Alapon

রোজিনা ইসলামকে মজলুম ভাবতে পারছি না



অনেক সময় সরকার স্বৈরাচার হলে সরকারের বিরোধীরা সেই সুবিধা পায়। উদাহরণস্বরূপ বলতে পারি 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা'। ১৯৬৭-১৯৬৮ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব ছিল একজন জুলুমবাজ ও স্বৈরাচারী।

তার আমলে প্রকাশ পায় শেখ মুজিবের ইশারায় ও সম্মতিতে পাকিস্তান নৌ-বাহিনীর একজন বাঙালি অফিসার মোয়াজ্জেমের নেতৃত্বে একদল বাঙালি সেনা সদস্যরা শত্রুরাষ্ট্র ভারতের সাথে আঁতাত ও ষড়যন্ত্র করে।

১৯৬৭ সালে চট্টগ্রামে একটি ক্যান্টনমেন্ট উদ্বোধন হওয়ার কথা। সেখানে সেনাপ্রধান ইয়াহিয়া উপস্থিত থাকার কথা। ষড়যন্ত্র অনুসারে সেদিন গাদ্দাররা বিদ্রোহ করবে, সেনাপ্রধানকে হত্যা করবে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি অপেক্ষমান দল তাদের সহায়তা করবে। এভাবে তারা পাকিস্তানের ক্যান্টনমেন্ট দখল করবে।

যাই হোক, ষড়যন্ত্র ফাঁস হয়ে যায়। ইয়াহিয়া খান আর চট্টগ্রামে আসেনি। বিদ্রোহ হয়নি। তদন্তে অনেকে ধরা পড়ে। শেখ মুজিবের সম্পৃক্ততা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।

কিন্তু শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগ এটা অস্বীকার করে। শেখ মুজিব আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থন করে পাকিস্তানের প্রতি তার আনুগত্য, ভালোবাসা ও পাকিস্তান আন্দোলনে তার অবদান তুলে ধরেন।

এদেশের বেশিরভাগ মানুষ এবং যারা আওয়ামীলীগ করে না তারাও আইয়ুব সরকারকে বিশ্বাস করে নি। যারা আইয়ুবের সমর্থক তারাও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার কথা বিশ্বাস করেনি। সবাই ভেবেছে মুজিবকে রাজনীতির মাঠ থেকে বিদায় করতেই আইয়ুবের এই চক্রান্ত।

এর কারণ স্বৈরাচারী আইয়ুবকে কেউ বিশ্বাস করতো না।

যাই হোক এর পরে বহু সময় পার হয়েছে, বহু জায়গার পানি বহু জায়গায় গড়িয়েছে। আজকে আমরা কী জানি! আজকে আমরা জানি আইয়ুবের আমলে হওয়া মামলা সঠিক। সত্যই শেখ মুজিবরা গাদ্দারি করেছে। গাদ্দাররা এখন সব স্বীকার করে নিয়েছে। ঐ মামলার আসামী এক গাদ্দার একটি বই পর্যন্ত লিখেছে, আগরতলা সত্য মামলা।

এখন বুঝা গেল ১৯৬৮ সালে মুজিব ও তার দল মিথ্যা বলে জনগণকে প্রতারিত করেছে।

স্বৈরাচারী ও জালিম শেখ হাসিনার অবস্থাও আইয়ুবের মতো। প্রথম আলোর রোজিনা বহুত ক্ষেমতাওয়ালা মানুষ। তার ভিডিও দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, সে হাতে নাতে ধরা পড়েছে। সে ক্ষমা চাইতে চেয়েছিল, সে মুচলেকা দিতে চেয়েছিল। তার গলা নরম ছিল।

প্রথম আলোর একজন জেলা সাংবাদিকও যে প্রভাব নিয়ে চলে তাতে তাদের প্রশাসন আটকানো দূরের কথা, জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারে না। সেখানে রোজিনাকে হেনস্তা করা ও তার গলা নরম হওয়া প্রমাণ করে সে বেআইনী কাজ করে ধরা খেয়েছে।

সে কেন ফাইল চুরি করেছে সেটা জানি না। অনেকে অনেক কথা বলছে। তবে সে গোয়েন্দাগীরী করেছে। এটা নিশ্চিত।

প্রথম আলো এখন শেখ হাসিনা ও তার সরকারের দমননীতির সুবিধা নিয়ে বলতে চাইছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রিপোর্টের জন্যই তাকে এরেস্ট করা হয়েছে। কারণ হাসিনা ও তার সরকারকে কেউ বিশ্বাস করে না।

আমি এই মুহূর্তে কোনোভাবেই রোজিনা ইসলামকে মজলুম ভাবতে পারছি না।

পঠিত : ২৯৭ বার

মন্তব্য: ০