Alapon

করোনা ভ্যাকসিন – যত বিভ্রান্তি ……



করোনা ভ্যাকসিন – যত বিভ্রান্তি ……
-------- ডা. আফতাব হোসেন।

এক সময় খবরের কাগজে প্রায়ই দেখতাম, জাকাতের লুঙ্গি কিংবা শাড়ি নিতে যেয়ে মানুষের ভিড়ে পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারাত অনেক মানুষ। যে দেশে মাত্র একশ টাকা দামের একটা লুঙ্গি কিংবা তিনশ টাকা দামের একটা শাড়ি নিতে যেয়ে মানুষ নিজের জীবন বিপন্ন করে, তখন ভয় ছিল, মাত্র এক বছরের মধ্যে দশ কোটি লোককে আক্রান্ত করা এবং বিশ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ হরণ করা করোনা ভাইরাসের একমাত্র পরীক্ষিত প্রতিষেধক, করোনার টিকা নিতে যেয়ে না জানি কী হাল হয়। অথচ আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারি না যখন দেখি, সেই দেশে এই প্রাণ রক্ষাকারী টিকা নেয়ার জন্য মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ! কোনো এক কেন্দ্রে নাকি দুইশ জন নিবন্ধন করলেও প্রথম দিন একজন মানুষও টিকা নিতে হাজির হয়নি ! আবার কোনো কোনো স্থানে জনপ্রতিনিধিরা প্রাইজ বন্ড, ফুল, শাড়ি ইত্যাদি উপঢৌকন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে ! কিন্তু কেন ? যেখানে দুর্নাম আছে, বাঙ্গালি মাগনা পেলে আলকাতরাও খায়, সেখানে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা ঔষধ মাগনা পেয়েও বাঙ্গালী কেন নিতে চাইছে না ?

বাঙ্গালী মাগনা পেলে যেমন আলকাতরা খায়, হুজুগে তেমন আরও বেশি মাতাল হয়। আমার খুব কষ্ট হয়, যখন দেখি, কিছু নীতি বিবর্জিত রাজনীতিবিদ শুধু মাত্র রাজনৈতিক বিরোধের জন্য সারা পৃথিবী জুড়ে চলা এই জীবন রক্ষাকারী প্রয়াস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমার খুব ঘৃণা হয়, যখন দেখি, কিছু বিবেক বিবর্জিত মানুষ ফেসবুকে, ইউটিউবে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ইচ্ছেমত গুজব ছড়ায়। আমার খুব লজ্জা হয় যখন দেখি, আমার দেশের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষেরা সেই গুজবকে শুধু নিজেরাই বিশ্বাস করে না, চোখ বন্ধ করে সেই গুজব ফরোয়ার্ড করে অন্যকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।

আজ আমি করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে প্রচলিত কিছু বিভ্রান্তি দূর করার চেষ্টা করব। প্রথমেই আসা যাক, এই করোনা ভ্যাকসিন বা টিকা কী ? আমাদের দেশে এখন যে ভ্যাকসিনটি এসেছে, তা অক্সফোর্ড এবং এস্ট্রোজেনিকার যৌথ উদ্যোগে আবিষ্কৃত। যে ভাইরাস দ্বারা আমাদের সাধারণ সর্দি জ্বর হয়, শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে তারই একটি অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রজাতির ভাইরাস নিয়ে প্রথমেই তাকে জেনেটিক্যালি মডিফাইড করে নপুংসক করে দেয়া হয়, যাতে ঐ ভাইরাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করে বংশ বৃদ্ধি করতে না পারে। তারপর সেই ভাইরাসের ডিএনএ তে এমন কিছু পরিবর্তন সাধন করা হয়, যাতে সেই ভাইরাস আমাদের শরীরের কোষে প্রবেশ করে এক ধরণের প্রোটিন তৈরি করে যা করোনা ভাইরাসে দেখা যায়। যাকে স্পাইক প্রোটিন বলে। আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ তন্ত্র যখন সেই স্পাইক প্রোটিনের সংস্পর্শে আসে, তখন শরীরে এক ধরনের প্রতিষেধক বা এন্টিবডি তৈরি হয়। পরবর্তীতে করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হলে সেই এন্টিবডি করোনা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। অন্যান্য ভাইরাস জনিত রোগ, যেমন, মামস, মিজেলস, রুবেলা, ইত্যাদির ভ্যাকসিনও এই একই মূলনীতিতে তৈরি হয়।

এখন দেখা যাক, ইথারে, খবরের কাগজে এই করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে কী কী বিভ্রান্তি চলছে ?

