Alapon

ভ্যাক্সিন নিয়েও শোষণে লিপ্ত ভারত ও তার দোসররা



বাংলাদেশ ভ্যাক্সিন পাবে কিনা এই বিষয়টা এখন ভারতের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করছে। ভারত চাইলে দিবে, না চাইলে দিবে না। ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান সেরামের সাথে চুক্তি করেছে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো। কিন্তু ভ্যাক্সিনের টাকা পে করতে হবে সরকারকে তথা জনগণকে। জনগণের টাকা দিয়ে কিনে ব্যবসা করবে বেক্সিমকো আবার এই ভ্যাক্সিন জনগণকে ক্রয় করে ব্যবহার করতে হবে বেক্সিমকো থেকে।

আরো দুঃখজনক বিষয় শুনুন। এই ভ্যাক্সিন ভারতের নয়। ভারত যে দামে কিনবে বাংলাদেশ ভারত থেকে তার দ্বিগুন দাম দিয়ে কিনবে। তারপরও এই ভ্যাক্সিন আমরা পাব কিনা তা নির্ধারণ করবে ভারতের কর্তৃপক্ষ।

কী বুঝলেন?
আমার ওপর অনেকে ক্ষ্যাপা কারণ আমি মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বলি। আপনাকে বিষয়টা অনুধাবন করতে হবে যে, আপনি স্বাধীন নন। একাত্তরে আমরা মুশরিকদের করায়ত্ত্বে থাকা একটি নাম সর্বস্ব দেশে পরিণত হয়েছি। আমাদের নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নেই।


মুশরিক ও তাদের এদেশীয় দোসররা আমাদের কীভাবে শোষণ করছে তার সামান্য নমুনা এই ভ্যাক্সিনকাণ্ড থেকেই দেখতে পাচ্ছেন।

আমি মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে লিখি এজন্য যে, যাতে আপনার কাছে সত্য উপলব্ধি হয়। আপনি যদি সত্য না জানেন অর্থাৎ আপনি যে ১৯৭১ সালে গোলামে পরিণত হয়েছেন এটা যদি না জানেন তবে গোলামীর জিঞ্জির আপনি কোনোকালেই ছিঁড়তে পারবেন না।

বাংলাদেশের স্বাস্থ্য সচিব ও বেক্সিমকোর পরস্পরবিরোধী কথাবার্তা

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ডের টিকা কিনতে যে চুক্তি হয়েছে, তাকে জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান। তিনি বলেছেন, এখানে বেক্সিমকো কী? বেক্সিমকো একটি এজেন্ট মাত্র।

আর গুলশানে নিজের বাসায় বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, টিকা আনার চুক্তি জিটুজি নয়। এটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি। বেক্সিমকো সরকারকে সহযোগিতা করছে।

স্বাস্থ্যসেবা সচিব আবদুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই তিন কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে, চুক্তির সময় ভারতের হাইকমিশনার উপস্থিত ছিলেন, এর চেয়ে বেশি জিটুজি চুক্তি আর কী হবে? ত্রিপক্ষীয় চুক্তি আমাদের হয়েছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে, এটা ঠিক আছে। সেরাম কি ভারত সরকারের অনুমতি ছাড়া কাজ করছে? ভারতের সরকার অনুমতি না দিলে কি এই প্রতিষ্ঠান এই চুক্তি করতে পারত? ক্রিটিক্যালি যেটা জিটুজি করে, সেটা না হলেও এটা জিটুজি।’

চুক্তিতে কী বলা ছিল, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘চুক্তিতে বলা আছে, যখন ভারত টিকা দেওয়া শুরু করবে, আমরাও শুরু করব। যখন ভারত পাবে, আমরাও পাব। ভারত যত টাকা দিয়ে কিনবে, আমরাও তত টাকা দিয়ে কিনব। না দিতে পারলে টাকা ফেরত দিতে হবে। আরও অনেক কঠিন নিয়মকানুন চুক্তিতে বলা আছে।’

ত্রিপক্ষীয় চুক্তি কী করে জিটুজি হয়, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘বেক্সিমকো কী? বেক্সিমকো একটি এজেন্ট। তার সঙ্গে আমাদের কোনো কিছু আসে যায় না।

বেক্সিমকো আমাদের এ কাজে সহযোগিতা করছে। আমরা যখন কোনো কাজ করি, ঠিকাদার নিয়োগ দিই না? সেই রকমই। এটাই আসল কথা। এ বিষয়গুলোকে জটিল করার কিছু নেই।’

বেক্সিমকোর এমডি নাজমুল হাসান করোনার টিকার চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্যসচিবের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘এখানে জিটুজির কোনো প্রশ্নই ওঠে না। মানে আমার জানা নেই। আপনারা যে জিটুজির কথা বলছেন, স্বাস্থ্যসচিব বলেছেন, উনি কোন ভ্যাকসিনের কথা বলছেন, আমি জানি না। এটা হতে পারে অন্য ভ্যাকসিন।’

নাজমুল হাসান আরও বলেন, ‘লজিক্যালি আমরা যে ব্যবসা করে আসছি, সেভাবে বলছি। এটা বাণিজ্যিক চুক্তি। আমরা শুধু সরকারকে সাহায্য করার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘এত দিনে এটা বুঝে যাওয়া উচিত, বেক্সিমকো যদি বুকিং না দিত, তাহলে কী হতো। কোন কোম্পানি বা সরকার কোথায় বুকিং দিয়েছে, কোন ভ্যাকসিন এনেছে বা আনতে পারবে, আর যে দাম বলছি, এর ডাবল দামে যদি কেউ দিতে পারে, আমি চ্যালেঞ্জ করে দিলাম, প্রশ্নই ওঠে না।’

পঠিত : ৩৫৮ বার

মন্তব্য: ০