Alapon

হেফাজতে ইসলামের ভবিষ্যৎ এবং কিছু কথা...



জামায়াতকে শেষ করে বিএনপিকে ধরেছিল, বিএনপি জামায়াত দুই দলই এখন সুপ্ত অবস্থায় চলে গেছে। পারবে না আর সহজে রাজনিতিতে শক্তভাবে জায়গা করে নিতে। আর জায়গা পেতে হলে দুই দলকেই প্রচুর রক্ত বিসর্জন দিতে হবে। এবার আসছে হেফাজতের পালা।

আলেমদের সামনে বিশাল ঈমানি পরিক্ষা। আলেমদের নামে অনেক তথ্য এখন বের করা হবে যার প্রায় পুরাটাই হবে ভুয়া। প্রচুর হয়রান করা হবে হেফাজতের উপরের সারির নেতাদের। ঘটনাকে এমনভাবে জনগনের সামনে পেশ করা হবে যাতে দুর্বল জনগন সহজে বিভ্রান্ত হবে। দেশে ইসলামকে শেষ করার ফাইনাল খেলা শুরু হতে যাচ্ছে। এরপর বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সেক্যুলার মুসলিম প্রধান রাষ্ট্র, যেখানে মানুষ হবে নামে মুসলিম কিন্তু কামে ফুর্তিবাজ।

হেফাজতের সকল রাস্তা এবার একে একে বন্ধ করা হবে। অবাক হবো না মদ্রাসাগুলোকে সেক্যুলার স্কুলে পরিণত করা হলে। অথবা একে একে বন্ধ করে দেয়া হলে। হয়তো সামনে সরকারী সকল ইন্সটিটিউটে দাড়ি টুপি আর বোরখা নিষিদ্ধ হবে। কামাল তুমি কামাল কিয়া ভাই।

তাই সাধারন জনগন যারা এখনও নিজেকে মুসলমান ভাবেন, তারা অন্তত আওয়ামী লীগের সকল প্রচার আর প্রচোরনা বিশ্বাস করার আগে দুইবার ভেবে নিবেন। আমি তো একটা খবরও বিশ্বাস করব না। একটাও না। নো, নাডা, জিলচ।

মামুনুল হক মোটেই দুশ্চরিত্র নন। কিন্তু আমার ফ্রেন্ডলিস্টের অনেককেই দেখছি চ্যানেল ৭১ আর নাগরিক টিভির প্রপাগান্ডা আর মিথ্যা খবর বিশ্বাস করতে, প্রশ্ন তুলতে। হেফাজতের দর্শন আপনার মনপুত না হলেও আলেমদের এভাবে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য মেনে নেয়া মানে হচ্ছে সমাজের অবশিষ্ট যেই শিষ্টাচার ছিল তা ধ্বংস করে দেয়া।

তাই আমার অনুরোধ আল্লাহকে যদি ন্যুনতম ভয় পান, তাহলে আল্লাহর কোরআন যাদের মুখে আর বুকে তাদের অপমান করবেন না, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে কথা বলবেন না। ওনাদের কোন বক্তব্য আপনাদের পছন্দ না হলে ভদ্র ভাষায় বক্তব্যের বিপরীতে আপনার বক্তব্য রাখুন। আমি নিজেও নারী বিষয়ে প্রচুর বক্তব্য রাখি সমাজের হয়তো নাইন্টি পার্সেন্ত আলেম আমার সেসব বক্তব্য অপছন্দ করেন। তারপরেও বলব উই মাস্ট বি ভেরী কেয়ারফুল হোয়েন ইট কামস টু আলেমস।

এখানে ছোট করে একটু মোঘল ইতিহাস টানি। বাদশাহ আকবর, জাহাঙ্গির, শাহজাহান, আলমগির প্রমুখদের আমলে এই উপমহাদেশ ছিল বিশ্বের অন্যতম ধনি সাম্রাজ্য। শৌর্য, বীর্য, শান শওকত এ অদ্বিতীয়। সে জন্যই দলে দলে বিদেশী বনিকেরা এ উপমহাদেশে ব্যবসা করতে আসত। পরম প্রতাপশালী একেক বাদশাহ যুদ্ধক্ষেত্রে উপস্থিত থেকে রাজ্য জয় করতেন । অথচ এই প্রত্যেক বাদশাহ সাম্রাজ্যের আলেম, ওলামা, পীর, আউলিয়াদের অত্যন্ত সমিহ করতেন, সমাজে সম্মানজনক অবস্থানে রাখতেন। নিজেরা একেকজন বাদশাহ হয়েও পীর আউলিয়াদের সামেন খালি পায়ে মাটিতে বসতেন। ওনাদের সাথে দেখা করতে লম্বা রাস্তা খালি পায়ে হেটে যেতেন। পুরাটাই ছিল সম্মানের ব্যাপার। আলেম ওলামাদের জায়গীর দিয়ে সাম্রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সেটেল করাতেন। সেসব স্থানে আলেম অলামারা মাদ্রাসা খুলে লোকাল মানুষকে লেখা পড়া, হিসাব কিতাব, এস্ট্রোনমি ইত্যাদি শেখাতেন, মাদ্রাসাতেই গড়ে উঠত লোকাল চিকিৎসালয়। এখনও অনেক আলেম আছেন জারা অনুরুপ সম্মানের যোগ্য। কিন্তু আমরা দেই না। সময় এখন মোঘল আমলের নয়, শেখ আমলের। এখন দিন বদলে গেছে। বদলে গেছে রিতি নীতি।

সকল সামাজিক বিষয়ে তিল তিল করে আমাদের নৈতিক অবক্ষয় আজ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে আমাদের সরকার প্রধান একজন নামকরা আলেমের চরিত্র নিয়ে মিথ্যা বানোয়াট ভরা সংসদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বলেন। সেটার আবার টেলিকাস্ট হয়। অবশ্য টেলিকাস্ট করা হয়েছে হেফাজত কে শোনানোর জন্যই।

তাই হেফাজতকে অনুরোধ করব, আপনারা শেখ হাসিনার মামুনুল হককে নিয়ে সংসদে দেয়া বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে বারবার শুনন, সেখানে শেখ হাসিনা আপনাদের এরপর কোথায় নিয়ে দাড় করাবে তা সুস্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, কোন কিছুই লুকাননি। ওনার এই বক্তব্যের মাঝেই আছে আপনাদের আগামীর ভবিষ্যৎ।

জানুন, বুঝুন, পরবর্তী করনীয় পদক্ষেপ নিন।

- সাবিনা আহমেদ

পঠিত : ৪৪০ বার

মন্তব্য: ০