Alapon

লেখক মুশতাকসহ শাহবাগিদের জন্য বিশেষ ‘করুনা’ হচ্ছে...



এই যে লেখক মুশতাক কারাগারে মারা গেলেন, এ জন্য আমি ভিতর থেকে কোনো কষ্ট বা দুঃখ অনুভব করতে পারছি না। এমনকি সামান্যতম সহমর্মিতাও জানাতে পারছি না। বরং লোকটার জন্য ভীষণ করুনা হচ্ছে! কারণ, এই লেখক মুশতাকরা যে গণজাগরণ মঞ্চ আন্দোলন করে দেশের ২০ কোটি মানুষের উপর ফ্যাসিস্টদের চাপিয়ে দিল, সেই ফ্যাসিস্টদের হাতেই লেখক মুশতাক মারা পড়ল।

এই মুশতাকরা সেদিন গণজাগরণ মঞ্চে স্লোগান দিয়ে আদালতের রায় পর্যন্ত বদলে দিয়েছিলো। সেই মুশতাকরাই আজ কিনা আদালতের কাছে ন্যায় বিচার কামনা করে। সেদিন লেখক মুশতাকের সাথে যারা ফ্যাসিস্টদের ক্ষমতা স্থায়ী করার জন্য শাহবাগে বসেছিল, সেই বামরা এখন মুশতাকের হত্যার বিচার চাইতে শাহবাগে বসেছে। কিন্তু এবার আর পুলিশ পাহারায় এবং বিরিয়ানি বিতরণ করে তাদের বসার ব্যবস্থা করা হয়নি। উপরন্তু এবার পুলিশ তাদের জলকামান ব্যবহার করে আপ্যায়ন করেছে। লেখক মুশতাকরা ২০১৩ সালে যে বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, সেই বিচারব্যবস্থার কাছেই আজ তারা ধরাশায়ী হলো।

প্রখ্যাত ফটোগ্রাফার শহীদুল আলম গ্রেফতার হয়ে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে দেশে-বিদেশে সুযোগ পেলেই বলতে থাকে, ‘বাংলাদেশে কোনো আইনের শাসন নেই। সেখানে এক নায়কতন্ত্র চলছে। বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতা এখন ফ্যাসিস্টদের হাতে।’

অথচ এই ফ্যাসিস্টদের জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়ার জন্য শহীদুল আলমদের দ্বায় কোনো অংশে কম নয়। শহীদুল আলম নিজেও একজন গণজাগরণ মঞ্চের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সেসময় যখন জামায়াত-শিবির কর্মীদের নির্বিচারে গ্রেফতার করা হচ্ছিল, গুম করা হচ্ছিল, ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছিল, তখন শহীদুল আলমরা চুপ করেছিল। কখনো কখনো পরোক্ষভাবে এই নির্বিচারে হত্যা করাকে জায়েজ করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেদিন তারা বোঝেনি, এর দ্বায় একদিন তাদের পরিশোধ করতে হবে!

লেখক মুশতাক, ফটোগ্রাফার শহীদুল আলমসহ আরও যারা শাহবাগি আছে, তাদের জন্য বিখ্যাত কবি মার্টিন নিম্যোলারের সেই বিখ্যাত কবিতা ‘ওরা এসেছিলো’ শুনিয়ে যাচ্ছি। এই কবিতাটি শাহবাগিদের ভবিষ্যৎ পরিণতির কথা জানান দিয়ে যাচ্ছে।

“প্রথমে নাৎসিরা এসেছিল কমিউনিষ্টদের ধরতে,আমি প্রতিবাদ করিনি।
-কারণ, আমি কমিউনিষ্ট ছিলাম না।
তারপর তারা এলো ট্রেড ইউনিয়ন পন্থিদের ধরতে, আমি প্রতিবাদ করিনি।
-কারণ, আমি ট্রেড ইউনিয়ন পন্থি ছিলাম না।
তারপর তারা এলো ইহুদিদের ধরতে,তখনও আমি প্রতিবাদ করিনি।
-কারণ, আমি ইহুদি নই।
তারপর ওরা আমাকে ধরতে এলো,তখন আর আমার হয়ে প্রতিবাদ করবার অবশিষ্ঠ কেউ ছিল না”।

লেখক ‍মুশতাকদের জন্য আফসোস! তারা বিরোধীদল ও ইসলামপন্থিদের নির্মূল করার সময় বগল বাজিয়েছিলো। আজ তাদেরই নির্মূল করা হচ্ছে। অথচ তাদের জন্য প্রতিবাদ করবার মতো বিবেক আর অবশিষ্ট নেই!

পঠিত : ৩৬২ বার

মন্তব্য: ০