বিভ্রান্তি এক: এই টিকা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে, সুতরাং এটা পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকরী নাও হতে পারে।
সত্যতা: এটা ঠিক, একটা কার্যকরী ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে বিজ্ঞানীদের বছরের পর বছর লেগে যায়। এমনকি যুগও পেরিয়ে যায়। কিন্তু যে বিধ্বংসী ভাইরাসটি মাত্র এক বছরেই দশ কোটি লোককে আক্রান্ত করেছে, বিশ লাখ মানুষের জীবন নিয়েছে, তার প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে যদি বছরের পর বছর লেগে যেত, তাহলে না জানি আরও কত অগুনিত মায়ের কোল খালি হয়ে যেত, কত অসংখ্য মানুষ তার প্রিয়জন হারাত। ভাবখানা এমন, হাজার হাজার বিজ্ঞানী দিন রাত এক করে, মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, এক বছরের মধ্যে ভ্যাকসিন আবিষ্কার করে রীতিমত অপরাধ করে ফেলেছেন। একজন ডাক্তার হিসেবে আমি নিশ্চিত করে বলতে চাই, কোনো ভ্যাকসিন কিংবা ওষুধ বাজারে আসার অনুমতি পায় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তা মানুষের জন্য নিরাপদ প্রমাণিত হয়। আগেই বলেছি, এই ভ্যাকসিনে আছে এক ধরণের জেনেটিক্যালি নিষ্ক্রিয় ভাইরাস যা মানুষের শরীরে কোনো রোগের সংক্রামণ করতে পারে না। আছে কিছু কেমিক্যাল ও পানি, যা শরীরের জন্য টক্সিক বা বিষাক্ত নয়। আর কার্যকারিতা ? এর কার্যকারিতা ইতোমধ্যেই মানুষের ক্ষেত্রে প্রমাণিত হয়েছে। ভ্যাকসিন দেয়ার পর থেকে যুক্তরাজ্যে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমতে শুরু করেছে। তবে এই কার্যকারিতা ঠিক কতটুকু এবং কতদিন স্থায়ী হবে, তা নিশ্চিত করে বলার জন্য আমাদের আরও তথ্য উপাত্তের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

বিভ্রান্তি দুই: আমাদের দেশে আসা ভ্যাকসিন যেহেতু ভারতের তৈরি, সুতরাং এর মান ভালো নয়।

সত্যতা: এই গুজবটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যে কোনো বৃহৎ দেশ তার প্রতিবেশী ক্ষুদ্র দেশগুলোকে ভূ-রাজনৈতিক কারণে নিজ প্রভাব বলয়ে রাখতে চায়। ভারতও হয়ত তার ব্যতিক্রম নয়। আর সেই কারণেই বাংলাদেশের অনেক নাগরিক হয়ত ভারত বিদ্বেষী মনোভাব পোষণ করে। আর এটাকে কাজে লাগাতেই এই গুজবটি ছড়ানো হচ্ছে। প্রকৃতার্থে ভ্যাক্সিনটি ভারতের আবিষ্কৃত নয়। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট অক্সফোর্ড এস্ট্রোজেনিকার ফর্মুলায় এটি তৈরি করছে। মান নিয়ে সমঝোতা করার কোনো সুযোগ তাদের নেই। উল্লেখ্য, যারা এই গুজবটি ছড়াচ্ছেন, তারাই রোগে শোকে ভারতে ছোটেন চিকিৎসার জন্য। কলকাতায় যেয়ে শাড়ি, কাপড়, গয়না কেনেন সন্তানের বিয়ের জন্য। তখন মান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন না। এটা আমাদের এক ধরণের দ্বৈত মানসিকতা !

