Alapon

হক্ব যেখানে পাওয়া যায় সেখান থেকেই নিতে হবে

হক্ব যেখানে পাওয়া যায় সেখান থেকেই নিতে হবে:

মু‘আয ইবন জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বলতেন, যেটি আবু দাউদে তাঁর সুনানে নিয়ে এসেছেন, 
«اقبلوا الحق من كل مَنْ جاء به؛ وإن كان كافرًا ـ أو قال فاجرًا ـ واحذروا زيغة الحكيم. قالوا: كيف نعلم أن الكافر يقول الحق؟ قال: إن على الحق نورًا»
“সত্য যেই নিয়ে আসুক তা গ্রহণ করো। যদিও সে কাফির হয়” বা তিনি বলেছেন “পাপি হয়” আর বিজ্ঞের পদস্খলন থেকে সতর্ক থাকো। তারা বলল: আমরা কীভাবে জানবো যে, কাফির সত্য বলেছে? তিনি বললেন: নিশ্চয় সত্যের উপর নূর আছে।”
এ আসারটি সুনান আবী দাঊদে এসেছে, ৫/১৭-১৮; হাদীস নং ৪৬১১। কিতাবুস সুন্নাহ, বাবু লুযূমিস সুন্নাহ। এর বিস্তারিত বিবরণ হচ্ছে, ইবন শিহাব আয-যুহরী বলেন, আবু ইদরীস ‘আয়েয উল্লাহ আল-খাওলানী বলেন, ইয়াযীদ ইবন উমাইরাহ, যিনি মু‘আয ইবন জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুর ছাত্র ছিলেন, তিনি বলেন, মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু যখনই কোনো ইলমী মজলিসে বসতেন তখনই বসার সময় বলতেন, ‘আল্লাহ, তিনি মহান বিচারক, ইনসাফকারী, সন্দেহকারীদের ধ্বংস হোক। অতঃপর একদিন মু‘আয ইবন জাবাল রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘তোমাদের সামনের দিনগুলোতে ফিতনার অভ্যুদয় হবে, আর তাতে সম্পদ অনেক বেশি হবে। আর কুরআনও সর্বত্র প্রচারিত ও প্রসারিত হবে, তখন তা মুমিন, মুনাফিক, পুরুষ, মহিলা, ছোট-বড়, দাস-স্বাধীন সবাই গ্রহণ করবে। তখন কোনো বক্তা অচিরেই বলে বসবে, মানুষের কী হলো, মানুষ তো আমার অনুসরণ করছে না, অথচ আমি কুরআন পাঠ করেছি? মানুষ তো আমার অনুসরণ করবে বলে মনে হচ্ছে না, যতক্ষণ না আমি তাদের জন্য এর বাইরে কিছু বিদ‘আতের প্রচলন না ঘটাব। তখন তোমরা সাবধান থাকবে সে যেসব বিদ‘আত চালু করবে তা সম্পর্কে। কারণ সে যে বিদ‘আত চালু করবে তা হবে পথভ্রষ্টতা। আর আমি তোমাদেরকে বিজ্ঞ প্রাজ্ঞজনের বক্র হয়ে যাওয়ার আশঙ্কার ব্যাপারে সাবধান করছি; কারণ শয়তান কখনো কখনো বিজ্ঞজনের মুখ থেকে পথভ্রষ্টতার বাক্য বের করে, আবার কখনো কখনো মুনাফিকও হক কথা বলে। ইয়াযীদ ইবন উমাইরাহ বলেন, আমি তখন মু‘আয রাদ্বিয়াল্লাহু ‘আনহুকে বললাম, আল্লাহ আপনার প্রতি রহমত করুন, আমাকে কিসে জানাবে যে প্রাজ্ঞ ব্যক্তিটি পথভ্রষ্টতার কথা বলেছে আর মুনাফিকটি হক্ক কথা বলেছে? তখন তিনি বললেন, অবশ্যই জানতে পারবে, প্রাজ্ঞজনের বিখ্যাত সেসব কথা পরিত্যাগ কর যেগুলো সম্পর্কে বলা হয়, এটা তিনি কী বললেন, তবে তার থেকে এ কারণে তুমি মুখ ফিরিয়ে নিও না, কারণ হতে পারে তিনি ফিরে আসবেন। আর যখন হক্ব কথা শুনবে তখন সেটা গ্রহণ করে নিবে; কারণ হক্বের উপর নূর বা আলো রয়েছে।
আসারটি আরও যারা যারা সংকলন করেছেন,
১- হাকেম তার মুস্তাদরাকে সংকলন করেছেন, ৪/৪৬৬; আর বলেছেন, বুখারী ও মুসলিমের শর্তে, যদিও তারা এটিকে সংকলন করেননি। ইমাম যাহাবী এ বিষয়ে হাকেম এর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন।
২- ইবন আবী শাইবাহ, আল-মুসান্নাফ, ১১/৩৬৩-৩৬৪, নং ২০৭৫০।
৩- আজুররী, আশ-শরী‘আহ পৃ. ৪৭-৪৮।
৪- লালেকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ ১/৮৮-৮৯, নং ১১৬।
৫- আবু নু‘আইম আল-হিলইয়া ১/২৩২-২৩৩।
৬- ইবন বাত্তাহ, আল-ইবানাহ ১/৩০৭-৩০৮।
৭- আল-ফাসাওয়ী, আল-মা‘রিফাতু ওয়াত-তারীখ ২/৩২১-৩২২।
৮- বাইহাক্বী, আল-মাদখালু ইলাস সুনানিল কুবরা পৃ. ৪৪৪, নং ৮৩৪।
৯- ফিরইয়াবী, সিফাতুন নিফাক্ব ও যাম্মুল মুনাফিক্বীন পৃ. ৮১-৮২, নং ৩৯।
১০- মা‘মার ইবন রাশেদ, আল-জামে‘উ ১১/৩৬৩, নং ২০৭৫০।
১১- ইবন মান্দাহ, আত-তাওহীদ ২/১১০।
১২- আবু নু‘আইম, হিলইয়াতুল আউলিয়া ১/২৩৩।
১৩- বাইহাক্বী, আল-আসমা ওয়াস সিফাত ১/২০০, নং ১৩৫।
১৪- বাইহাক্বী, আস-সুনানুল কুবারা ১০/৩৫৫, নং ২০৯১৬।
১৫- বাইহাক্বী, শু‘আবুল ঈমান ১১/৩১২, নং ৮৫৮১।
১৬- ইবন আব্দিল বার, জামে‘উ বায়ানিল ইলমি ওয়াফাদ্বলিহী ২/৯৮১, নং ১৮৭১।
১৭- ইমাম ত্বাহাওয়ী, শারহু মুশকিলুল আসার ১০/৩৮, নং ৩৮৯৫।

পঠিত : ২৬৭ বার

মন্তব্য: ০