Alapon

রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি এবং কিছু কথা...



রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সি নাভালনি মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে ফের রাশিয়াতেই ফিরে গেছেন।

নাভালনিকে গত বছর রাশিয়াতে বিষ প্রয়োগে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। জার্মানির একটি সামরিক গবেষণাগার প্রমাণ পেয়েছে যে তাকে নোভিচক গ্রুপের বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল, যা ফ্রান্স এবং সুইডেনের ল্যাবের অনুসন্ধানেও প্রমানিত হয়েছে। যদিও রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ এই বিষ প্রয়োগকে অস্বীকার করে জার্মানিকে দোষারোপ করেছে।

ওদিকে নিরপেক্ষ তদন্তকারী গ্রুপ ব্যালিংক্যাট ফ্লাইট এবং মোবাইল ফোনের রেকর্ড বিশ্লেষণ করে এফএসবি-র (রাশান সিক্রেট সার্ভিস) এক বিশেষ ইউনিটের সদস্যদের এই বিষপ্রয়োগের জন্য দায়ী করেছে।

এই বিষপ্রয়োগের আগে গত কয়েক বছর ধরেই নাভালনিকে রাশিয়াতে সূক্ষ্ম নজরদারিতে রাখা হয়েছিল। প্রায়শই তাকে হেনস্থা করা হতো, এমনকি গত বছর তার আর তার পরিবারের ব্যাঙ্ক একাউন্ট পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত করেছে রাশান কর্তৃপক্ষ।

গতকাল নাভালনি জার্মানিতে চিকিৎসা শেষে মস্কো ফিরে গেলে তাকে ফের গ্রেফতার করেছে মস্কো পুলিশ। পুতিনের রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে যেই অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে তাতে নাভালনি দোষী সাব্যস্ত হলে তার দীর্ঘ কারাবাস হয়ে যাবে। অভর্থাৎ, যে ভাবেই হোক পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনিকে কিছুতেই রাশিয়াতে রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।

এবার প্রশ্ন করতে পারেন নাভালনি তো জানতই যাকে পুতিনের কর্তৃপক্ষ পদে পদে হয়রান করেছে, এমন কি মেরেও ফেলতে চেয়েছিল, সে কেনো জেনেশুনে নিরাপদ জার্মানি ছেড়ে মস্কোতে ফিরে গেলো? বিপদ জেনে বিপদে কে পা ফেলে? বেকুব নাকি সেই প্রশ্নও তুলতে পারেন।

নাভালনি রাশিয়াতে প্রকৃত গনতন্ত্র আনতে চায়। পুতিনের কঠোর সমালোচক নাভালনি রাশিয়াতে এক নায়কতন্ত্রের অবসান চায়, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। সে জানে বিদেশের নিরাপদ সোফায় বসে আর যাই হোক বিপ্লব হয় না। সোশ্যাল মিডিয়াতেও নাভালনির কোটির উপর ফলোয়ার, যারা তার কোথা শোনে, কিন্তু নাভালনি ভালো করেই জানে কেবল কিবোর্ডের আড়ালে নিরাপদে বসে পুতিনের সমালোচনা করলেও রাশিয়ার একনায়কতন্ত্রের কোন পরিবর্তন আসবে না। তার জন্য তাকে রাশিয়ার মাটিতেই থাকতে হবে। এবার তার জানের উপর যত রিস্ক আসুক না কেনো আসল নেতা মাটিতে ফিরেই আন্দোলন চালায়। মরুক বাঁচুক, যা করার এখনই করতে হবে।

আর সেজন্যই নাভালনির মত নেতারা সারা বিশ্বের নজর কাড়ে, কাজের কাজ কিছু করে; রিস্ক নিয়ে রাজনীতি করে, লড়াই করে। তারাই ইতিহাসের পাতায় নেতা হিসাবে জায়গা পায়।

আর বাকিরা তাদের পক্ষে কেনো দেশে যাওয়া সম্ভব না সেই সাফাই গায়। দেশে থাকলেও রাস্তায় কেনো নামা যাবে না তার পক্ষে যুক্তি খুজে। কিছু পারুক না পারুক, তাদের এহেন ইদুর মার্কা লুকোচুরির যারা সমালোচনা করে তাদের টুটি চেপে ধরার জন্য তাদের পোষা গুণ্ডাদের লেলিয়ে দেয়। ভাবছে এভাবেই বোধ হয় ডিজিটাল যুগে আন্দোলন করে।

অনেক তো দেখেলাম, তাই না? আর তো প্রমানের দরকার নাই, নাকি আরো দেখার বাকি আছে?

- সাবিনা আহমেদ,

পঠিত : ৪০২ বার

মন্তব্য: ০