বিভ্রান্তি তিন: এই ভ্যাকসিনের সাইড ইফেক্ট বা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে।
সত্যতা: পৃথিবীতে এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত কোনো ওষুধই একেবারে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন নয়। মনে করে দেখুন, আমরা যখন ছোটবেলায় গুঁটি বসন্তের কিংবা যক্ষ্মার টিকা নিতাম, টিকার স্থানটি পেকে, গলে এক বিচ্ছিরী অবস্থা তৈরি হত। হাতে বাহুতে একটা স্থায়ী দাগ পড়ে যেত। তখন এই কষ্টটা স্বীকার করেছিলাম বলেই আজ গুঁটি বসন্ত পৃথিবী থেকে নির্মূল হয়েছে, যক্ষ্মা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যদিও এই টিকায় তেমন কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। তবুও অন্যান্য সাধারণ টিকার মতোই এটা নিলে হালকা জ্বর, গা ব্যথা, মাথা ধরা, শরীর ম্যাজম্যাজ করা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। তবে তা খুবই ক্ষণস্থায়ী, যা প্যারাসিটামল খেলে সেরে যায়। এই যে আমরা একটু জ্বর হলে কিংবা মাথা ব্যথা, গা ব্যথা হলে মুড়ি মুড়কির মতো প্যারাসিটামল খাই, একবার তার লিফলেটটা পড়ে দেখুন, যে পরিমাণ সাইড ইফেক্টের কথা লেখা আছে, তাতে ভুলেও প্যারাসিটামল মুখে দেবেন না। যারা এই গুজবটি চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করছেন, তারাই কিন্তু একটু সর্দি কাশি হলে ওষুধের দোকানদারের পরামর্শে চারটে কিংবা ছ’টা এন্টিবায়োটিক কিনে খান, যা শরীরে অনেক বেশি ক্ষতি করে।

বিভ্রান্তি চার: এই ভ্যাকসিন নিলে যৌন ক্ষমতা কমে যায়।
সত্যতা: অবাক কাণ্ড ! এই গুজবটাই বাঙ্গালী বেশি খাচ্ছে। আমি এমন কোনো বাঙ্গালী রুগী পাইনি, যে তার যৌন ক্ষমতা নিয়ে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট। শুধু দুই বাংলায় নয়,পুরা উপমহাদেশে আজও তাই সালসা, মলম, জারী বটির রমরমা ব্যবসা চলছে। বাঙ্গালী সিংহাসন ছাড়তে রাজী আছে, এমনকি করোনায় মরতেও রাজী আছে, কিন্তু বেঁচে থাকতে এই ক্ষমতা বিন্দুমাত্র ছাড়তে রাজী নয়। অথচ এই ভ্যাকসিনের সাথে যৌন ক্ষমতার কোনো সম্পর্কই নেই।

বিভ্রান্তি পাঁচ: এই ভ্যাকসিন মানুষের প্রজনন ক্ষমতা বদলে দিতে পারে কিংবা বন্ধ্যা করে দিতে পারে।
সত্যতা: উপরের মতোই সম্পূর্ণ মনগড়া। এই গুজবেরও কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

বিভ্রান্তি ছয়: এই ভ্যাকসিন মানুষের ডিএনএ বদলে দিতে পারে।
সত্যতা: এই ভ্যাকসিনে যে মেসেঞ্জার আরএনএ বা জেনেটিক নির্দেশনা আছে, তা শুধু করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন সদৃশ প্রোটিন তৈরি করার জন্য। অন্য কোনো নির্দেশনা নেই। ডিএনএ বদলে যাবার তো প্রশ্নই ওঠে না। ভাইরে, ধারণা করা হয়, বানর থেকে বিবর্তিত হয়ে আমরা মানুষ হয়েছি। সেই মানুষ এমন কোনো ওষুধ তৈরি করবে না যাতে আমরা মানুষ থেকে আবার বানর হয়ে যেতে পারি।

