Alapon

অতি চালাকের গলায় দরি


কোনো একদিন বনের ভিতর কোনো এক সন্ধালগনে,
খুধার্ত এক শিয়াল চলছিল খাবারের সন্ধানে।
খুঁজিতে খুঁজিতে শিয়াল বেচারা আসিল নদীর ধারে,
সেথায় নাকি থাকে কাঁকরা গর্তের ভিতরে।
স্বাধের কাঁকরা খাওয়ার লোভে গর্তে দিল লেজ,
কাঁকড়া না পাইয়া ভাবিল বুঝি ক্ষুধায় থাকিবে আজ।

ভাবিতে ভাবিতে হঠাৎ করিয়া দেখিল এক গর্তে,
সুস্বাস্থ আর সুঠাম দেহি কাঁকরা রয়েছে তাতে।
দ্বিগুন উৎসাহে তখন শেয়াল নারাইতে লাগিল লেজ,
কোনো ক্রমে বাছা ধরো লেজখানা দেখাইব আমার তেজ।
বাহিরে আনিয়া ধরিব তুমায় করিব কুপোকাত,
খাইব তুমায় একা একা বসে আহা সে কি স্বাদ!

ঐ কাঁকড়া বেচারা কোনো একদিন পরেছিল তাহার হাতে,
কোনো মতে ছুটিয়া এসেছিল ফিরে তাহার আপন গর্তে।
ভাবিল কাঁকড়া, আজ আর নাহি তুমায় ধরা দিব,
যেভাবেই হোক থাকিব নীড়ে আর আপন প্রান বাঁচাব।

ক্ষুধার্ত শেয়াল ভাবিয়া পায় না কেন করছে বেটা দেরি,
কিভাবে বেটাকে বাহির করিবে ফন্দি আঁটছে তারই।
কোথায় যেন শুনিয়াছিল শিয়াল সবাই ফুলে স্তুতিতে,
এই ভাবিয়া কাঁকরাকে শুনাইয়া বলতে লাগিল জোরে,
"হে পরমা সুন্দরী,
আইনা বাহিরে একটু নমস্কার করি।"

শুনিয়া কাঁকরা বুঝিয়া ফেলিল ইহা একখান ফাঁদ,
বাহিরে গেলে শিয়াল বেটা আজ করিবে কুপোকাত।
ভাবিল কাঁকরা যেভাবেই হোক বাঁচিতে হইবে নিজে,
নিজের প্রানটা রক্ষা করিতে আগাইতে হবে বুঝে।
কহিলে কাঁকরা তাহার উত্তরে,
"বাপু রাত্রে আসছে কাঁপিয়া কাঁপিয়া জ্বর,
আজিকে নমস্কার বাহিরে থাইকাই কর।"

মনে মনে কহিল শেয়াল,
বজ্জাত কাঁকড়া বুঝিয়াছে ফন্দি -তবে কি ছিল এটা আমার বাড়াবাড়ি।
মনুষ্য জাতি সম্ভবত ইহাকেই বলে, অতি চালাকের গলায় দড়ি

শামীম,
০৮/১১/১৯ইং

গল্প: শ্রদ্ধেয় ফারুক স্যার,
প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক,
জামাল পুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়,
বড়চাপা, মনোহরদী-নরসিংদী।

পঠিত : ৭৪০ বার

মন্তব্য: ০