Alapon

ভাবনার সাগরে ডুবিয়েছে যে আয়াতসমূহ...



রাতে সুরা মুলক তেলাওয়াত করছিলাম, আল্লাহর রহমতে প্রতিদিন তেলাওয়াত করা হয় যবে থেকে জেনেছি এটা কবরের আযাব প্রতিরোধকারী সূরা তবে থেকে।
তো অন্যদিন না দেখে অনুবাদ ছাড়া তেলাওয়াত করি কিন্তু আজকে দেখে দেখেই তেলাওয়াত করেছিলাম এবং অনুবাদ সহ।সেই অনুবাদ গুলো পড়তে গিয়ে কয়েকটা আয়াত আমাকে ভাবিয়েছে ভাবনার সাগরে ডুবিয়েছে যেটা ভেবে আমি খুবই আনন্দিত হলাম।
আসলে কুরআনের প্রত্যেকটা আয়াতই মানুষ কে ভাবিয়ে তুলতে সক্ষম আর সুরা মুলকের ও প্রত্যেকটা আয়াতই মানুষ কে ভাবনার গভীরে নিয়ে যেতে পারে কিন্তু আমাকে আপাতত এই চারটি আয়াত ভাবিয়েছে।

"তিনি সৃষ্টি করেছেন স্তরে স্তরে সাত আকাশ। দয়াময় আল্লাহর সৃষ্টিতে তুমি কোন খুঁত দেখতে পাবে না;[ আবার তাকিয়ে দেখ, কোন ত্রুটি দেখতে পাচ্ছ কি"?[সুরা মুলক-৩]
এই আয়াতে অনেক কিছু ভাবার আছে।এখানে আল্লাহ তায়ালা আল্লাহর সৃষ্টির দিকে তাকাতে বলেছে এবং দেখতে বলেছেন যে কোনো খুঁত দেখতে পাও কী?বারবার দেখো কোনো খুঁত পাও না কী?

কিন্তু আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত নাই আমরা যতই চেষ্টা করি না কেন আমরা আল্লাহর সৃষ্টিতে কোনো খুঁত বা ত্রুটি দেখাতে পারব না দেখতে পাবো না।

কিন্তু নাস্তিকরা মিথ্যাচার করে।তারা এই আয়াত কে ভুল বলে।তারা বলে যে আল্লাহ বলেছেন যে কোনো ত্রুটি নাই কিন্তু ব্ল্যাকহোল তো একটা ত্রুটি(নাউজুবিল্লাহ)। আসলে ব্ল্যাকহোল ও আল্লাহর একটি সৃষ্টি আর এটা কোনো ত্রুটি না বরং ব্ল্যাক হোল কে আল্লাহ ওভাবেই তৈরি করেছেন ওট কোনো ত্রুটি না।

"তারা কি লক্ষ্য করে না তাদের ঊর্ধ্বদেশে পক্ষীকুলের প্রতি, যারা ডানা বিস্তার করে ও সংকুচিত করে? পরম দয়াময়ই তাদেরকে স্থির রাখেন।নিশ্চয় তিনি সর্ববিষয়ে সম্যক দ্রষ্টা"।[সুরা মুলক-১৯]

এই আয়াতটা মানুষ কে ব্যাপক ভাবাতে পারে বিশেষ করে যারা অবিশ্বাসী তাদের ও ভাবাতে পারে।আল্লাহ অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্য বলেছেন যে,তারা লক্ষ্য করে না যে আকাশে পাখিদেরকে কে স্থির রাখে?

অবশ্যই আল্লাহ তাদের স্থির রাখেন।তাও তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।
আর বিশ্বাস স্থাপন করবেও বা কী করে?তারা তো চায় ও না বিশ্বাস স্থাপন করতে আর তাই তো আল্লাহ তাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছে তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না আর তাদের জন্যই রয়েছে মহাআযাব।

"তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেনএবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ।তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক"।[সুরা মুলক-২৩]

এই আয়াত থেকে যা ভেবেছি সেটা হলো আল্লাহ আমাদের কত নেয়ামত দিয়ে ভরিয়ে রেখেছেন কিন্তু তাও আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি না।

আর এই আয়াত পড়ে আরেকটি আয়াতের কথা মনে পড়ে গেলো সেটা হলো
" তোমরা নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে"[সুরা তাকাসুর-৮]

এই যে চোখ, কান, নাক ইত্যাদি এগুলো কত বড় নেয়ামত আমাদের জন্য ভাবা যায়!
কিন্তু আমরা এগুলোকে বেশিরভাগ সময়ই খারাপ কাজে ব্যবহার করি।

আমরা চোখ দিয়ে অশ্লীল জিনিস দেখে চোখের গোনাহ করি কান দিয়ে গান শোনে কানের গোনাহ করি আর এগুলো করে কী আমরা পার পেয়ে যাবে?

কখনোও নয় কেয়ামতের দিন অবশ্যই নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হতে হবে তাই এখন থেকেই সাবধান হতে হবে।

আর আরেকটা যেই আয়াত ভাবিয়েছে সেটা হলো,
"তোমরা ভেবে দেখেছ কি? যদি পানি ভূগর্ভে তোমাদের নাগালের বাইরে চলে যায়, তাহলে কে তোমাদেরকে এনে দেবে প্রবহমান পানি"?[সুরা মুলক-৩০]

মনে করেন আপনি পিপাসায় কাতর আর সেই সময় এক ফোটাও পানি নাই তখন আপনার কেমন লাগবে?সেই কষ্ট লাগবে তাই না?

কিন্তু কিছুক্ষণ পর পানি পেলে ঠিক হয়ে যাবে। এই আয়াতে আমাদের বলেছেন পানি যদি তিনি নিয়ে নেন আমাদের কাছ থেকে তাহলে আমরা কোথা থেকে পানি আনব?

আমরা কখনোই আনতে পারব না পানি আল্লাহ দয়া করেছে বলেই আমরা পানি পাচ্ছি।
আর আরেকটা জিনিস আমরা এত এত গোনাহ করি তাও আল্লাহ আমাদের কে পানি থেকে বঞ্চিত করেন না।

" আল্লাহ কতই না দয়ালু"!

- নাভিদ আহমেদ

পঠিত : ৫১৪ বার

মন্তব্য: ০