Alapon

মাওলানা মামুনুল হক এবং কিছু কথা...



ব্যক্তিগত ভাবে মাওলানা মামুনুল হককে আমি প্রথম থেকেই পছন্দ করি না। কেন পছন্দ করি না, এই প্রশ্নের উত্তরটা একটু অদ্ভুদ। সবাই তাকে যে কারণে পছন্দ করে, অর্থাৎ তার গরম গরম বক্তৃতা দেওয়ার পারদর্শিতার কারণে সবাই তাকে পছন্দ করে, আর আমি ঠিক এই কারণেই তাকে অপছন্দ করি। কারণ, আমি বিশ্বাস করি, যারা সভা-সমাবেশে গরম বক্তৃতাদানে পটু তারা বাস্তব ময়দানে একেবারেই বেমানান। তারা গরম বক্তব্য দিয়ে মাঠ গরম করতে পারলেও, সেই মাঠ ঠান্ডা করে নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষমতা তাদের থাকে না। আর যে ব্যক্তি মাঠও গরম করতে পারে এবং ময়দানও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সেই ব্যক্তিই হলো যোগ্য নেতা।

প্রথমত মাওলানা মামুনুল হক দ্বিতীয় বিবাহ করেছেস, সেটা দোষের কিছু না। একজন সুস্থ সবল ও অবস্থা সম্পন্ন মানুষ প্রয়োজনে দ্বিতীয় বিবাহ করতেই পারেন। আর সেই দ্বিতীয় বিবাহ সামাজিকভাবেই হতে হবে। আর সেই দ্বিতীয় বিবাহ যদি হয় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এবং দেশবরেণ্য আলেমের তাহলে সেই বিবাহের সংবাদ আরও ঢালাওভাবে প্রচার করা উচিত। কিন্তু মাওলানা মামুনুল হক সাহেব যেমন রাজনৈতিক ময়দানে প্রাজ্ঞতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়ে থাকেন, তেমনি ব্যক্তি জীবনে এসেও ব্যর্থতার পরিচয় দিলেন। একই সাথে নিজের ক্যারিয়ারও ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে টেনে নিয়ে গেলেন।

মাওলানা মামুনুল হককে রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ বলছি একারণে যে, তিনি এখন পর্যন্ত আপোষহীণ নেতা হতে পারেননি। বরোঞ্জ তাকে সর্বদা আপোষের পক্ষের লোক হিসেবেই মনে হয়েছে। এই যেমন ধরুণ, বঙ্গবন্ধুর ভাসকর্য নিয়ে সারাদেশে তুমুল আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ল। সেই আন্দোলন দমন করতে না পেরে সরকার হেফাজতের নেতাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যাওয়া শুরু করলো। প্রথমেই তারা একজনকে টার্গেট করল। টার্গেটকৃত সেই ব্যক্তি হলেন মাওলানা মামুনুল হক। যেই না সরকারের মন্ত্রী, মিনিষ্টার আর সরকার দলীয় নেতারা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়া শুরু করল, ওমনি মাওলানা মামুনুল হক ভয়ে চুপসে গেলেন। সেই ভয় যেন তেন ভয় নয় মহা ভয়! সেই ভয়ের চোটে তিনি বললেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর বিরোধী নই। বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যাওয়ার তো প্রশ্নেই ওঠে না। মূলত তৃতীয় পক্ষ এই আন্দোলন থেকে ফায়দা নিতে চাচ্ছে। আমরা বঙ্গবন্ধুর বিরোধী নই, ভাস্কর্যের বিরোধী।

এরপর মামুনুল হক এক জনসভায় বক্তৃতাকালে বলেছিলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী! আপনি যদি আপনার পিতার ভাস্কর্য বানানোর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, তাহলে আপনি যে ভোটারবিহীণ নির্বাচনে ক্ষমতা দখল করেছেন, সেটা আমরা মেনে নিবো।’

একজন রাজনৈতিক ব্যক্তি রাজনৈতিক দিক থেকে কতটা দেউলিয়া হলে এমন বক্তৃতা দিতে পারে চিন্তা করে দেখেছেন?

এই প্রজ্ঞাহীণ লোকটাকেই তৌহিদি জনতা প্রাণ দিয়ে ভালোবাসে। মাওলানা মামুনুল হক যখন তার দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে সোনারগাঁওয়ে আটকা পড়লেন, তখন তৌহিদি জনতা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাঁকে সেখান থেকে উদ্ধার করলেন। এরপর একে একে তার ফোনালাপ ফাঁস হতে থাকলো। তার প্রতি মানুষের ভালোবাসা আর আবেগ কতটা তিব্র হলে মানুষ সেসব ফোনালাপকে মিথ্যা বলতে পারে। সবাই বলছিল, ফোনালাপগুলো এডিট করা, বানানো। মানুষ এ কথা বিশ্বাসও করেছিল।

কিন্তু গতকাল মাওলানা মামুনুল হক সাহেব ফেসবুক লাইভে এসে জানালেন, যেসব ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে সেগুলো সব সত্যি! একজন প্রজ্ঞাহীণ ব্যক্তি যখন তৌহিদি জনতার রাহবার হয়ে ওঠে, তখন সেই তৌহিদা জনতার চূড়ান্ত গন্তব্য কোথায় গিয়ে ঢেকবে একবার ভেবে দেখেছেন।

পঠিত : ৩৫৭ বার

মন্তব্য: ০