Alapon

রমাদ্বন: পরিবর্তনের মাস...



গুনাহের সাগরে নিমজ্জিত থাকা বান্দাকে ক্ষমা নামক জাহাজে উঠিয়ে জান্নাতের দ্বারে পৌছে দিতে প্রতিবছর সৌভাগ্যবানদের জন্য মাহে রমাদ্বন হাজির হয়। কেউ সেই নিয়ামাত পেয়ে তার সর্বোচ্চ পায়দা তুলে আল্লাহর নিকটবর্তী হয়।আবার কেউ সে সুযোগ পায়ে ঠেলে দিয়ে নিজেদের পাপের বোঝা আরো ভারী করে অথবা পূন্যের পাল্লায় আরো কিছু যোগ করতে ব্যার্থ হয়।

যদি আমরা দ্বিতীয় দলে পড়ে যাই তাহলে কতোই না দূর্ভাগা আমরা!
হাদিসের ভাষ্য মতে এই মাসে শয়তানকে বন্দী করা হয়,মানুষের মাঝে,পরিবেশে বেশ পরিবর্তন আসে। অনেকেই আছে যারা সারা বছর ইবাদাতে তেমন মনোযোগী ছিলেন না,তারাও সালাত ও সিয়ামে ধারাবাহিকতা রক্ষার চেষ্টা করেন।

বিপরীতে আমাদের অনেক ভাই আছেন যারা আলহামদুলিল্লাহ সারা বছরই মোটামুটি ধারাবাহিক থাকার চেষ্টা করেন,থাকেন। এটা দুঃখের বিষয় যে বেশিরভাগই আমরা সারা বছর আল্লাহর ইবাদতের প্রতি অবহেলা ও খামখেয়ালিপনা দেখাই।এর ফলে ধারাবাহিক ভাইয়েরা আফসোসের সাথে হোক কিংবা নাসিহা বা বাস্তবতা দেখাতে গিয়ে তাদের পেছনের কথা(সারা বছরের) স্মরণ করিয়ে দেন।

প্রিয় ভাইয়েরা,এতে রমাদ্বনে (আপাতত বাহ্যিক) পরিবর্তনে আসা ভাইয়েরা তাকে অহংকারী বা নিজেকে বড় আল্লাহওয়ালা মনে করে এমন ভেবে এভোয়েড করতে পারে।নতুবা হীনম্মন্যতায় ভুগে ভালো কাজে অনুৎসাহিত হতে পারে। ফলে,তার প্রতি আপনার দাওয়াহর উদ্দেশ্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। আমরা যেহেতু কারো অন্তরের খবর জানিনা,সেহেতু বাহিরের অবস্থা ধরে নিয়ে তাকে আরো উৎসাহিত করতে পারি এই কাজ যেনো পরবর্তীতেও বজায় রাখে।তাকে এই সুযোগে নিয়মিত কিছু নাসিহাহ,বন্ধুত্ব স্থাপন কিংবা কিছু উপকরণ উপহার দিতে পারি।

কারন,এই সময়টাই মানুষকে দেওয়ার,পরিবর্তন করার। আমাদের চেষ্টার ফলে,আল্লাহর ইচ্ছায় ইতিবাচক মনমানসিকতা গড়ে উঠলে তো আলহামদুলিল্লাহ, নাহয় সেটা আল্লাহর উপরেই ছেড়ে দিবো। সহজ কথায়,এতে আমাদের হারানোর কিছু নেই বরং প্রাপ্তির সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে।

শেষে একটা কথা বলতে হয়, আমাদের উচিত কারো বর্তমানের ভালো আমল স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভবিষ্যত ভালো করতে উৎসাহিত করা।অথবা অতীত ভালো কোনো আমলের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বর্তমানে ভালো কোনো আমলে তাকে আহ্বান করা। কিন্তু,অতীতের পাপ,খারাপ আমল স্মরণ করিয়ে তাকে বর্তমান আমল বিমুখ করা একদিকে যেমন উক্ত ব্যাক্তির জন্য খারাপ এবং নিজের জন্যও আত্মঘাতী বটে!

"রমজান মাসের প্রতিটি রাত ও দিনের বেলায় বহু মানুষকে আল্লাহ তাআলা জাহান্নাম থেকে মুক্তির ঘোষণা দেন। এ মাসে প্রত্যেক মুসলমানের দোয়া কবুল করা হয়।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৭৪৫০)।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে নেকির প্রত্যাশায় রমজানের রাতে ইবাদত-বন্দেগি করবে, তার অতীতের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৩৭)


এহসানউদ্দিন

পঠিত : ৩২৯ বার

মন্তব্য: ০