বিভ্রান্তি সাত: এলার্জির সমস্যা থাকলে এই ভ্যাকসিন নেয়া যাবে না।
সত্যতা: আগে বুঝতে হবে, এই এলার্জি বলতে কী বোঝাচ্ছেন। অনেকেরই খুজলি, পাঁচড়া, চুলকানি হলে বলেন তার এলার্জি আছে। তাদের বুঝতে হবে, এগুলো চর্ম রোগ, এলার্জি নয়। এলার্জি হল, কোনো এক বা একাধিক পদার্থ কিংবা উপাদানের সংস্পর্শে এলে যদি কারো হঠাৎ চুলকানি শুরু হয়, চামড়ায় লাল উঁচু দাগ পড়ে যায়, হাঁচি কাশি শুরু হয়, নাক, চোখ দিয়ে পানি পড়া শুরু হয়, তাহলে বুঝতে হবে ঐ পদার্থের প্রতি তার এলার্জি আছে। তবে তার মানে এই নয় যে, ভ্যাকসিনে ব্যবহৃত উপাদানের প্রতিও তার এলার্জি আছে। সুতরাং চামড়ায় খুজলি পাঁচড়া, কিংবা ঠাণ্ডায় বা ধূলা বালিতে সর্দি কাশি হলে সে ভ্যাকসিন নিতে পারবে না, এমন কোনো কথা নেই।

বিভ্রান্তি আট: এজমা কিংবা শ্বাস কষ্ট থাকলে ভ্যাকসিন নেয়া যাবে না।
সত্যতা: বরং উল্টো। যাদের এজমা কিংবা শ্বাস কষ্ট আছে, তাদের সবার আগে আগে করোনা ভ্যাকসিন নেয়া উচিৎ, কারণ করোনায় আক্রান্ত হলে তারাই সব চেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে।

বিভ্রান্তি নয়: অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিক রুগীরা করোনা ভ্যাকসিন নেবে না।
সত্যতাঃ স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত একটা লিফলেটের প্রতি আমার দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে, যাতে “যারা একেবারেই টিকা নেবেন না” লিস্টে “অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস” লেখা আছে। অনিয়ন্ত্রিত শব্দটি আপেক্ষিক। বাংলাদেশের অধিকাংশ ডায়াবেটিক রুগীর রক্তে সুগারের পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত বলা যায়। এতে জনসাধারণের কাছে ভুল সংবাদ পৌছাচ্ছে। বরং ডায়াবেটিক রুগী, বিশেষ করে টাইপ টু ডায়াবেটিক (যাদের ডায়াবেটিস পরিণত বয়সে ধরা পড়েছে) রুগীদের সত্ত্বর


করোনা টিকা নেয়া উচিৎ কারণ তারা করোনা আক্রান্ত হলে দ্রুত অবনতি হবার সম্ভাবনা আছে। তবে টিকা নেয়ার পর যেহেতু হালকা জ্বর হতে পারে এবং তাতে ব্লাড সুগার একটু বেড়ে যেতে পারে, তাই টিকা নেয়ার এক দুই দিন পর ব্লাড সুগার চেক করতে হবে।

বিভ্রান্তি দশঃ একবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে গেলে আর ভ্যাকসিন নেয়ার দরকার নেই।
সত্যতা: আমরা এখনও জানি না, একবার করোনায় আক্রান্ত হলে কতদিন শরীরে ইমিউনিটি থাকে। ইতোমধ্যেই একাধিক বার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সুতরাং সুযোগ থাকলে প্রত্যেকেরই করোনা ভ্যাকসিন নেয়া উচিৎ।

আমি শুধু প্রচলিত বিভ্রান্তিগুলো খোলসা করার চেষ্টা করলাম। এর বাইরেও ভ্যাকসিন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানান, সাধ্যমত জবাব দেয়ার চেষ্টা করব।
আমি করোনা ভ্যাকসিন নিয়েছি। আপনিও ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য surokkha.gov.bd তে নিবন্ধন করুন। মনে রাখবেন, ভ্যাকসিন নিয়ে শুধু আপনি নিজেই সুরক্ষিত থাকবেন না, আপনার প্রিয়জনকেও সুরক্ষিত রাখবেন।

বিদ্রঃ এটা একটা সামাজিক সচেতনতামূলক পোস্ট। বেশি বেশি শেয়ার করে বিভ্রান্তি দূর করতে সাহায্য করুন।

পঠিত : ৪৯৭ বার

মন্তব্য: ০