Alapon

আওয়ামী লীগ সরকার ত্রিমুখী চাপ সামলাতে পারবে...?



২০০৮ সালে ভারত ও আমেরিকার যৌথ কারসাজিতে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। তারপর থেকেই আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়ার এই অঞ্চল ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র’এর মাধ্যমে তত্বাবধান করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে মনে হচ্ছে, আমেরিকা আর ভায়ার মাধ্যমে কাজ করতে চায় না। এখন তারা সরাসরি কাজ করতে চায়। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের বিষয়ে ভারতের সাথে আমেরিকার মতদ্বন্দ এখন দিনের আলোর মত পরিষ্কার।

আবার একই সাথে আওয়ামী লীগ নিয়ে ভারতও খুব একটা স্বস্তিতে নেই। বোদ্ধাদের থেকে শোনা যায়, ২০১৮ সালের দিনের আলোয় ভোটারবিহিণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ভারতের নিয়ন্ত্রণ থেকে বেরিয়ে এসেছে। আর এই নির্বাচনের ব্যাপারে ভারতও খুব একটা পরিষ্কার জানতো না বলে, আনন্দবাজার পত্রিকা মারফত জানা যায়। আর বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের চীনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের গতিবিধি দেখেও ভারতের সাথে সম্পর্ক খারাপের আভাস আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানও বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত বেশ কয়েকবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাথে মিটিং করেছে। আর সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান বাংলাদেশিদের ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব বিধি নিষেধ ছিল, সব উঠিয়ে নিয়েছে। এখন বাংলাদেশিরা খুব সহজেই পাকিস্তানের ভিসা পাবে বলে পাকিস্তানের অ্যাম্বাসি ঘোষণা দিয়েছে। আর অচিরেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রায়াত্ব বিমান সংস্কা পিআই-এর বিমানও বাংলাদেশে নিয়মিত ফ্লাইট চালু করবে। এগুলো ব্যতিরেখে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ৭১ ইস্যু নিয়ে পাকিস্তান হয়তো বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইবে। আর এই ক্ষমা চাওয়া ও সম্পর্ক উন্নয়নের পিছনে ভূমিকা রাখছে চীন। চীন তার ওয়ান বেল্ট ওয়ান ওয়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশকেও সংযুক্ত করেছে। তাই চীন চাইছে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন হোক। তাতে এই অঞ্চলে চীনের শক্তি আরও জোরালো হবে।

আওয়ামী লীগ যেহেতু পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাচ্ছে, চীনের সাথে আরও বাণিজ্য বাড়াতে চাচ্ছে, সেইসাথে ভারত নির্ভরতা কমিয়ে চীন নির্ভরতা বাড়াতে চাচ্ছে, তাই বোঝা যাচ্ছে ভারতের হাত থেকে বাংলাদেশও প্রায় হাতছাড়া হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার যতোদিন ভারতের বলয়ের মধ্যে ছিল, ততোদিন আমেরিকা তাদের নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেনি। কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের চীন নির্ভরতা বৃদ্ধির কারনেই হোক, বা নিজ প্রয়োজনে হোক আমেরিকা এই অঞ্চলে এখন প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখতে চাইবে।

ট্রাম্প প্রশাসন পর্যন্ত ভারতের মাধ্যমে এই অঞ্চল নিয়ন্ত্রণে রাখার এই নীতি মেনে চলেছে। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের এই ইচ্ছে থাকলেও হয়তো উপায় থাকবে না। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের মত বাইডেন প্রশাসনও চীনকেই প্রধান শত্রু হিসেবে গণ্য করবে। আর চীন যেহেতু এই অঞ্চলে প্রভাব বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছে, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই এই অঞ্চলে আমেরিকা ভূমিকা রাখতে চাইবে। আর ভারতও চাইবে তাদের পুরনো নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে। আর এই ত্রিমুখী চাপ সহ্য করেই ক্ষমতায় থাকতে হবে শেখ হাসিনা তথা আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এই ত্রিমুখী চাপ সামলাতে পারবে?

পঠিত : ৫৬৮ বার

মন্তব্য: ০