Alapon

আপনি কি সরকার নিয়ন্ত্রিত পুতুল...?



প্রিয় বাংলামুুলুকের সচেতন ভাই-বোনেরা! আর কতক্ষণ মাওলানা মামুনুল হকের বিয়ে-শাদি নিয়ে পড়ে থাকবেন? ওদিকে যে, বাজারে সমস্ত প্রয়োজনীয় পন্যের দাম হুহু করে বেড়েই চলেছে, সেদিকে আপনার কোনো নজর আছে কি? নেই। কারণ, সরকার চায় আপনি এমন একটা বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকুন, যে বিষয়ের আদৌত কোনো আউটপুট নেই। দিনশেষে সবকিছু শূণ্য। মাঝখান দিয়ে সরকার তার অব্যবস্থাপনার সমস্ত দ্বায় থেকে মুক্তি পেতে পারে।

খুব সহজ করে বললে, প্রত্যেক স্বৈরাচার সরকারই চায়, জনগণকে অপ্রয়োজনীয় কোনো বিষয়ে ব্যরস্ত রাখতে। জনগণ যেন মৌলিক চাহিদার বিষয়ে খুব একটা আওয়াজ তুলতে না পারে, তাই সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত করে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় একটা বিষয়ে সম্পৃক্ত করে রাখে। মাওলানা মামুনুল হকের বিষয়টা এখন অনেকটাই তেমন! মাওলানা মামুনুল হক দুইটা বিয়ে করুক আর দশটা বিয়ে করুক, তাতে আপনার আমার জীবনে কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু রমজান শুরুর আগেই যদি বাজারে সমস্ত প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম লাগামহীণভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে সেটা আমাদের জীবনে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে। কারণ, আমরা যারা চাকরিজীবি এবং মধ্যবিত্ত, তাদের ইনকাম নির্দিষ্ট। সেই নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিয়ে পরিবার ও সংসার চালাতে হয়। এখন নিত্য প্রয়োজনীয় সব পন্যের দাম যদি লাগামহীণ ভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে আমাদের জীবন ধারণ করাই কঠিন হয়ে পড়বে। সেই সাথে আছে লকডাউন!

এই যে বাজারের অস্থিতিশীল অবস্থা এবং রমজান আসলেই সমস্ত পন্যের দাম বেড়ে যায়, এটার দ্বায় সম্পূর্ণভাবে সরকারের। তারা বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্যর্থতা কেবল সরকারেরই। কারণ, সরকার জানেই প্রতিবছর রমজান আসলে একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী পণ্য মজুদ করে অতিরিক্ত মুনাফা আদায় করে নেয়। এ জন্য অতিরিক্ত পয়সা খরচ করতে হয় আমাদের মতো সাধারণ মানুষদের। সেইসাথে এবার লকডাউনের বিষয় সম্পৃক্ত, তাই এটা খুব সহজেই অনুমেয় যে, বাজার অস্থিতিশীল হয়ে উঠবে। কিন্তু সরকার এই অস্থিতিশীল বাজারকে স্থিতিশীল করতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

একইসাথে ব্যর্থ হয়েছে, জনসাধারণের চিকিৎসার অধিকার নিশ্চিত করতে। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশে আঘাত করার সাথে সাথে এটা দৃশ্যমান হয়ে গেছে যে, আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা কতটা দুর্বল। যেখানে সাবেক সংসদ সদস্য ও চিত্রনায়িকা কবরীকে আইসিইউয়ের ক্যাবিনের জন্য সরকারের উপর মহলের দিকে চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকতে হয়, সেখানে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে, একটিবার ভেবে দেখেছেন? করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়া মাত্রই দেখা যাচ্ছে, আইসিইউ ক্যাবিনের অভাব। অক্সিজেনের অভাব। পর্যাপ্ত ডাক্তারের অভাব। শুধু অভাব আর অভাব। অথচ এই অভাবের বিষয় নিয়ে আমরা কেউ কথা বলছি না, সোচ্চার হচ্ছি না। আমরা চিন্তিত মাওলানা মামুনুল হক ৩ টা বিয়ে করেছেন নাকি ৪ টা বিয়ে করেছেন। তিনি আদৌ বিয়ে করেছেন তো!

প্রিয় ভাই! সরকার আপনাকে যেভাবে নাচাতে চায়, সেভাবেই নাচবেন না। তাহলে আপনার মস্তিষ্ক সরকারের হাতে চলে যাবে। আপনার মস্তিষ্ককে গোয়েন্দাদের খেলার জন্য তুলে দিবেন না। ভাবুন, ভাবতে শিখুন। আমরা যেটা নিয়ে পড়ে আছি, সেটা আদৌ জনঘণের বিষয় কিনা! আমাদের সোচ্চার হওয়া উচিত, আমাদের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য। সুচিকিৎসা পাওয়া আমাদের অধিকার। বাজারে ভোগ্যপন্য ন্যায্য দামে পাওয়াটাও আমাদের অধিকার। অথচ এইসব অধিকার থেকে আমরা নিত্যদিনই বঞ্চিত হচ্ছি। অথচ কারো কোনো বিকার নেই। আসুন সচেতন হই এবং নিজেদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠি।

পঠিত : ৫০৯ বার

মন্তব্য: ০