধরে তারা আনন্দ পাচ্ছে-দিচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এটা সম্ভব না। বাস্তবের বউ আর পর্ণের নায়িকার মাঝে তফাৎ বহুত। দেরিতে বিয়ে করবার কারণে, অনেক কিছুর স্বাদ গ্রহণ করে ফেলবার কারণে এক বউয়ের মধ্যে আর তৃপ্তি মিটে না। এজন্যই এদেশে পরকীয়ার হার বেশি!

যদি দুনিয়ার এতো এতো স্বাদ নেওয়া না হতো, যৌবনে বউ পেয়ে যেতো, কম্পেয়ার করতে হতো না। তখন কালো কুচকুইচ্চা বউকেও অপ্সরা লাগতো।

রফিকুল ইসলাম মাদানী সাহেব, ওয়েস্টার্নদের পাবলিক স্কুলগুলিকে নিয়ে উদাহরণ দিয়েছিলেন চন্দ্রঘোনা পেপার মিলের মতো। চন্দ্রঘোনা পেপার মিলে একদিকে বাঁশ ঢুকায়, আরেকদিকে কাগজ বের হয়। ঠিক ওয়েস্টার্নদের পাবলিক স্কুলগুলাতে (ইভেন আমাদের দেশেও শুরু হচ্ছে) একদিকে বাচ্চা ঢুকবে অন্যদিকে কুত্তার বাচ্চা (ওদের অশ্লীলতা দেখে না পারতে বলতে বাধ্য হয়েছেন) হয়ে বের হবে।

আমি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ আলেমকে প্রশ্ন করেছি, কোনো মেয়ের শারীরিক চাহিদা আছে তবে বাচ্চা সামলানো কিংবা বাচ্চা প্রসবের এবিলিটি তার মধ্যে কম থাকলে প্রোটেকশন নেওয়া যেতে পারে?

তিনি বলেছেন, হ্যাঁ অবশ্যই। অন্তত ব্যাভিচার থেকে তো বাঁচা গেল। তবে সে শারীরিকভাবে সবল হলে, তখন নিতে হবে।

রাসূল (সাঃ) গরীব হলে বিয়ে এবং হজ্ব করতে বলতেন। (সহীহ হাদীস) হজ্ব করলে রিজিক বাড়ে, বিয়ে করলে অন্যের রিজিক নিজের সাথে জড়িয়ে যায়।

সুতরাং রিজিকের জন্য ক্যারিয়ারের জন্য বিয়ে করা যাবে না, এটা ভুয়া একটা কথা। একদম লেইম এক্সকিউজ।"

- শায়েখ ইঞ্জিনিয়ার এনামুক হক চৌধুরী।

পঠিত : ৩৫৩ বার

মন্তব্য: ০